রবিবার ১৬ই জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২রা আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

রবিবার ১৬ই জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

কক্সবাজার-১ আসনের সাবেক এমপি জাফরের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে হারের নেপথ্যে

বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০২৪
20 ভিউ
কক্সবাজার-১ আসনের সাবেক এমপি জাফরের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে হারের নেপথ্যে

মুকুল কান্তি দাশ,চকরিয়া :: দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে হেরে যাওয়া সাবেক এমপি জাফর আলম অংশ নিয়েছিলেন সদ্য অনুষ্টিতব্য চকরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে।

চেয়ারম্যান পদে লড়ে সেখানেও হারলেন বয়স, রাজনীতি ও সম্পদসহ সব দিক দিয়ে পিছিয়ে থাকা বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদীর কাছে।

এই হারজিত দিয়ে চলছে নানা বিশ্লেষণী আলোচনা। কমতি নেই সমালোচনারও। ফলাফল ঘোষণার পর রাত ১১ টার দিকে নানা অনিয়ম অসংগতির অজুহাত তুললেও নির্বাচন শেষ হওয়ার মুহূর্তে জাফর আলম সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচন কমিশন সহ প্রশাসন সুস্থ, সুন্দর নির্বাচন উপহার দিয়েছেন।

তিনি আত্মবিশ্বাসের সাথে বলেন, এই ভোটে আমি শতভাগ নয় ১০১% আমিই জিতবো। কিন্তু রাত সাড়ে দশটা পেরোতেই ১ হাজার ৬৭১ ভোটের ব্যবধানে পরাজয়ের খবর পেয়ে ভোল পাল্টে পেলেন জাফর। তিনি একবার বলেন, বিএনপির ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন। আবার বলেন, একটি কেন্দ্রে ইভিএম কারচুপির শিকার তিনি।

কিন্তু একাধিক নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের মতে, অতীতের নানা বিতর্কিত কর্মকান্ড আওয়ামীলীগের ত্যাগী নেতাদের কোনঠাসা করে নিজের পছন্দনীয় লোকদের নিয়ে আপন বলয় সৃষ্টি, টাকার জোরে সব ক্ষেত্রে জয়ের মনোভাবই কাল হয়েছে জাফরের জন্য।

ইতিপূর্বে নানাভাবে হয়রানির শিকার হওয়া জেলা, উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা একাট্টা হয়ে জাফরকে হারাতে মাঠে নামেন। এই মিশনে নেপথ্যে থেকে যোগ দেন, বিএনপি ও জাতীয় পর্টি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক নেতার দাবী, গত পাঁচ বছরে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ৬ নেতাকর্মীকে জাফর আলমের নেতৃত্বে হত্যা করা হয়। এসব মামলায় উল্টো বিএনপি, জামাতের নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়। সর্বশেষ হত্যার শিকার ফোরকান। তাকে গত ১৫ আগষ্ট চকরিয়ায় অনুষ্ঠিত দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর গায়েবানা জানাজা শেষে গুলি করে হত্যা করা হয় ফোরকানকে। শান্তিপূর্ণ দলীয় কর্মকান্ড ও করতে দিতো না জাফর। তাই, জাফরকে ঠেকানো আমাদের জন্য অতি প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল।

তিনি আরও বলেন, আমাদের অভিভাবক ও শীর্ষ নেতার সবুজ সংকেত পেয়েই আমরা ভোট প্রয়োগ করি। তবে, বিভিন্ন কেন্দ্রে বাঁধার প্রেক্ষিতে অসংখ্য নেতাকর্মী সমর্থক ভোট দিতে যেতে পারিনি। নচেৎ জয়-পরাজয়ের ব্যবধান আরো বাড়তো।

স্থানীয় সাংবাদিকরা জানান, জাফর আলমের অন্যায় নিয়ে প্রতিবাদ ও লিখলেই হুমকি হামলা থেকে রেহাই পাননা সাংবাদিকরাও। সম্প্রতি এক যুবককে মারধরের সময় প্রতিবাদ করলে হামলার শিকার হন চকরিয়া প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক মানবজমিন প্রতিনিধি মোহাম্মদ উল্লাহ। হামলার ঘটনায় আইনি প্রতিকার চাইতে যাওয়ার সময় হুমকির শিকার হন চকরিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি এম জাহেদ চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মিজবাহউল হকসহ ১৫ জন সাংবাদিক।

কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালাহউদ্দিন আহমেদ সিআইপি বলেন, আমার জীবনের রাজনৈতিক যাত্রায় অন্যতম ভুল ছিল জাফরকে আওয়ামীলীগে নেতৃত্বে আনা। সেই ভুলের মাশুল দিতে হচ্ছে এখন। জাফরের কাছে কারো জানমালের নিরাপত্তা নেই। তাই তাকে দমিয়ে রাখা একান্ত প্রয়োজন হয়ে উঠেছে।

বঙ্গবন্ধু কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়েও কটুক্তি করে সে। দূর্ণীতিতো তার জন্য ডালভাত। ২০১৮ সালে এমপি হওয়ার পর কল্পনাতীত সম্পদের মালিক হয়ে ধরাকে সরাজ্ঞান করতো সে।

তাই সংসদ নির্বাচনের পূর্বে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি পদ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয় নৌকার মনোনয়ন পাননি দ্বিতীয় বার। তবুও বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে পরাজয় বরণ করে। এরপরও ছাড়তে পারেনি ক্ষমতার লোভ। আপন বলয় টিকিয়ে রাখতে এমপিতে হারার পরও উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়।

তাই আমরা আওয়ামীলীগের ত্যাগী নেতাকর্মীদের একত্রিত করে জাফরকে হারিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছি, শুধু সম্পদ ও ক্যাডার বাহিনী থাকলেই সবক্ষেত্রে জয়ী হওয়া যায় না। তৃণমূলসহ দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের ভালেবাসার প্রয়োজন হয় স্বচ্ছ নির্বাচনে জিততে হলে।

টানা দ্বিতীয়বার উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়া ফজলুল করিম সাঈদী বলেন, এই বিজয় আমার নয়। এই বিজয় মজলুম, নির্যাতিত নিপিড়ীত অবহেলিত দলীয় নেতাকর্মী ছাড়াও পুরো চকরিয়াবাসীর। দলমত নির্বিশেষে সকল জনতার।

উল্লেখ্য, জাফর আলম একাদশ সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে এমপি নির্বাচিত হন। সর্বশেষ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নৌকা না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হলেও কল্যাণ পার্টির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীকের কাছে বিপুল ভোটে ব্যবধানে হেরে যান। ওই নির্বাচনে আওয়ামীলীগের সিংহভাগ নেতাকর্মী জাফরের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল। এর আগে দলীয় নেতাকর্মীদের সহযোগিতায় জাফর আলম প্রথমে মেয়র, পরে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। দলীয় নেতাকর্মীরা মুখ ফিরিয়ে নেয়ার পর এমপি ও উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে হেরে যান।

 

20 ভিউ

Posted ১:০৭ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০২৪

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com