রবিবার ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

রবিবার ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

শতাধিক ব্যক্তির অবৈধ সম্পদের সর্বাত্মক অনুসন্ধানে দুদক

মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০১৯
155 ভিউ
শতাধিক ব্যক্তির অবৈধ সম্পদের সর্বাত্মক অনুসন্ধানে দুদক

কক্সবাংলা ডটকম(১১ নভেম্বর) :: চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতি ও ক্যাসিনো ব্যবসার মাধ্যমে যারা বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন এবং অঢেল অর্থ বিদেশে পাচার করেছেন- তাদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অভিযানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের ‘শূন্য সহনশীলতা’ নীতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে স্বাধীন সংস্থাটি এ অভিযান শুরু করে।

এসব অপকর্মে সম্পৃক্ত রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে দুদক প্রথমে ৪৩ জনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরুর কথা জানালেও এই তালিকা দিন দিন বড় হচ্ছে। সর্বশেষ তথ্যমতে, শতাধিক আলোচিত ব্যক্তির অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। এ পর্যন্ত ৩৪ জনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সম্পদ বাজেয়াপ্তের প্রক্রিয়াও শুরু করেছে।

সরকার ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে রাজধানীতে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের মধ্য দিয়ে শুদ্ধি অভিযান পরিচালনা করে আসছে। এতে অনেকের সংশ্লিষ্টতা বেরিয়ে আসছে। গত ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে র‌্যাব ও পুলিশের প্রায় অর্ধশত অভিযানে সম্রাট, খালেদ, জি কে শামীমসহ ২২৪ জনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অভিযানে কোটি কোটি নগদ টাকার পাশাপাশি বহু মূল্যের ক্যাসিনো সামগ্রী উদ্ধার করা হয়।

এদের অধিকাংশই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে কমিশন বাণিজ্য, অনিয়ম-দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও দখলবাজি, ক্যাসিনো পরিচালনা, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, মাদক ব্যবসাসহ নানা ধরনের অপরাধে জড়িত। দুর্নীতি করে অনেকে শত শত কোটি টাকা কামিয়ে দেশের বাইরে পাচার করেছেন। দেশে তাদের কী পরিমাণ সম্পদ আছে তা প্রথম দফায় খুঁজে বের করার কার্যক্রম চলছে। বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতেও নানাভাবে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

এ ছাড়া যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদ্যবিদায়ী সভাপতি মোল্লা কাউসার ও তাদের পরিবারের সদস্য, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটির ১২ কাউন্সিলরসহ শতাধিক ব্যক্তির অবৈধ সম্পদের বিষয়ে দুদক অনুসন্ধান করছে। এদের মধ্যে পঙ্কজ দেবনাথ, মোয়াজ্জেম হোসেন রতনসহ ৫ এমপিও আছেন। তাদের অবৈধ সম্পদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে।

এ বিষয়ে দুদক সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখত বলেন, তালিকায় থাকাদের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে তথ্য-উপাত্ত চাওয়া হয়েছে। অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। তিনি বলেন, অবৈধ সম্পদের অভিযোগে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যদি মামলা হয়, আর যদি ওই আসামি বিদেশে পালিয়ে থাকে, তাদের ফিরিয়ে আনতে আইনি ব্যবস্থাও নেয়া হবে।

দুদকের নজর এবার সিঙ্গাপুরে :

সিঙ্গাপুরের বিভিন্ন ক্যাসিনোতে বাংলাদেশের যারা জুয়া খেলেছেন এবার তাদের তথ্য জানতে মাঠে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দেশটির রাষ্ট্রীয় দুর্নীতি দমন সংস্থা করাপ্ট প্র্যাকটিসেস ইনভেস্টিগেশন ব্যুরোর (সিপিআইবি) পরিচালকের কাছে গত ৩১ অক্টোবর এ বিষয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন দুদকের মহাপরিচালক (মানি লন্ডারিং) আ ন ম আল ফিরোজ। চিঠিতে সেখানকার ক্যাসিনোতে গত পাঁচ বছরে প্রবেশকারী বাংলাদেশিদের পাসপোর্ট নম্বরসহ তালিকা দেয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

দুদকের একটি সূত্র জানায়, অনুসন্ধান ও তদন্তের প্রয়োজনে একটি বিশেষ টিম শিগগির সিঙ্গাপুর যেতে পারে। ওই দেশে এখন কারা অবস্থান করছেন, কারা কত সম্পদ পাচার করেছেন, কত সম্পদ গড়েছেন সরেজমিন তদন্তের জন্য ওই টিম যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। কমিশনের অনুমোদনের পরই তারা সে দেশে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যেসব তথ্য চেয়ে সিঙ্গাপুর সরকারের কাছে চিঠি দিয়েছে সেই তথ্য ই-মেইলে পাওয়া যাবে এমনটি আশা করছে দুদক। কিন্তু তা পেতে যদি দেরি হয় তবে টিমের সদস্যরা সরাসরি গিয়ে সেই তথ্য নিয়ে আসবেন।

পাঁচ শতাধিক ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব তলব :

চলমান শুব্ধি অভিযান শুরুর পর জব্দ করা চার শতাধিক ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়ে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত ৩০ অক্টোবর পাঠানো চিঠিতে চার শতাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব বিবরণী ও প্রকৃত আর্থিক লেনদেনের তথ্য জরুরি ভিত্তিতে দুদকে পাঠানোর অনুরোধ করা হয়েছে।

দুদকের বিশেষ তদন্ত বিভাগের মহাপরিচালক সাইদ মাহবুব খান স্বাক্ষরিত চিঠি বিএফআইইউর মহাব্যবস্থাপক বরাবর পাঠানো হয়েছে। এর আগে গত ২৮ অক্টোবর আরো শতাধিক ব্যক্তির সম্পদ ও ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়ে এনবিআর ও বিএফআইইউতে চিঠি পাঠায় দুদক। এই ১০০ জনের মধ্যে সরকারদলীয় চার সাংসদসহ অধিকাংশই রাজনীতিক। ইতোমধ্যে এনবিআর তাদের সম্পদ ও ব্যাংক হিসাব তলব করেছে।

সরকারি কর্মকর্তাদের সংশ্লিষ্টতা :

গণপূর্ত অধিদপ্তরের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম ও অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আবদুল হাইয়ের বিরুদ্ধে এরই মধ্যে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জি কে শামীমের সঙ্গে যোগসাজশের। তাদের ঘুষ দিয়ে শামীম গণপূর্তের বড় কাজগুলো বাগিয়ে নিয়েছেন। এ কাজে অন্তত আরো ১২ জনের সংশ্লিষ্টতার তথ্য পেয়েছে দুদক।

সাবেক প্রধান প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান মুন্সী, বর্তমান অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী উৎপল কুমার দে, নির্বাহী প্রকৌশলী ফজলুল হক, শওকত উল্লাহ, প্রকৌশলী স্বপন চাকমা, রোকন উদ্দিন, আবদুল কাদের চৌধুরী, আফসার উদ্দিন, আবদুল মোমেন চৌধুরী, ইলিয়াস আহমেদ এবং পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী প্রধান মুমিতুর রহমান এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সাজ্জাদুল ইসলামের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে দুদক। তাদের মধ্যে রফিকুল ইসলাম ও হাফিজুর রহমান মুন্সীর হিসাব তলব করেছে এনবিআর। হাফিজুরের স্ত্রী মারুফা রহমান কান্তা ও রফিকুলের স্ত্রী রাশেদা ইসলামের ব্যাংক হিসাব তলব করেছে এনবিআর। সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আবদুল হাই ও তার স্ত্রী বনানী সুলতানার ব্যাংক হিসাবও তলব করেছে এনবিআর।

৯ মামলা :

দুদকের অনুসন্ধান দলের সদস্যরা গণমাধ্যমে আসা বিভিন্ন ব্যক্তির নাম যাচাই-বাছাই করে একটি প্রাথমিক তালিকা তৈরি করে। সংস্থার গোয়েন্দা শাখার পক্ষ থেকে এসব তথ্য যাচাই-বাছাই করা হয়। পাশাপাশি র্যাব ও বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধানরা দুদক চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠক করে গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করেন। সেসব তথ্য ও কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে ইতোমধ্যে ৯টি মামলা করে দুদক দল। জি কে শামীম, খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া, গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এনামুল হক এনু ও তার ভাই গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক রূপণ ভূঁইয়া, অনলাইন ক্যাসিনোর হোতা সেলিম প্রধান, বিসিবি পরিচালক লোকমান হোসেন ভূঁইয়া, যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক আনিসুর রহমান ও তার স্ত্রী সুমি রহমান এবং কলাবাগান ক্লাবের সভাপতি শফিকুল আলম ফিরোজের বিরুদ্ধে ৯টি আলাদা মামলা হয়।

বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা :

চলমান ‘শুদ্ধি অভিযান’ শুরু হওয়ার পর দুদক অবৈধ সম্পদের যে অনুসন্ধান শুরু করেছে, তার অংশ হিসেবে শুরুতে ভোলা ৩ আসনের সাংসদ নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন, চট্টগ্রামের সাংসদ ও জাতীয় সংসদের হুইপ শামসুল হক চৌধুরী এবং সুনামগঞ্জ-১ আসনের সাংসদ মোয়াজ্জেম হোসেন রতনসহ ২৩ জনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। এর মধ্যে বেশির ভাগই গ্রেপ্তারের পর কারাগারে রয়েছেন। গত ২৩ অক্টোবর এ নিষেধাজ্ঞা জারি করে দুদক। এরপর গত ৩০ অক্টোবর গণপূর্তের ৯ প্রকৌশলীসহ ১১ জনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়।

155 ভিউ

Posted ৩:৪৪ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০১৯

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com