কক্সবাংলা রিপোর্ট(২৩ এপ্রিল) :: আগামী রোজার ঈদের আগে টানা ৯ দিনের ছুটির কবলে পড়তে যাচ্ছে দেশ।২৬ এপ্রিল বৃহস্পতিবার বিকালে দীর্ঘ এই ছুটির ফাঁদটা তৈরি হচ্ছে আগামী শুক্রবার (২৭ এপ্রিল) থেকে।আর টানা ৯ দিনের ছুটির এই সুযোগে ভ্রমণ পিপাসু লোকজন দল বেঁধে কক্সবাজারে বেড়াতে আসবে।এ কারণে পর্যটন নগরী কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে নামবে পর্যটকের ঢল।
এরই মধ্যে সাগরপাড়ের সকল আবাসিক হোটেল ও রেস্ট হাউসের অনেক কক্ষ অগ্রীম বুকিং হচ্ছে বলে জানিয়েছে কক্সবাজারের পর্যটন সংশ্লিষ্ঠ ব্যবসায়ীরা। অার পর্যটকের জন্য বাড়তি নিরাপত্তা দেবে প্রশাসন। ট্যুরিস্ট পুলিশ ও জেলা পুলিশের পাশাপাশি পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য কাজ করবে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
জানা যায়, আগামী ২৭ ও ২৮ এপ্রিল শুক্র ও শনি দুইদিন থাকবে সাপ্তাহিক ছুটি। ২৯ এপ্রিল রোববার বৌদ্ধপূর্ণিমার সরকারি ছুটি। ৩০ এপ্রিল সোমবার কর্মদিবস থাকলেও পরের দিন ১ মে শ্রমিক দিবসের ছুটি। পরদিন ২ মে বুধবার থাকছে পবিত্র শবে-বরাতের ছুটি। ৩ মে বৃহস্পতিবার কর্মদিবসে সরকারি অফিস খোলা থাকলেও পরের দুইদিন ৪ ও ৫ মে শুক্র ও শনিবার রয়েছে সাপ্তাহিক ছুটি। মোট টানা ৯ দিন দেশের সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ছুটিতে থাকবেন।
পর্যটন ব্যবসায়ীদের সাথে কথাবলে জানা যায়, অতীতের বিষয়টি পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, প্রতিবছর ঈদের ছুটিসহ নানা ছুটিতে ব্যাপক সংখ্যক পর্যটকের ভিড় হয় কক্সবাজারে। কিন্তু এবার পরিস্থিতি ভিন্ন।কারণ ঈদের ছুটিতে যারা বাড়িতে যাবেন তারা এ সুযোগকে কাজে লাগাবেন। তাই ঈদের আগেই টানা নয়দিনের ছুটির কারণে হোটেলগুলোতে ইতোমধ্যে অগ্রীম বুকিং এর জন্য ব্যাপক সাড়া পড়েছে। এ কারণে কক্সবাজারে এবার কয়েক শত কোটি টাকার ব্যবসা হবে বলে হোটেল-রেস্তোরাঁসহ পর্যটন-সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা আশা করছেন।
টানা নয়দিনের ছুটির ফাঁদে কক্সবাজারে পর্যটকের ভিড় বেশি হবে বলে মনে করছেন হোটেল মোটেল ওনার’স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ও সি-গাল হোটেলের প্রধান নির্বাহী ইমরুল সিদ্দিকী। তিনি বলেন, সি-গাল, ওশান প্যারাডাইস, লংবিচ, সি প্যালেস, সায়মন বিচ রিসোর্ট, রয়েল টিউলিপ হোটেল অ্যান্ড স্পা,প্যাঁচার দ্বীপের ‘মারমেড ইকো বিচ রিসোর্ট’ কক্সবাজারের নামীদামি এই তারকা হোটেলগুলোর ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ কক্ষ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত বিদেশী এনজিও’র দেশী-বিদেশী প্রতিনিধিরা দীর্ঘদিন ধরে অবস্থান করছে। এসব তারকা হোটেলে পর্যটকের চাহিদা কম থাকলেও বাকি কক্ষগুলো প্রায়ই বুকিং হয়ে গেছে।
কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেস্টহাউস মালিক সমিতির সহ-সভাপতি আলহাজ্ব শফিকুর রহমান কক্সবাংলাকে জানান,দুই-তিন দিনের ছুটি পেলেই কক্সবাজারে পর্যটকে ভরে যায়। তাই এবার ৯ দিনের ছুটিতে রেকর্ড সংখ্যক পর্যটক আসতে পারে। ইতিমধ্যে প্রায় হোটেলে বুকিং হওয়া শুরু হয়েছে। আশাকরি এ ধারা অব্যাহত থাকবে।
কক্সবাজার কটেজ মালিক সমিতির সভাপতি কাজী রাসেল আহমদ বলেন, সমিতির আওতাভুক্ত ১১৭টি কটেজ রয়েছে। কম দামে কক্ষ পাওয়া যায় বলে নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন কটেজে ওঠেন বেশি।আশাকরি সব রুম বুকিং হয়ে যাবে।
কক্সবাজার ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন -টোয়াক বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এসএম কিবরিয়া খান জানান- যেহেতু ৯ দিনের ছুটি থাকবে তাই ভ্রমণ পিপাসুরে কক্সবাজারে ছুটে আসবেই। এ বিববেচনায় কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত ছাড়াও সেন্টমার্টিন, হিমছড়ি, দরিয়ানগর, ইনানী, সাফারী পার্ক, মেদাকচ্ছপিয়া ন্যাশনাল পার্ক ও মহেশখালীর আদিনাথে পর্যটকদের ঢল নামবে।
পর্যটক হয়রানি রোধে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত’র নজরদারী থাকবে বলে বলে জানান কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো: কামাল হোসেন। তিনি বলেন, আবাসিক হোটেল ও রেস্তোরাঁয় অতিরিক্ত টাকা ও ভেজাল খাবার পরিবেশন করলে ব্যবস্থা নেবেন এ আদালত।
পর্যটকদের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রায়হান কাজেমী বলেন, ভ্রমণে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ প্রস্তুত আছে।সৈকতের বালুচরে অত্যাধুনিক মোটরযানে টহলে থাকবেন ট্যুরিস্ট পুলিশ।এছাড়া কক্সবাজার সৈকতে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খুলে পর্যটকদের রাতদিন ২৪ ঘন্টা নিরাপত্তা বিধান করছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।
কক্সবাজার শহরের বিনোদন কেন্দ্র ও শপিংমলে পুলিশের বাড়তি নজরদারি থাকবে বলে জানান কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার ড. একেএম ইকবাল হোসেন। তিনি বলেন, শহরে চুরি-ছিনতাই বন্ধসহ পর্যটকদের নিরাপত্তায় পুলিশের একাধিক দল কাজ করবে।
Posted ৪:৪৮ অপরাহ্ণ | সোমবার, ২৩ এপ্রিল ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta