কক্সবাংলা রিপোর্ট(৫ জুন) :: বিশ্বজুড়েই পর্যটন অর্থনীতির অন্যতম বড় হাতিয়ার হয়ে ওঠেছে। পর্যটনে পর্যটকদেরকে ‘লক্ষ্মী’ হিসেবেই অভিহিত করা হয়। এই লক্ষ্মীদের অপেক্ষাতেই এখন বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যরে আধার কক্সবাজার জেলা। মেরিন ড্রাইভের হিমছড়ি পাহাড়ি ঝরনা,পাথুরে সৈকত ইনানী,টেকনাফ মাথিন কূপ,মহেশখালীর আদিনাথ মন্দির,রামুর বৌদ্ধ বিহার,চকরিয়ার বঙ্গবন্ধু সাফারী পারক,সেনাদিয়া,সেন্টমাটিনের পর্যটন কেন্দ্রগুলো সারাবছরই মুখর থাকে পর্যটকদের পদচারণায়। আর ঈদ এলে ঢল নামে পর্যটকদের। চাঙা হয়ে ওঠে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসা বাণিজ্য। আর এবার ঈদে ৯ দিনের দীর্ঘ ছুটি হওয়ায় পর্যটকদের ঢল নামার অপেক্ষায় ব্যবসায়ীরা। পর্যটকদের বরণ করতে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন তারা।
জানা যায়, প্রতিবছরই ঈদের ছুটিতে নানা বয়সের মানুষের ভিড় হয় কক্সবাজারের নয়নকাড়া পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে।তাই এবার ঈদের ছুটিতে কক্সবাজারের হোটেল ও রিসোর্টের ৮০ শতাংশ কক্ষ অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে। বিপুলসংখ্যক পর্যটককে বরণ করে নিতে প্রস্তুত কক্সবাজারের পাঁচ শতাধিক হোটেল-মোটেল গেস্টহাউস-কটেজ। এসব হোটেলে প্রত্যহ রাত যাপন করতে পারেন প্রায় আড়াই লাখ মানুষ।
হোটেলমালিকেরা বলছেন,ঈদের দিন ৫ জুন থেকে পর্যটকদের আসা শুরু হবে। ১৫ জুন পর্যন্ত টানা ১২দিনের ছুটিতে কক্সবাজারে ভিড় লেগেই থাকবে। বিশেষ করে ৭ থেকে ১০ জুন চার দিনে পর্যটক আসবেন প্রায় চার লাখ। অবশিষ্ট দিনগুলোতে আসবেন আরও দুই লাখ। তখন হোটেল-রেস্তোরাঁসহ পর্যটন খাতে ব্যবসা হবে ৩০০ কোটি টাকার।
এদিকে, পর্যটকরা যাতে নির্বিঘ্নে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন সেজন্য জেলা প্রশাসন ও ট্যূরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ।এরই ধারাবহিকতায় পবিত্র ঈদ- উল-ফিতরে পর্যটকদের ভ্রমণ নিরাপদ এবং আনন্দময় করতে মঙ্গলবার শহরের হোটেল-মোটেল জোনের কলাতলীতে অভিযান চালিয়েছে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালত। ৪ জুন দুপুর থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালত রুট পারমিট না থাকা এবং ফিটনেস বিহীন গাড়ী চালানোর অপরাধে সেন্টমার্টিন পরিবহন, রয়েল পরিবহন, সেন্টমার্টিন হিনো পরিবহনে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া হোটেল-মোটেল জোনের কলাতলীতে কোষ্টাল পিস রিসোর্টের কাগজপত্র ঠিক না থাকায় ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। আর পঁচা-বাসী খাবার তৈরী করায় নবাব রেষ্টুরেন্ট সহ ৩টি রেস্টুরেন্ট সিল গালা করে দেওয়া হয়।
জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, এই ঈদের ছুটিতে ভ্রমণে আসা কয়েক লাখ পর্যটকের নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি অতিরিক্ত হোটেল ভাড়া আদায় বন্ধ এবং খাবারের মান নিয়ন্ত্রণে ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে সক্রিয় রাখা হবে।
এদিকে পর্যটকদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ঈদ উপলক্ষে টানা ১২ দিনের ছুটিতে প্রায় ৬ লাখ পর্যটকের আগমন ঘটবে কক্সবাজারে। পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশের ১০১ সদস্য সমুদ্রসৈকত ছাড়াও টেকনাফ-কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ সড়কের দরিয়ানগর, হিমছড়ি, ইনানী, টেকনাফ, চকরিয়া ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক এলাকায় সার্বক্ষণিক ( দিনরাত ২৪ ঘণ্টা) নিরাপত্তা দিয়ে যাবে। কক্সবাজার শহরসহ জেলার বিভিন্ন দর্শনীয় এলাকায় পর্যটকদের নিরাপত্তা দেবে জেলা পুলিশ।
Posted ৩:৪৪ অপরাহ্ণ | বুধবার, ০৫ জুন ২০১৯
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta