রবিবার ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

রবিবার ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

শেষ বছরে মন্ত্রিসভায় কেন এই রদবদল

মঙ্গলবার, ০২ জানুয়ারি ২০১৮
296 ভিউ
শেষ বছরে মন্ত্রিসভায় কেন এই রদবদল

কক্সবাংলা ডটকম(২ জানুয়ারি) :: আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন দ্বিতীয় দফার সরকারের মন্ত্রিসভায় সর্বশেষ রদবদল হয়েছিল ২০১৫ সালের জুলাইয়ে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের পর গঠিত বর্তমান সরকারের মন্ত্রিসভার সেটিই ছিল প্রথম ও শেষ রদবদল। এরপর গত আড়াই বছরে কয়েকবার রদবদলের বিষয়টি আলোচনায় এসেছে।

প্রথম আলোচনায় আসে ২০১৬ সালের অক্টোবরে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠানের পর। ওই সম্মেলনের পর থেকেই মন্ত্রিসভায় রদবদলের কথা শোনা যায় সরকারের ভেতরে ও বাইরে। সরকারের দুই বছর পূর্তিতেও এই আলোচনা জোরদার হয়।

সর্বশেষ বিদায়ী বছরের ১৫ মে মন্ত্রিসভার বৈঠক থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের মন্ত্রিসভায় রদবদলের আভাস দিয়েছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, অনেকদিন তো হয়ে গেছে, মন্ত্রিসভায় একটা রদবদল দরকার; আর রদবদল হলে কে থাকবে না থাকবে—সেটা একান্তভাবে প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার।

ওবায়দুল কাদেরের সেই আভাস বাস্তবে রূপ নিতে যাচ্ছে আজ। গতকাল বঙ্গভবন থেকে চারজন ডাক পেয়েছেন। আজ তাদের সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রী হিসেবে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের কথা জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম।

ডাক পেয়েছেন এমন চারজন হলেন—মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, লক্ষ্মীপুরের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য এ কে এম শাহজাহান কামাল, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সদস্য কেরামত আলী ও প্রযুক্তিবিদ মোস্তাফা জব্বার।

এরমধ্যে সদ্য প্রয়াত মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী ছায়েদুল হকের স্থলে নারায়ণ চন্দ্রকে পূর্ণমন্ত্রী করার কথা জানা গেছে। অন্যদের বিষয়ে কিছু জানা যায়নি। কিন্তু সরকারের শেষ বছরে এসে কেন এই রদবদল?

এই নিয়ে নানা আলোচনা শুরু হয়েছে রাজনীতিতে। নানা হিসাবনিকাশ চলছে সরকারের ভেতরে ও বাইরে। কারা মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়তে পারেন কিংবা এই চারজনের বাইরে আর কাউকে নতুন অন্তর্ভুক্ত করা হবে কি না—এই নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন সরকারদলীয় মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যসহ সরকার-সংশ্লিষ্টরা।

এমনকি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এই বছরের মাঝামাঝি আরেক দফা রদবদল হতে পারে—এমন কথাও শোনা যাচ্ছে। ফলে এই রদবদল নিয়েই নতুন বছরের যাত্রা শুরু করল সরকার।

সরকার সংশ্লিষ্ট ও আওয়ামী লীগ সূত্রগুলো বলছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে লক্ষ করেই এই রদবদল। সেপ্টেম্বরে আরেক দফা পরিবর্তন আসতে পারে। সরকার ও দলের মধ্যে নানা কারণে বিতর্কিত এবং বয়সের কারণে অপারঙ্গম কিছু মন্ত্রী বাদ পড়বেন মন্ত্রিসভা থেকে। কিছু প্রতিমন্ত্রী পদোন্নতি পেয়ে পূর্ণমন্ত্রী হবেন। কিছু নতুন মুখ যোগ হবে।

সূত্রগুলো আরো বলছে, গত বছরের জুলাই থেকেই মন্ত্রিসভায় রদবদলের কথা হচ্ছিল। চালের মূল্যবৃদ্ধি, পচা গম আমদানিসহ বিভিন্ন কারণে কিছু মন্ত্রী ও দলীয় লোকজনের ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। কয়েকজন দলীয় সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে নির্বাচনী এলাকায় আত্মীয়করণের রাজনীতির অভিযোগ উঠেছে।

বার্ধক্যজনিত কারণে শারীরিক সমস্যায় নিয়মিত চলাফেরা করতে অপারগ হওয়ায় অন্তত দু’জন প্রতিমন্ত্রী-মন্ত্রী বাদ পড়তে পারেন। মন্ত্রণালয় এবং নিজ নির্বাচনী এলাকায় বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগেও মন্ত্রিসভা থেকে ছিটকে পড়তে পারেন দু’একজন।

সূত্র মতে, সরকার ও দলের কর্মকাণ্ডের ইতিবাচক প্রচারণা এবং দলীয় কাজে সন্তোষজনক অবস্থানের কারণে মন্ত্রিত্ব হারানো আওয়ামী লীগদলীয় কিছু নেতা পুনরায় মন্ত্রিত্ব পেতে পারেন। দলের সাংগঠনিক কাজের পুরস্কার হিসেবেও মন্ত্রিত্ব পেতে পারেন কেউ কেউ। নির্বাচনকে সামনে রেখে তৃণমূলকে চাঙ্গা করতে জেলা পর্যায়ে রাজনীতি করেন এমন কয়েক নেতার কথাও মন্ত্রিসভায় শোনা যাচ্ছে।

আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন নিয়ে নিজেদের মধ্যে মনোমালিন্য এড়াতেই এমন সিদ্ধান্ত। আবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নতুন বিভাগগুলোতে প্রতিমন্ত্রী হিসেবে কিছু নতুন মুখের দেখাও মিলতে পারে।

মন্ত্রিসভায় রদবদলের ক্ষেত্রে বেশকিছু কারণের দিকে ইঙ্গিত দিয়েছেন সরকারসংশ্লিষ্ট ও আওয়ামী লীগ সূত্রগুলো। তাদের মতে, একটি কারণ হলো একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দৃশ্যমান পরিবর্তন দেখানো। বয়স্ক, কাজে পিছিয়ে থাকা, সমালোচিত মন্ত্রীদের এক্ষেত্রে বাদ দেওয়া হতে পারে।

এছাড়া ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা অনেক নেতাকেই মন্ত্রী করার কথা দিয়েছিলেন, যাদের অনেকেই বিগত ২০০৮ সালে এবং ২০১৪ সালে ক্ষমতার মেয়াদেও মন্ত্রিত্বের স্বাদ পাননি। এই প্রবীণ-বঞ্চিতদের নির্বাচনের আগে আগে মন্ত্রিত্ব দিতে পারেন প্রধানমন্ত্রী।

বিগত চার থেকে পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন, এমন জনপ্রিয় নেতাদের মধ্যে থেকে কাউকে কাউকে মন্ত্রিত্ব দেওয়ার চিন্তা আছে শেখ হাসিনার। একইসঙ্গে নির্বাচনী রাজনীতি সামাল দিতে প্রশাসনকে কাজে লাগাতে পারে এমন দক্ষ কয়েকজনকে মন্ত্রিসভায় আনতে পারেন তিনি।

পাশাপাশি সরকারের বাকি সময়ের উন্নয়ন কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে নেওয়ার জন্য মন্ত্রিসভার রদবদলের পাশাপাশি কলেবর আরেকটু বৃদ্ধির চিন্তাভাবনা চলছে। টানা দ্বিতীয় মেয়াদের শেষ সময়ে এসে আওয়ামী লীগের ত্যাগী ও বঞ্চিত নেতাদের মূল্যায়নের বিষয়টি সরকারের উচ্চপর্যায়ে সক্রিয় বিবেচনাধীন রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। সরকারের ৯ বছরে কিছুই পাননি—আওয়ামী লীগের এমন নেতাদের মন্ত্রিসভায় নতুন অন্তর্ভুক্তির সময় দেখা যেতে পারে।

সেক্ষেত্রে নির্বাচনী বছরে চলমান উন্নয়ন কাজ এগিয়ে নিতে দক্ষ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের অপেক্ষাকৃত গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর ‘পারফরম্যান্স’ মূল্যায়ন করা হয়েছে। এছাড়া মন্ত্রী থাকার সময় সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন সভানেত্রী শেখ হাসিনা।

অবশ্য রদবদল বিষয়ে কিছু জানেন না বলে মন্তব্য করেছেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ। তিনি বলেন, রদবদলের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এ বিষয়টি সম্পূর্ণ প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। তাই তিনিই ঠিক করবেন কিভাবে হবে রদবদল।

২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি শপথ নেন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের ২৯ মন্ত্রী, ১৭ প্রতিমন্ত্রী ও দুই উপমন্ত্রী। এই মন্ত্রিসভায় জাতীয় পার্টির তিনজন, ওয়ার্কার্স পার্টির ও জাসদের একজন করে স্থান পান। ওই বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি প্রথম দফায় মন্ত্রিসভার কলেবর বৃদ্ধি পায়। শপথ নেন এ এইচ মাহমুদ আলী ও নজরুল ইসলাম।

এর মধ্যে আমেরিকা সফরে গিয়ে হজ নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করে অক্টোবরে বাদ পড়েন আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। পরের বছরের ১৪ জুলাই মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ করে নুরুল ইসলাম বিএসসিকে যুক্ত করা হয়। পদোন্নতি পেয়ে মন্ত্রী হন ইয়াফেস ওসমান ও আসাদুজ্জামান খান কামাল। প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন তারানা হালিম ও নুরুজ্জামান আহমেদ।

এরমধ্যে আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে সরিয়ে স্থানীয় সরকারের দায়িত্ব দেওয়া হয় খোন্দকার মোশাররফ হোসেনকে। প্রথমে সৈয়দ আশরাফকে দফতরবিহীন, পরে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এরপর আর কোনো রদবদল হয়নি।

296 ভিউ

Posted ১১:৪৭ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০২ জানুয়ারি ২০১৮

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com