সোমবার ৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

সোমবার ৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

সুবিধা দিতে গিয়ে সংকটে জনতা ব্যাংক

সোমবার, ০৮ অক্টোবর ২০১৮
371 ভিউ
সুবিধা দিতে গিয়ে সংকটে জনতা ব্যাংক

কক্সবাংলা ডটকম(৭ অক্টোবর) :: দুই প্রতিষ্ঠানকে সুবিধা দিতে গিয়ে ডুবতে বসেছে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংক। প্রতিষ্ঠান দুটি হলো—ক্রিসেন্ট গ্রুপ ও অ্যানন টেক্স গ্রুপ। ক্রিসেন্ট গ্রুপের ঋণকেলেঙ্কারির কারণে ইতোমধ্যে ব্যাংকটির পুরান ঢাকার ইমামগঞ্জ ও মোহাম্মদপুর করপোরেট শাখার বৈদেশিক ব্যবসার লাইসেন্স (এডি লাইসেন্স) বাতিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এই দুই শাখায় এলসি খোলাসহ বৈদেশিক বাণিজ্য কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার কারণে সংকটে পড়েছে পুরো ব্যাংকটি। এরফলে টাকা ধার করে ও মূলধন ভেঙেই এখন দৈনন্দিন কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে ব্যাংকটির।

এদিকে, ক্রিসেন্ট গ্রুপের ঋণকেলেঙ্কারির ঘটনাকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি ব্যাংকটির দুই পরিচালককে অপসারণ করেছে সরকার। তারা হলেন—আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মানিক চন্দ্র দে ও  বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক আবদুল হক।

ব্যাংকটির কর্মকর্তারা বলছেন, ক্রিসেন্ট গ্রুপ ও অ্যানন টেক্স গ্রুপ জনতা ব্যাংক থেকে বড় অঙ্কের ঋণ সুবিধা পেয়েছে। অথচ তারা ঋণের টাকা ফেরত দিচ্ছে না। উপরন্তু, অ্যাননটেক্স গ্রুপ ব্যাংকটি থেকে আরও টাকা চেয়ে আবেদন করেছে। টাকার জন্য প্রতিষ্ঠানটির মালিক ইউনূস বাদল সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে সচিবালয়ে বৈঠকও করেছেন। এ বিষয়ে ইউনূস  বাদলের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনও মন্তব্য করেননি।

অ্যাননটেক্স গ্রুপের কাছে ব্যাংকটির ঋণ দাঁড়িয়েছে সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকার ঋণকে খেলাপি তালিকাভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এছাড়া ক্রিসেন্ট গ্রুপের সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার ঋণ খেলাপি তালিকাভুক্ত হয়ে গেছে। টাকা আদায়ে গ্রুপটির কর্ণধার এম এ কাদের ও তার ভাই জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার আবদুল আজিজের সম্পদ নিলামে তুলেছে জনতা ব্যাংক।

এ প্রসঙ্গে জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুছ ছালাম আজাদ বলেন, ‘ক্রিসেন্ট গ্রুপের কাছ থেকে টাকা আদায়ে আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে চেষ্টা করেছি। তারা কয়েক দফায় অঙ্গীকারও করেছে। কিন্তু দেশে টাকা আনতে পারেননি। যে কারণে বাধ্য হয়েই আমরা তাদের বন্ধকি সম্পদ নিলামে তুলেছি।’

জানা গেছে, ক্রিসেন্ট গ্রুপের রফতানির অর্থ দেশে না এলেও এই কোম্পানির একের পর এক বিল কিনেছে জনতা ব্যাংকের পুরান ঢাকার ইমামগঞ্জ করপোরেট শাখা। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাগজে-কলমে ক্রিসেন্ট গ্রুপের প্রতিষ্ঠানগুলো চামড়াজাত পণ্য রফতানি করেছে হংকং ও ব্যাংককে। সেই রফতানি বিল ক্রয় করে গ্রুপটিকে নগদে টাকা দিয়েছে ব্যাংক। অথচ রফতানির টাকা ফেরত আসছে না। নগদে নেওয়া টাকাও ফেরত দিচ্ছে না গ্রুপটি।

এদিকে একক গ্রাহকের ঋণসীমা লঙ্ঘন করে গ্রুপটিকে দেওয়া ঋণের টাকা ফেরত পেতে প্রতিষ্ঠানটির বন্ধকি সম্পদ বিক্রির জন্য নিলাম ডেকেছে জনতা ব্যাংক। এভাবে ৩ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা আদায় করতে চায় ব্যাংকটি। নিলামকৃত সম্পদের মধ্যে রয়েছে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার সাড়ে ১৬ শতাংশ প্লট, সাভার ও হাজারিবাগের জমি, যন্ত্রপাতিসহ কারখানা, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য।

ক্রিসেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এ কাদেরের প্রতিষ্ঠান চারটি হলো ক্রিসেন্ট লেদার প্রোডাক্টস, ক্রিসেন্ট ট্যানারিজ, লেক্সকো লিমিটেড ও রূপালী কম্পোজিট লেদার। এর মধ্যে রিমেক্স ফুটওয়্যারের চেয়ারম্যান চলচ্চিত্র পরিচালক জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার আবদুল আজিজ। এ প্রসঙ্গে জানতে ক্রিসেন্ট গ্রুপের কর্ণধার এম এ কাদেরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।

জনতা ব্যাংকের ইমামগঞ্জ করপোরেট শাখায় গ্রাহক মূলত ক্রিসেন্ট গ্রুপ একাই। গ্লোরি এগ্রো ছাড়া ক্রিসেন্টের অপর পাঁচ প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ আদায়েই নিলাম ডেকেছে জনতা ব্যাংক। নিলামের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রিমেক্স ফুটওয়্যারের খেলাপি ঋণ ১ হাজার ৯৩ কোটি টাকা, ক্রিসেন্ট লেদার প্রোডাক্টসের ৮৬৪ কোটি টাকা, ক্রিসেন্ট ট্যানারিজের ১৭০ কেটি টাকা, লেক্সকো লিমিটেডের ৪৩০ কোটি টাকা ও রূপালী কম্পোজিট লেদারের ৮৮৮ কোটি টাকা।

এদিকে ৩০ সেপ্টেম্বর রিমেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের সম্পত্তি নিলামে বিক্রি করে ঋণের অর্থ আদায়ের ঘোষণা দিয়েছে ব্যাংকটি। ভুয়া রফতানি নথি তৈরি করে জনতা ব্যাংক থেকে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা তুলে নিয়েছে রিমেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেড। এর আগে ৩১ জুলাই জনতা ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করতে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান এম এ আজিজের নামে একটি চিঠি ইস্যু করে।

এ প্রসঙ্গে রিমেক্স ফুটওয়্যারের চেয়ারম্যান ও জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার আব্দুল আজিজ  বলেন, ‘রিমেক্স ফুটওয়্যারের সঙ্গে তার কোনও সম্পৃক্ততা নেই।’

ব্যাংকটির তারল্যসংকট নিয়ে সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবের কাছে চিঠি দেন জনতা ব্যাংকের এমডি আবদুছ ছালাম আজাদ। ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, গত দুই মাসে (জুলাই ও আগস্টে) তাদের ২ হাজার ৬১২ কোটি টাকা আমানত হ্রাস পেয়েছে। এতে তারল্যসংকট বাড়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকসহ অন্যান্য ব্যাংক থেকে টাকা ধার করতে হচ্ছে। গত ২৬ আগস্ট ব্যাংকটি ২ হাজার ১৩৬ কোটি টাকা ধার করে ব্যাংকটি।

গত জুন শেষে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ বেড়ে হয়েছে ৯ হাজার ৮৭৯ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ২২ শতাংশ। একই সময়ে ব্যাংকটির লোকসান হয়েছে ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। এছাড়া ব্যাংকটির মূলধন ঘাটতি দাড়িয়েছে দুই হাজার ১৯৫ কোটি টাকা।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খন্দকার ইব্রাহিম খালেদ  বলেন, ‘ভালো ব্যাংকগুলোর মধ্যে জনতা ব্যাংক ছিল অন্যতম। এই ব্যাংকটিতেও অনিয়ম-দুর্নীতি জেঁকে বসেছে।’ মনিটরিংয়ের অভাবে এমনটি হয়েছে বলেও মনে করেন তিনি।

371 ভিউ

Posted ১১:৩৩ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ০৮ অক্টোবর ২০১৮

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com