কক্সবাংলা ডটকম(৮ আগস্ট) :: ঘুমকাতুরেদের জন্য দুঃসংবাদ। হূদরোগ ও এর ধারাবাহিকতায় অকালমৃত্যুর কারণ হয়ে উঠতে পারে অতিরিক্ত ঘুম।
যুক্তরাজ্যের স্ট্যাফোর্ডশায়ারভিত্তিক কিল ইউনিভার্সিটির গবেষকদের পরিচালিত এক গবেষণায় উঠে এসেছে, যারা রাতে ৮ ঘণ্টার বেশি ঘুমান, তাদের মধ্যে হূদরোগ ও অকালমৃত্যুর ঝুঁকি ৭ ঘণ্টা বা তার চেয়ে কম ঘুমানো ব্যক্তিদের তুলনায় বেশি।
গবেষণায় উঠে আসা ফলাফল সম্প্রতি জার্নাল অব দি আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনে নিবন্ধ আকারে প্রকাশ হয়েছে। কিল ইউনিভার্সিটির নিজস্ব ওয়েবসাইট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
গবেষণায় আরো উঠে আসে, যারা দিনে ১০ ঘণ্টা বা তার চেয়ে বেশি ঘুমান, তাদের মৃত্যুঝুঁকি দিনে ৭ ঘণ্টা ঘুমানো ব্যক্তিদের তুলনায় ৩০ শতাংশ বেশি। বিশ্বব্যাপী সংগৃহীত ৩০ লাখ লোকের স্বাস্থ্যসম্পর্কিত তথ্যের ভিত্তিতে এ গবেষণা চালানো হয়। গবেষক দলের প্রধান চুং শিং কাওয়াক ও তার সহকর্মীরা গবেষণার জন্য এর আওতাধীন ব্যক্তিদের ঘুমের সময়, হূদযন্ত্রের স্বাস্থ্য ও মৃত্যুহার সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করেন।
একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিকে দিনে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানোর পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এ বিষয়ে চুং শিং কাওয়াক বলেন, এর চেয়ে কম বা বেশি সময় ধরে ঘুমানো বেশি ক্ষতিকর কিনা, সে বিষয়টি আমরা নির্ধারণ করতে চেয়েছিলাম। এজন্যই গবেষণাটি হাতে নেয়া হয়। সুপারিশকৃত সময়ের চেয়ে বেশি ঘুমানোর কারণে মৃত্যুহার বা হূদরোগের আশঙ্কায় কতটা প্রভাব পড়ে, আমরা সেটিও নির্ণয় করতে চেয়েছিলাম।
গবেষণায় আরো উঠে আসে, ১০ ঘণ্টা ঘুমানোর কারণে স্ট্রোকে মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ে প্রায় ৫৬ শতাংশ। একই সঙ্গে হূদরোগে মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ে ৪৯ শতাংশ।
কাওয়াক জানান, বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্যে গবেষণায় উঠে আসা ফলাফলের গুরুত্ব অনেক। কারণ এতে প্রমাণ হয়, অতিঘুম হূদরোগের আশঙ্কা বাড়ায়। এছাড়া চিকিৎসাগত দিক থেকেও বিষয়টির গুরুত্ব নেহাত কম নয়। কারণ এতে একটা বিষয় পরিষ্কার, রোগীর সঙ্গে কথা বলার সময় চিকিৎসকদের ঘুমের সময়সীমা ও মান সম্পর্কে আরো বেশি প্রশ্ন করা উচিত।
তিনি বলেন, ‘যদি রোগীর অতিঘুমের প্রবণতা পাওয়া যায়, বিশেষ করে ৮ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে; সেক্ষেত্রে চিকিৎসকদের উচিত রোগীর মধ্যে হূদরোগের লক্ষণ অথবা অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া আছে কিনা তা অনুসন্ধান করা। অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া হলো এক ধরনের নিদ্রাবৈকল্য, যাতে ঘুমের সময় একজন মানুষের নিঃশ্বাস গ্রহণ-সংক্রান্ত জটিলতা দেখা দেয়।’
উল্লিখিত গবেষণায় প্রমাণ হয়, সুপারিশকৃত ৭-৮ ঘণ্টার চেয়ে অতিরিক্ত ঘুম মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। অল্প ঘুমের ক্ষেত্রেও যে এ কথা সত্যি, সে বিষয়টি আগেই প্রমাণ হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে চুং শিং কাওয়াক বলেন, ‘এখানে গুরুত্বপূর্ণ বার্তাটি হলো, ঘুমের অস্বাভাবিকতা হূদরোগের ঝুঁকি বাড়ায় এবং এ কারণেই রোগী দেখার সময় আলাপচারিতার মাধ্যমে তাদের ঘুমের সময় ও মান সম্পর্কিত তথ্য জেনে নেয়ার বিষয়টি চিকিৎসকদের বিবেচনায় আনা উচিত।’
Posted ১:৫৮ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ০৮ আগস্ট ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta