রবিবার ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

রবিবার ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

শেয়ারবাজারে দিন দিন নিঃস্ব হচ্ছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা

মঙ্গলবার, ২০ আগস্ট ২০১৯
177 ভিউ
শেয়ারবাজারে দিন দিন নিঃস্ব হচ্ছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা

কক্সবাংলা ডটকম(১৯ আগস্ট) :: শেয়ারবাজারের সংকট কাটাতে ব্যাপক প্রণোদনা দিয়েছে সরকার। বাজার সংশ্লিষ্টদের প্রায় সব দাবিই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে পূরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে কর অবকাশ সুবিধা, প্রাথমিক শেয়ারে (আইপিও) বিশেষ কোটা, বিভিন্ন আইনকানুন শিথিল করা এবং ঋণ সুবিধা অন্যতম।

কিন্তু বাজারে এ সুবিধার কোনো প্রভাব নেই। উল্টো ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছে বাজার। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের পরিবর্তে নির্দিষ্ট একটি চক্রের পেটে প্রণোদনার সুবিধা যাওয়ায় সংকট কাটছে না।

সূত্র জানায়, এ সুবিধার জন্যই বিভিন্ন সময়ে চক্রটি বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছে। এরা বিনিয়োগকারীদের জিম্মি করে বিভিন্ন সুবিধা আদায় করছে। আর শেষ পর্যন্ত নিঃস্ব হচ্ছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।

আর এ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয় শত শত কোটি টাকা লুটে নিচ্ছে চক্রটি। এ ব্যাপারে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) পক্ষ থেকেও শক্ত পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বাজারের মূল সমস্যা বিনিয়োগকারীদের আস্থার সংকট। এ সংকট কাটাতে প্রণোদনা নয়, সুশাসন প্রতিষ্ঠা জরুরি।

জানতে চাইলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন থেকে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে। আর আস্থার সংকট না কাটলে বাজার ইতিবাচক হওয়ার কোনো লক্ষণ নেই।

তিনি বলেন, প্রণোদনা দিলে বাজার সাময়িকভাবে উপকৃত হয়। কিন্তু এটি স্থায়ী কোনো সমাধান নয়।

অর্থনীতিবিদ আবু আহমেদ বলেন, শেয়ারবাজার অত্যন্ত স্পর্শকাতর জায়গা। ফলে প্রণোদনার পরিবর্তে আইনকানুন সংস্কার জরুরি।

না হলে বিনিয়োগকারীরা আস্থা হারিয়ে ফেলে। তিনি বলেন, ‘এ অবস্থার উত্তরণে কৃত্রিমভাবে সূচক না বাড়িয়ে বাজারকে তার নিজস্ব গতিতে চলতে দেয়া উচিত।’

প্রণোদনা :
————-
শেয়ারবাজারে গতি ফেরাতে এবারের বাজেটে তিন সুবিধা দেয়া হয়েছে। এর অন্যতম হল বিনিয়োগকারীদের করমুক্ত লভ্যাংশ দ্বিগুণ করা। নতুন নিয়মানুসারে কোনো বিনিয়োগকারী শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি থেকে ৫০ হাজার টাকা লভ্যাংশ পেলে তার জন্য কোনো কর দেয়া লাগবে না।

গত অর্থবছরে এই সীমা ছিল ২৫ হাজার টাকা। এ ছাড়াও তালিকাভুক্ত ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্পোরেট কর কমানো হয়েছে। আগে এই হার ৪০ শতাংশ। এবারের বাজেটে তা ২ দশমিক ৫ শতাংশ কমিয়ে সাড়ে ৩৭ শতাংশ করা হয়েছে।

এ ছাড়াও পোশাক খাতের প্রতিষ্ঠান শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হলে ওই প্রতিষ্ঠানের কর্পোরেট কর ১৫ থেকে কমে সাড়ে ১২ শতাংশ করা হয়েছে। বাজেটের আগেও বেশকিছু সুবিধা দিয়েছে সরকার।

এর মধ্যে কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে চীনের বিনিয়োগ থেকে স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্যরা যে অর্থ পেয়েছিল, শেয়ার কেনার শর্তে ওই টাকার ওপর ১০ শতাংশ কর অবকাশ দেয়া হয়েছিল।

কিন্তু অধিকাংশ সদস্য আগে থেকেই শেয়ার বিক্রি করে তাদের ডিলার অ্যাকাউন্ট খালি করে রেখেছিল। এরপর চীনের টাকা পেয়ে তারা নতুন করে কিছু শেয়ার কিনেছে।

অর্থাৎ টাকা কর অবকাশ সুবিধা নিয়েও তাদেরকে বিনিয়োগ করতে হয়নি। এভাবে বিনিয়োগকারীদের জিম্মি করে বিভিন্ন উপায়ে সুবিধা আদায় করে নিয়েছে একটি চক্র।

বাজার পরিস্থিতি :
—————-
চলতি বছরের মার্চে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজারমূলধন ছিল ৪ লাখ ২১ হাজার কোটি টাকা। সোমবার পর্যন্ত তা কমে ৩ লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকায় নেমে এসেছে।

এ হিসাবে আলোচ্য সময়ে বাজারমূলধন কমেছে ৩৩ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ১৩টি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের বাজার মূলধন ১ লাখ কোটি টাকা। অর্থাৎ বহুজাতিক কোম্পানি বাদ দিলে ডিএসইর বাজারমূলধন দাঁড়ায় ২ লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকা।

এ সময়ে ডিএসইর মূল্যসূচক ৬ হাজার পয়েন্ট থেকে কমে ৫ হাজার ২০০ পয়েন্টে নেমে এসেছে। এ ছাড়াও কমছে লেনদেন। বর্তমানে লেনদেন ৩০০ কোটি টাকার ঘরে নেমে এসেছে।

আগের যত প্রণোদনা :
———————-
বিপর্যয়ের পর ২০১১ সালেও বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশের ওপর কর দিতে হতো। স্টক এক্সচেঞ্জের দাবির কারণে ধাপে ধাপে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত লভ্যাংশ করমুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া ডিমিউচুয়ালাইজেশনের পর স্টক এক্সচেঞ্জকে ৫ বছর কর অবকাশ দেয়া হয়েছে।

এর মধ্যে প্রথম বছরে শতভাগ করমুক্ত। এছাড়া কোনো কোম্পানি বা অংশীদারি ফার্ম পুঁজিবাজারের বিনিয়োগ হতে যে টাকা মুনাফা করে, তার ওপর ১০ শতাংশ হারে উৎসে কর দিতে হতো। বর্তমানে তা করমুক্ত করা হয়েছে।

অর্থাৎ কোনো কোম্পানি শেয়ারবাজার থেকে মুনাফা করলে উৎসে কর দিতে হয় না। মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসসহ সংশ্লিষ্ট ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হিসাবের ৫০ শতাংশ সুদ মওকুফ করেছে।

বাকি ৫০ শতাংশ সুদ ব্লক অ্যাকাউন্টে রেখে তিন বছরে কিস্তিতে পরিশোধের সুযোগ দেয়া হয়েছিল। আইপিওতে বিশেষ কোটা দেয়া হয়েছে। ২০১২ থেকে কোম্পানির আইপিওতে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের জন্য ২০ শতাংশ কোটা দেয়া হয়েছে।

বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পুনঃঅর্থায়ন তহবিলের আওতায় ৯০০ কোটি টাকা দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। ২৫ হাজার বিনিয়োগকারী এ সুবিধা পেয়েছে। এ ছাড়াও ব্রোকারেজ হাউসের পুনর্মূল্যায়নজনিত ক্ষতির বিপরীতে বিশেষ প্রভিশন সুবিধা দেয়া হয়েছে।

ফলে গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট ১৫০ শতাংশ পর্যন্ত নেতিবাচক হলেও একসঙ্গে প্রভিশনিং করতে হবে না। এ ছাড়াও ব্যাংক কোম্পানি আইন শিথিল করে ব্যাংকের বিনিয়োগে ছাড়, বিভিন্ন সময়ে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ এবং কর্পোরেট কর কমানো হয়েছে।

কিন্তু বাজারে এর প্রভাব খুব বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। জানা গেছে, একের পর এক অজুহাতে সরকারকে জিম্মি করে সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছে বাজার সংশ্লিষ্টরা।

একটি প্রণোদনার পর কয়েক দিন সূচক বাড়ে। এরপর টানা পতন শুরু হয়। শুরু হয় নতুন বায়না। এভাবেই গত ৮ বছর চলেছে দেশের শেয়ারবাজার।

177 ভিউ

Posted ২:৪৬ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২০ আগস্ট ২০১৯

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com