কক্সবাংলা ডটকম(১ জানুয়ারী) :: স্বাগতম ২০১৮। আরেকটি নতুন বছরের শুভ সমাগমের আনন্দে সবাই বিভোর। নতুন বছরের শুরুতে একটু পেছনে ফিরে দেখা যাক। বিদায় নেয়া ২০১৭-তে আমরা এমন কিছু মানুষকে বিদায় জানিয়েছে যাদের মধ্যে রয়েছে রাজনীতির প্রিয় মুখ থেকে শুরু করে রুপালিজগতের জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব। বিদায় বলতে হয়েছে সংগীতের প্রিয় মুখ, প্রকৃতি প্রেমিকসহ দেশের বিখ্যাত গুণীজনদের। বছর শেষে আরো একবার শ্রদ্ধা জানাতে দৈনিক মানবকণ্ঠ পাঠকদের স্মরণ করিয়ে দেয়া হলো মৃত্যুঞ্জয়ীদের।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত: মারা যান ৫ ফেব্রুয়ারি। ৬৫ বছর বয়সী এই নেতা সাতবার জাতীয় সংসদে সুনামগঞ্জের দিরাইয়ের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। মৃত্যুর সময় তিনি ছিলেন আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি।
মুহাম্মদ ছায়েদুল হক: গেল বছরের শেষের দিকে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে সকালে মারা যান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের দায়িত্বে থাকা এ মন্ত্রী। জন্ম ১৯৪২, মৃত্যু ২০১৭। ৭৫ বছর বয়সী এ নেতা আওয়ামী লীগ থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনে পাঁচ বার সাংসদ নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে শেখ হাসিনার সরকারে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান।
এম কে আনোয়ার: বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য ৮৪ বছর বয়সে ২৩ অক্টোবর মারা যান। সাবেক আমলা এম কে আনোয়ারের পুরো নাম মোহাম্মদ খোরশেদ আনোয়ার। কুমিল্লার হোমনা আসন থেকে পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। ২০০১-২০০৬ মেয়াদে তিনি কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯০ সালে অবসরের পর এম কে আনোয়ার যোগ দেন বিএনপিতে।
আবদুর রহমান বিশ্বাস: ৯১ বছর বয়সে সাবেক এ রাষ্ট্রপতি মারা যান ৩ নভেম্বর। নব্বইয়ের দশকে বিএনপি সরকারের সময়ে রাষ্ট্রপতি ছিলেন তিনি। জিয়াউর রহমানের মন্ত্রিসভার সদস্য আবদুর রহমান বিশ্বাসকে ১৯৯১ সালে জাতীয় সংসদের স্পিকারের দায়িত্ব দিয়েছিলেন তখনকার প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। ওই বছর ১০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের ষোড়শ রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন তিনি।
এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী: মারা যান ১৫ ডিসেম্বর। ৭৪ বছরের জীবনে প্রবীণ এই আওয়ামী লীগ নেতা চট্টগ্রামের মেয়র ছিলেন ১৬ বছর। পাঁচ দশকের রাজনৈতিক জীবনে অনেক অর্জন থাকলেও কখনো এমপি হতে চাননি মহিউদ্দিন।
জিয়াউদ্দিন আহমেদ: একাত্তরে সুন্দরবন অঞ্চলে মুক্তিবাহিনীর নেতৃত্ব দেওয়া অবসরপ্রাপ্ত এ মেজর ২৮ জুলাই সিঙ্গাপুরে মারা যান। লিভার সিরোসিসে ভুগে ৬৭ বছর বয়সে মারা যাওয়া এই মুক্তিযোদ্ধা ১৯৬৯ সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন। পরে মুক্তিযুদ্ধে ৯ নম্বর সেক্টরে মেজর এম এ জলিলের অধীনে সাব-সেক্টর কমান্ডার ছিলেন।
আ ফ ম মাহবুবুল হক: মারা যান ১০ নভেম্বর, ৬৯ বছর বয়সে। মৃত্যুর সময়ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (মাহবুব) আহ্বায়ক ছিলেন মাহবুবুল হক।
আনিসুল হক: ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন মেয়র আনিসুল হক ৩০ নভেম্বর যুক্তরাজ্যের একটি হাসপাতালে মারা যান। টিভি উপস্থাপক ও ব্যবসায়ী পরিচয়ে চেনামুখ হলেও আনিসুল হক রাজনীতিতে আসেন আকস্মিকভাবেই। ২০১৫ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমর্থন পেয়ে ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র নির্বাচিত হওয়া আনিসুল হক সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি ছিলেন।
গোলাম মোস্তফা আহমেদ: গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের এমপি গোলাম মোস্তফা আহমেদ মারা যান ১৯ ডিসেম্বর। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর সুন্দরগঞ্জের এমপি মনজুরুল ইসলাম লিটন খুন হওয়ার পর ওই আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের সাংসদ হন ৬৬ বছর বয়সী মোস্তফা।
দ্বিজেন শর্মা: উপাধি পাওয়া নিসর্গসখা এর লেখক ৮৮ বছর বয়সে মারা যান ১৫ সেপ্টেম্বর। বাবা কবিরাজ ছিল বলে ছোটবেলা থেকেই লতা-পাতা, বৃক্ষ আর অরণ্য-প্রকৃতির সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠে তার।
তারকা জগতে
নায়করাজ রাজ্জাক: বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি এ অভিনেতা মারা যান ২১ আগস্ট । ৭৫ বছর বয়সে মৃত্যুর আগে পাঁচশ’র বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন তিনি। তিনি বাংলাদেশের মানুষের কাছে নায়করাজ নামেই খ্যাত ছিলেন। ২০১৫ সালে তিনি পান রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সম্মান স্বাধীনতা পুরস্কার।
বেগম মমতাজ: ৭৭ বছর বয়সে গত ২৯ ডিসেম্বর মারা যান। বাংলাদেশ টেলিভিশনের জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘সকাল সন্ধ্যা’ ও ‘শুকতারা’র নাট্যকার তিনি। রোকেয়া পদকে ভূষিত বেগম মমতাজ ঢাকার উদয়ন বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ ছিলেন।
মিজু আহমেদ: জনপ্রিয় চলচ্চিত্র এ অভিনেতা মারা যান গত ২৭ মার্চ ৬৪ বছর বয়সে।
বারী সিদ্দিকী: ৬৩ বছর বয়সে গত ২৪ নভেম্বর মারা যান। ছিলেন জনপ্রিয় বাংলা লোকগানের শিল্পী, গীতিকার, বাঁশিবাদক তিনি। আধ্যাত্মিক ধারার গানের জন্য পরিচিত।
লাকী আখান্দ: গত ২১ এপ্রিল ৬১ বছর বয়সে মারা যান জনপ্রিয় গীতিকার, সুরকার এ কণ্ঠশিল্পী।
Posted ১২:৫০ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০১ জানুয়ারি ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta