শনিবার ১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শনিবার ১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের অবৈধ সম্পত্তি ও ব্যাংক হিসাব তদন্ত করবে এনবিআর-সিআইডি ও দুদক

মঙ্গলবার, ০৫ জুন ২০১৮
370 ভিউ
শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের অবৈধ সম্পত্তি ও ব্যাংক হিসাব তদন্ত করবে এনবিআর-সিআইডি ও দুদক

কক্সবাংলা ডটকম(৫ জুন) :: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাদকের বিরুদ্ধে তার অবস্থান তুলে ধরে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। ৪ মে থেকে দেশ ব্যাপী মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘোষনা দিয়ে বড় ধরনের অভিযান শুরু হয়ে এ পর্যন্ত এ যুদ্ধে শতাধিক মাদক পাচারকারী নিহত হয়েছে। মাদক বিরোধী অভিযান চলমান থাকায় দেশ ব্যাপী সরকারের প্রতি সাধারন মানুষের যে অসন্তোষ রয়েছে তাতে কিছুটা স্বস্তি ফিরে আসছে।

এরই ধরাবাহিকতায় শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী, গডফাদারদের আইনের আওতায় আনতে মানিলন্ডারিং, আয়কর ও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আইনের আওতায় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

ইতোমধ্যে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকা দুদক, পুলিশ ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে দিয়েছে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর।

সরকার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনতে মূলত তাদের অবৈধ সম্পত্তি ও ব্যাংক হিসাবের তথ্য যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে গডফাদাররা বের হয়ে যায়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালে র‌্যাব, পুলিশ, কোস্টগার্ড, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়ের করা মামলার সংখ্যা ছিল ৬৯ হাজার ৭৩৯টি। এসব মামলায় আসামি ৮৭ হাজার ১৪ জন।

পরের বছর ২০১৭ সালে সারাদেশে মাদক মামলা হয় এক লাখ ৬ হাজার ৫৩৬টি। এরমধ্যে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ১১ হাজার ৬১২টি মামলা করে। তবে সেই তুলনায় ২০১৭ সালে আদালতে মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে খুবই কম। মাত্র ২ হাজার ৫৩৯টি। নিষ্পত্তি হওয়া বেশিরভাগ মামলাই ৭-৮ বছর আগের পুরনো। এসব মামলায় মোট আসামি ছিল ২ হাজার ৬৮০ জন।

এদের মধ্যে সাজা হয়েছে ১ হাজার ৬৫ জনের এবং খালাস পেয়েছে ১ হাজার ৬১৫ জন। মূলত মাদক বহনকারীরাই বেশি শাস্তি পেয়েছে। কারণ, ১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে কেবল মাদক যার কাছে পাওয়া যায়, তাকেই আইনের আওতায় আনার সুযোগ রয়েছে।

যারা নেপথ্যে থেকে মাদক ব্যবসা পরিচালনা করে, সেসব গডফাদার কখনও আইনের আওতায় আসে না। তাই সরকার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনতে মূলত তাদের অবৈধ সম্পত্তি ও ব্যাংক হিসেবের তথ্য যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা নেওয়ার পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো।

শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের আয়ের উৎস, ব্যয়ের হিসাব, আয়কর রিটার্ন, ব্যাংক হিসাব ও স্থাবর সম্পত্তির বিষয় তদন্ত করে দেখা হবে। এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বিভাগ, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কাজ করবে। এই তিনটি সংস্থাকে সহযোগিতা করবে বাংলাদেশ ব্যাংক।

মাদকের গডফাদারদের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপের বিষয়টি মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর, দুদক ও পুলিশ কর্মকর্তারা বাংলা ট্রিবিউনকে নিশ্চিত করেছেন।

সিআইডির এক কর্মকর্তা বলেন, ‘মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং আইনে ব্যবস্থা নেওয়া সবচেয়ে ভালো। কারণ, তারা যে সম্পত্তি অর্জন করে, সে বিষয়ে তথ্য দাখিল করতে বলা হবে। দাখিল করা তথ্য যাচাই-বাছাই করলেই গরমিল ধরা পড়বে। কারণ, তারা কখনও তাদের আয়ের বৈধ উৎস দেখাতে পারবে না। তারা যদি নকল কাগজপত্র তৈরি করে নিয়ে আসে, সেটাও ধরা পড়বে। কারণ, আমরা তাদের সবকিছুই যাচাই-বাছাই করবো।’

সিআইডি ইতোমধ্যে মানিলন্ডারিং মামলা নিয়ে কাজ করেছে। তাদের অভিজ্ঞতা রয়েছে। মাদক ব্যবসায়ীদেরও এই আইনের আওতায় আনা যাবে বলেও মনে করেন এই কর্মকর্তা।

বাংলাদেশের মানিলন্ডারিং আইন ২০১২ সালে পাস হয়। সিআইডি ২০১৫ সাল থেকে মানিলন্ডারিং আইনে মামলা তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় সিআইডিকে। বর্তমানে তারাই একমাত্র তদন্ত সংস্থা, যারা দেশের মানিলন্ডারিং মামলা তদন্ত করে থাকে।

সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএস) মোল্যা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিটি মাদক মামলাই মানিলন্ডারিং মামলা। তবে আমাদের জনবল না থাকায়, সব মামলা তদন্ত করতে পারি না। গুরুত্বপূর্ণ ও আলোচিত মামলাগুলো আমরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তদন্ত করে থাকি। মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আমরা ২০১৫ সাল থেকেই মামলা তদন্ত করছি।’

মাদক ব্যবসায়ীদের এই আইনের মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিত করা যায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা রাজধানীতে, টেকনাফ ও নারায়ণগঞ্জে এমন মানিলন্ডারিং মামলা তদন্ত করছি। আমাদের আইনগতভাবে সেই অধিকার রয়েছে। এই আইনের মাধ্যমেই শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করা যায়।’

মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মাদক আইনে সীমাবদ্ধতা থাকায় শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনতে সম্প্রতি দুদকে তালিকা দিয়েছে তারা। এই তালিকা ছাড়াও একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার পাশাপাশি দুদক নিজস্ব গোয়েন্দা ইউনিট দিয়ে মাদক গডফাদারদের তালিকা করে কাজ শুরু করেছে। তাদের অবৈধ সম্পদসহ আয়ের উৎস সম্পর্কে খোঁজ নিতে শুরু করেছে প্রতিষ্ঠানটি। তালিকা ধরে খোঁজ নিয়ে প্রাথমিক অনুসন্ধানের পর চিহ্নিতদের সম্পদ ও আয়-ব্যয়ের হিসাব তলব করা হবে।

মাদক নিয়ন্ত্রণদ্রব্য অধিদফতরের ঢাকা মেট্রোর উপপরিচালক মুকুল জ্যোতি চাকমা বলেন, ‘মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আয়কর, মানিলন্ডারিং ও দুদক আইনে ব্যবস্থা গ্রহণের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কয়েকটি মামলা দুদককে দেওয়া হয়েছে। তারা সেগুলো তদন্ত করে দেখছে।’

মাদক গডফাদারদের তালিকা ধরে সম্পদ অনুসন্ধানের কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন দুদকের একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তাদের দাবি, দুদক তার নিজস্ব পদ্ধতিতে কাজ করছে। তালিকার বাইরেও নিজস্ব অনুসন্ধানে মাদক গডফাদারদেরকে চিহ্নিত করা হচ্ছে।

দুদক সূত্র জানায়, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর দেড়শ’ এবং অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা শতাধিক মাদক ব্যববসায়ীদের তালিকা দুদকে হস্তান্তর করেছে। যাদের সম্পত্তি, আয়-ব্যয় ও ব্যাংক হিসাব তলব করে দেখা হবে।

এ বিষয়ে দুদকের উপপরিচালক(জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘আমরা তালিকা পেয়েছি। সেই তালিকা ধরে কাজ শুরু হয়েছে। মাদক ব্যবসায়ীদের সম্পদের খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে।

পুলিশ, দুদক ও রাজস্ব বিভাগ একসঙ্গে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের ক্রমান্বয়ে ডেকে ডেকে তথ্য চাইবে। এরপর তাদের দেওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করা হবে। যাদের অসামঞ্জস্য ও অবৈধ সম্পত্তি পাওয়া যাবে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে দুদক ও সিআইডি।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘কোনও ব্যক্তি যদি তার সম্পত্তি, ব্যাংক হিসাব ও আয়ের বিষয় স্বচ্ছ তথ্য দিতে না পারেন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রয়েছে। মাদক ব্যবসা করে কেউ যদি এভাবে অবৈধপথে আয় করে, তার তথ্য যদি না দিতে পারে এবং নিয়মিত রিটার্ন দাখিলে অনিয়ম ধরা পড়ে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আয়কর আইন ও মানিলন্ডারিং আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মাদক ব্যবসায়ীদের এমন তালিকা নিয়ে কাজ হচ্ছে বলে আমি শুনেছি। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর, দুদক এবং অন্য যেকোনও সংস্থা বা ব্যক্তি আমাদের কাছে এমন অভিযোগ দিলে তাদের বিরুদ্ধে আমরা অবশ্যই তদন্ত করবো। তাদের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।’

370 ভিউ

Posted ১১:৫৪ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৫ জুন ২০১৮

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com