কক্সবাংলা ডটকম(১৫ মে) :: ভগবত গীতার ১১ নম্বর অনুচ্ছেদ থেকে নেওয়া ‘নভাঃ স্পর্শাম দীপথম্’ ভারতীয় বায়ুসেনার মূল মন্ত্র। যার অর্থ, গৌরবের সঙ্গে স্পর্শ করব আকাশ। যে দেশের বায়ুসেনার মূল মন্ত্র এতটা শক্তিশালী, সেই দেশকে টক্কর দেবে এমন সাধ্যি আছে কার? যে দেশের কাছে যত বেশি সামরিক সরঞ্জাম রয়েছে, সেই দেশের দিকে তাকানোর আগে দু’বার হলেও ভাববে শত্রুপক্ষ।
শত্রুপক্ষকে একেবারে তুড়ি মেড়ে ওড়াতে প্রস্তুত ভারত। আর তার ফল একেবারে হাতেনাতে পেয়েছে পাকিস্তান। কিন্তু আপনি কি জানেন কোন দেশের হাতে রয়েছে কত ফাইটার জেট? শক্তির দিক থেকে কত নম্বরে রয়েছে ভারত?
চলতি বছরে ভারতীয় বায়ুসেনার যত যুদ্ধবিমান রয়েছে, তার নিরিখে শীর্ষ ১০টি শক্তিশালী দেশের মধ্যে চতুর্থ স্থানে রয়েছে ভারত। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের যুদ্ধবিমানের সংখ্যা অনুযায়ী কে কোন স্থান রয়েছে এ বার তা প্রকাশ করল গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার (GFP)। যুদ্ধবিমানের দিক থেকে কোন দেশের পাল্লা সবথেকে ভারী সেই অনুযায়ী একটি তালিকা প্রকাশ করেছে GFP।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র – ১৩,০৪৩
রাশিয়া – ৪,২৯২
চিন – ৩,৩০৯
ভারত – ২,২২৯
দক্ষিণ কোরিয়া – ১,৫৯২
জাপান – ১,৪৪৩
পাকিস্তান – ১,৩৯৯
মিশর – ১,০৯৩
তুরস্ক – ১,০৮৩
ফ্রান্স – ৯৭৬
দেখা যাচ্ছে, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, ফ্রান্স এবং তুরস্কের মতো শক্তিশালী দেশ ও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের চেয়ে ভারতের স্থান অনেকটাই উপরে।
ভারতের শক্তিশালী যুদ্ধবিমানের তালিকায় রয়েছে, সুখোই এসইউ-৩০ এমকেআই, রাফাল, মিগ-২১, HAL তেজস, মিরাজ-২০০০, জাগুয়ার সমশের, HAL রুদ্র, মিগ-২৭।
ব্রিটেনের রয়্যাল এয়ার ফোর্সের একটি পরিপূরক বাহিনী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ভারতীয় বায়ুসেনা। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিশ্বের মধ্যে অন্যতম শক্তিশালী বিমানবাহিনী গড়ে তুলছে ভারত। বিভিন্ন সামরিক অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে ভারতীয় বায়ুসেনা।
এর আগে ভারতীয় বায়ুসেনা ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে (১৯৪৭-১৯৪৮), ১৯৬৫, ১৯৭১ এবং ১৯৯৯ (কারগিল যুদ্ধ) সালে। এর পরে সম্প্রতি ২০২৫ সালে হয় অপারেশন সিঁদুর। সব ক্ষেত্রেই ভারত জয়ী হয়ে পাকিস্তানকে ভালো করে নিজেদের ক্ষমতা বুঝিয়ে দিয়েছে। এ ছাড়াও ১৯৬২ সালে চিনের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর যুদ্ধের সময় (চিন-ভারত যুদ্ধ), ভারতীয় বায়ুসেনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। ১৯৮৪ সালে, ভারতীয় বায়ুসেনা সিয়াচেন হিমবাহ দখলেও সহায়তা করেছিল।
‘অপারেশন সিঁদুর’-এর কৌশলগত লক্ষ্যপূরণ করেছে ভারত। মাত্র চার দিনেই ভারত সুনির্দিষ্ট এক সামরিক অভিযান সফলভাবে শেষ করেছে। ‘অপারেশন সিঁদুর’ আপাতত স্থগিত রেখেছে ভারত। কিন্তু এই মিশনে ভারতীয় বিমান বাহিনীর ভূমিকা অপরিসীম। ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগামে ভারতের ২৬ জনের হত্যার পর অপারেশন সিঁদুর অভিযানে নামে ভারত। ৭ মে রাতে ভারত সুনির্দিষ্ট ভাবে একটি সামরিক অভিযান পরিচালনা করে।
এই অভিযানের মাধ্যমে ভারতীয় বায়ুসেনা পাক অধিকৃত কাশ্মীর এবং পাকিস্তানের বুকে ন’টি জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করেছে। এর মধ্যে জৈশ-ই-মহম্মদ এবং লস্কর-ই-তৈবার সদর দপ্তরও ছিল। জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংসের পাশাপাশি ভারতীয় বায়ু সেনা নিজের কর্তৃত্বকেও প্রতিষ্ঠিত করেছে। পাকিস্তানের একটা ড্রোনও ভারতের মাটি ছুঁতে পারেনি। সব মিলিয়ে বলাই যায়, ‘অপারেশন সিঁদুর’–এর মাধ্যমে কৌশলগত দিক থেকে ভারতের জয়লাভ হয়েছে।
Posted ৩:০১ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta