কক্সবাংলা ডটকম(১৩ নভেম্বর) :: পাঁচ মাসাধিককাল ধরে চলমান আন্দোলনের এ পর্যায়ে হংকংয়ে আইনের শাসন ‘পতনের দ্বারপ্রান্তে’ পৌঁছে গেছে। এমন সতর্কবার্তা দিয়েছে স্থানীয় পুলিশ। সোমবার হংকংয়ে নতুন করে পুলিশের গুলি এবং সহিংসতার পর গতকাল পুলিশের পক্ষ থেকে এমন বার্তা দেয়া হলো। খবর বিবিসি।
গতকালও হংকংয়ের ব্যবসায়িক কেন্দ্র এবং বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোয় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়েছে। বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, শত শত বিক্ষোভকারী পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়ে। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে।
গতকাল ২১ বছরের এক ছাত্রের বুকে গুলি লেগেছে। তাকে খুবই কাছ থেকে গুলি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওই যুবকের রাস্তায় পড়ে থাকার ছবি ভাইরাল হয়েছে। চাপ চাপ রক্তের পাশেই বিক্ষোভকারীরা লিখে রেখেছে, ‘আমরা কোনো মতেই আত্মসমর্পণ করব না’।
এ পরিস্থিতির মধ্যে গতকাল দুপুরের খাবারের বিরতির সময় হাজার হাজার চাকরিজীবীকে রাস্তায় নেমে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে। নগরীর উঁচু ভবনগুলোর নিচের সড়ক অবরোধ করে তাদের সমস্বরে ‘স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম’, ‘হংকংয়ের পাশের দাঁড়াও’ স্লোগান দিতে দেখা গেছে।
বিক্ষোভকারীদের বেশির ভাগই কর্মস্থলের পোশাকে ও মুখোশ পরে ছিল। তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। এ সময় এক ডজনের বেশি বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়।
গত অক্টোবরের পর সোমবারের বিক্ষোভে পুলিশ তৃতীয়বারের মতো কোনো বিক্ষোভকারীকে সরাসরি গুলি করেছে। অন্যদিকে সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীরা এদিন বেইজিংপন্থী এক সমর্থকের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।
গতকাল পরিবেশ শান্ত হলে পুলিশের মুখপাত্র কং উইং চেউং এক প্রেস ব্রিফিংয়ে গত দুদিনের সহিংসতার কথা উল্লেখ করে সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের সমাজকে পুরোপুরি পতনের দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে। মুখোশধারী বিক্ষোভকারীরা উন্মাদের মতো মেট্রোরেলের লাইনে সাইকেল, ধাতব টুকরা এবং অন্যান্য আবর্জনা ফেলছে এবং বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার চেষ্টা করছে। তাদের এ কাণ্ডে যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় অচল হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, মুখোশধারী বিক্ষোভকারীরা তাদের দাবি আদায়ের আশা নিয়ে বেপরোয়াভাবে সহিংস হয়ে উঠছে। তারা হংকংয়ে আইনের শাসনকে পুরোপুরি পতনের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিয়েছে।
সোমবার বেইজিংপন্থী অগ্নিদগ্ধ ব্যক্তির অবস্থা আশঙ্কাজনক জানিয়ে মুখপাত্র চেউং আরো বলেন, কে বা কারা তার গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে, তা খুঁজে বের করা হবে।
একই সংবাদ ব্রিফিংয়ে আরেক পুলিশ কর্মকর্তা সোমবার বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণের পক্ষ সমর্থন করেন।
চীনের মূল ভূখণ্ডে বন্দি প্রত্যর্পণ নিয়ে একটি প্রস্তাবিত বিল বাতিলের দাবিতে গত জুন থেকে হংকংয়ে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভের মুখে বিলটি প্রথমে ‘মৃত’ এবং পরে বাতিল ঘোষণা করা হলেও গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনকারীরা আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের দাবিতে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে।
Posted ১০:৪১ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০১৯
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta