কক্সবাংলা ডটকম(২১ ফেব্রুয়ারি) :: দ্রুত এগিয়ে চলেছে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ। এরই অংশ হিসেবে শরিয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে বসল পদ্মাসেতুর ২৫তম স্প্যান। এতে দৃশ্যমান হলো সেতুর ৩ হাজার ৭৫০ মিটার।মোট ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুর পৌনে ৪ কিলোমিটার দৃশ্যমান হয়েছে। এর আগে ১১ ফেব্রুয়ারি সেতুর ২৪তম স্প্যান বসানো হয়।
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার পর মূল সেতুর ৮৬ ভাগ নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। সর্বশেষ শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে বসেছে পদ্মা সেতুর ২৫তম স্প্যান।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ৫-ই আইডি নম্বরের স্প্যানটি সেতুর জাজিরা প্রান্তের ২৯ ও ৩০ নম্বর পিয়ারের ওপর বসানো হয়। ২৪তম স্প্যান বসানোর ১০ দিন পর ২৫তম স্প্যান বসানো হলো। পদ্মা সেতুর একাধিক প্রকৌশলী এ খবর নিশ্চিত করেছেন। ২৫তম স্প্যান বসানোর পর সেতুর তিন হাজার ৭৫০ মিটার দৃশ্যমান হয়েছে।
সেতুর সহকারী প্রকৌশলী হুমায়ুন কবীর জানান, ৫-ই স্প্যান স্থায়ীভাবে ২৯-৩০ নম্বর পিয়ারের ওপর বসানো হয়। এর আগে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মুন্সীগঞ্জের লৌহজং এর মাওয়ার কন্সট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে তিয়ান-ই ক্রেনে করে ২৫তম স্প্যান ২৯ ও ৩০ নম্বর পিয়ারের কাছে নেওয়া হয় এবং বেলা ৩ টায় পিয়ারের ওপর তা বসানো হয়।
প্রকৌশলী সূত্রে জানা যায়, পদ্মা সেতুর মোট ৪১টি স্প্যানের মধ্যে চীন থেকে মাওয়া এসেছে ৩৫টি স্প্যান। বাকি স্প্যানগুলো মার্চের মধ্যেই দেশে চলে আসবে। সেতুর ৪১টি স্প্যানের মধ্যে ২৫টি স্প্যান স্থায়ীভাবে স্থাপন করা হয়েছে, যার দৈর্ঘ্য ৩ হাজার ৭’শ ৫০ মিটার। এ সিডিউল মেনে স্প্যান বসাতে পারলে আগামী বছরের জুলাই নাগাদ ৪১টি স্প্যান বসানো শেষ হবে।
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি ও নদী শাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো। যার ওপর দিয়ে সড়কপথ ও নিচের অংশে থাকবে রেলপথ।
এদিকে, গত মাস (জানুয়ারি) পর্যন্ত পদ্মা সেতু প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি হয়েছে ৭৭ ভাগ এবং মূল সেতুর ভৌত অগ্রগতি ৮৬ ভাগ।
সরকারের অর্থায়নে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পদ্মা সেতু নির্মাণের প্রাক্কলিত ব্যয় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা। এ বছরের জুন পর্যন্ত পদ্মাসেতুর ২৬২টি পাইলের মধ্যে ২৫৬টির এবং ৪২টি পিয়ার কলামের মধ্যে ২৯টির নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। ২১ ফেব্রুয়ারি ২৫তম স্প্যান বসানোর মধ্যদিয়ে পৌনে ৪ কিলোমিটার সেতু দৃশ্যমান হয়েছে।
, এ বছরের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের জাজিরা ও মাওয়ার সংযোগ সড়ক এবং সার্ভিস এরিয়া–২–এর নির্মাণকাজ শতভাগ শেষ হয়েছে। প্রকল্পের সার্বিক ভৌত অগ্রগতি দেখানো হয়েছে ৭১ ভাগ। আরও বলা হয়েছে, পদ্মা সেতুর উভয় পারে ১ লাখ ৬৯ হাজার ৯৫৭টি গাছ লাগানো হয়েছে। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এলাকায় একটি জাদুঘর স্থাপনের কাজ চলমান আছে। এই জাদুঘরে রাখার জন্য ২ হাজার ২৩টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের মাঝে গত জুন পর্যন্ত ৬৪১ কোটি ৯৪ লাখ টাকা অতিরিক্ত সহায়তা বাবদ বিতরণ করা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে পুনর্বাসন এলাকায় নির্মিত ২ হাজার ৬৯০টি প্লট ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৬৯৭টি ভূমিহীন পরিবারকে বিনা মূল্যে প্লট দেওয়া হয়েছে।
Posted ৮:৫৪ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta