কক্সবাংলা ডটকম(৪ জুন) :: পার্লামেন্ট ভবন ও ম্যানচেস্টারের কনসার্ট হলে হামলার রেশ কাটতে না কাটতে ফের রক্তাক্ত হল ব্রিটেন। এবারে হামলার স্থান রাজধানী লন্ডন। হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন সন্দেহভাজন হামলাকারীসহ মোট ৯ জন। আহত হয়েছেন আরো অন্তত ৩০ জন।
স্থানীয় সময় শনিবার (৩ জুন) রাতে লন্ডন ব্রিজ এলাকায় একটি গাড়ি ফুটপাতে উঠে পড়ে এবং পথচারীদের চাপা দেয়। এর পরপরই পাশের ব্যস্ততম একটি মার্কেটে হামলাকারীরা ছুরি হাতে সাধারণ মানুষের ওপর আক্রমণ চালায়। হামলার ঘটনায় মারা গেছেন ৬ জন। পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন ৩ সন্দেহভাজন হামলাকারী। সব মিলিয়ে নিহতের সংখ্যা ৯। ব্রিটেনের সন্ত্রাসবাদ বিরোধী ইউনিটের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মার্ক রওলি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে সন্ত্রাসের শিকার হওয়া লন্ডনের নাশকতাস্থলে যাচ্ছেন ওই দেশের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। ইতিমধ্যেই লন্ডনের একাধিক স্থানের হামলাকে সন্ত্রাসবাদী হামলা বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। জঙ্গি হামলার পর ব্রিটেন জুড়ে জারি হয়েছে সতর্কতা৷ জরুরি বৈঠকে বসতে চলেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে৷
স্থানীয় সময় শনিবার রাতে ব্যস্ত লন্ডন ব্রিজে একটি গাড়ি বেশ কয়েকজন পথচারীকে ধাক্কা মারে৷ ঘটনাস্থলেই এক পথচারীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে৷ জানা গিয়েছে, এদিন একটি গাড়ি রাস্তা ছেড়ে ফুটপাতে উঠে পথচারীদের ধাক্কা মারে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কমপক্ষে ৮০ কিমি গতিতে চলছিল গাড়িটি৷ ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান বেশ কয়েকজন। লন্ডন ব্রিজের কাছ থেকে এক তরুণকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
লন্ডন ব্রিজের পাশাপাশি এদিন নাশকতা চালানো হয়েছে বরো মার্কেট এবং ভক্সহল এলাকায়। বরো মার্কেটে একটি রেস্টুরেন্টে ছুরি নিয়ে হামলা চালায় এক ব্যক্তি। প্রায় দশ ইঞ্চি লম্বা একটি ছুরি নিয়ে রেস্টুরেন্টে আগত মানুষদের উপর হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ।ছুরির আঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন এক ব্যক্তি। আততায়ীর খোঁজে চিরুনি তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
ভক্সহল এলাকাতেও ছুরি নিয়েই হামলা চালান হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। যদিও এই এলাকার ঘটনার সঙ্গে অন্য দুই ঘটনার মধ্যে কোনও যোগসাজশ নেই বলে লন্ডন পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে। তবে লন্ডন ব্রিজ এবং বরো মার্কেটের ঘটনা সন্ত্রাসবাদী হামলা বলে জানিয়েছে লন্ডন পুলিশ।
লন্ডন ব্রিজের ঘটনাটি সর্বপ্রথম প্রকাশ্যে আসে। নিছক একটি দুর্ঘটনা বলেই প্রথমে মনে হয়েছিল লন্ডন পুলিশের। কিন্তু, এরপরে আরও দুই নাশকতার ঘটনা সামনে আসায় বোঝা যায় সন্ত্রাসের শিকার হয়েছে টেমস নদীর পারের শহর।
লন্ডন পুলিশের তরফ থেকে লন্ডন শহরে সন্ত্রাসবাদী হামলা চালানোর কথা স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে। যদিও উক্ত তিন ঘটনাকে ‘সম্ভাব্য সন্ত্রাস’ বলে প্রথমে জানিয়েছিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। পরে তিনিই আবার বলেন, “পুলিশ ও নিরাপত্তা কর্মীদের তথ্য অনুযায়ী আমরা একে সন্ত্রাসী হামলা বলতে পারি। খুব দ্রুতই এর তদন্ত চলছে। পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বাহিনীকে আমি কৃতজ্ঞতা জানাই।”
এই ঘটনার পর থেকেই কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে দেওয়া হয়েছে সমগ্র লন্ডন শহর। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে লন্ডন ব্রিজ। একইসঙ্গে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ওই শহরের মেট্রো পরিষেবা।
Posted ১০:৪৫ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ০৪ জুন ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta