মোসলেহ উদ্দিন,উখিয়া(২৯ ফেব্রুয়ারী) :: দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত উখিয়ার ইনানীর নাম ডাক সারা বিশ^জুড়ে ছড়িয়ে পড়লেও কার্যত দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়নি। প্রতি বছরে ইনানী বীচ ইজারা দিয়ে উখিয়া উপজেলা প্রশাসন লাখলাখ টাকা আয় করলেও পর্যটন উন্নয়নে কানাকড়িও ব্যয় করেনি বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। উপরোন্তু সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে অপরাধী চক্রের আনাগোনা, বেপরোয়া চাল চলন পর্যটকদের মাঝে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ইনানী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সিদ্ধার্থ সাহা বলেন, ইনানী পর্যটনের মানোন্নয়ন ও আইন শৃঙ্খলা উন্নয়নে পুলিশ সার্বিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তথাপিও এক শ্রেণির টোকাই, ছিনতাইকারী চক্রের দৌরাত্ম থামানো যাচ্ছে না। স্কুল গামী মেয়েদের উত্যক্ত করতে দেখা যায় মর্মে বলেন, এব্যাপারে অভিভাবক, সচেতন মহল ও শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিবর্গদের স্বোচ্ছার হতে হবে। তা না হলে পর্যটন পরিবেশ ভেস্তে যাওয়ার আশংকা রয়েছে।
দেশের অন্যতম পর্যটন স্পট ইনানী সাগর কন্যা হিসেবে পরিচিত। সরকার ইনানী বীচকে উন্নয়নের লক্ষ্যে রেজু ব্রীজ থেকে মনখালী পর্যন্ত ভূ-সম্পত্তি বেচা কেনার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে। ইনানী বহুমুখী ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ছৈয়দ হোসেন অভিযোগ করে জানান, মহিলা পর্যটকদের চেঞ্জিং রুম, বাথরুম, কমনরুম, পার্কিং সহ প্রয়োজনীয় বিশেষ বিশেষ দৃশ্যমান স্থাপনাগুলোর অভাবে ইনানীর উপর থেকে পর্যটকদের আর্কষণ ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ইনানী ব্রীজ সংলগ্ন এলাকায় একটি মাশরুম মার্কেট তৈরির কথা ছিল। উক্ত মার্কেটটি বাস্তবায়নের জন্য তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহমদ শামীম আল রাজী বাস্তব সম্মত পদক্ষেপ গ্রহণ করেও শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়ন করতে পারেনি। যার ফলে রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পের মতো ঝুঁপড়ি বেঁেধ বেচা কেনা চলছে। পর্যটকদের চাহিদা পূরণ না হলেও ইনানী দেখার খায়েস মেটাতে গলা কাটা দাম দিয়ে চাহিদা পূরণ করছে।
ইনানীর বীচ ক্যাফে ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর বলেন, ইনানী থেকে যে অর্থ গুলো সরকারি ভাবে আয় হচ্ছে ওই অর্থ গুলো ইনানীর উন্নয়নে ব্যয় করলে ইনানী হতো দেশের বৃহত্তম পর্যটন নগরী। এ খাতে সরকার প্রচুর পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অপার সম্ভাবনা থাকার সত্ত্বেও প্রশাসন ইনানীকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। সবুজ অরণ্য পাহাড় ঘেরা ইনানী সী-বীচ যেন অপূর্ব সৌন্দর্য হাতছানি। লাল কাঁকড়া ও পাথর বেষ্টিত এ বিচটি পর্যটকদের কাছে খুবই আকর্ষণীয়। বিশেষ করে সাগরের নীল জল রাশি ও সারি সারি ঝাউবন এবং পাথরের সাথে ঢেউয়ের গর্জন এক অপূর্ব মিতালী পর্যটকদের আর্কষণ বাড়ায়।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, প্রতিদিন হাজার হাজার দেশি-বিদেশি পর্যটক ইনানী পাটুয়ারটেক সহ বিভিন্ন স্পটে ভ্রমণ করতে আসে। কিন্তু অপরিষ্কার অপরিচ্ছন্ন ও সুযোগ-সুবিধা না থাকায় পর্যটকরা হতাশ হয়ে ফিরে যেতে হয়। সিলেট থেকে ইনানী ভ্রমণে আসা শাহ জালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্সের শিক্ষার্থী কামাল উদ্দিন ও মোবিন সোহাগ জানান পর্যটকদের জন্য ওয়াশরুম বা চেঞ্জ রুম না থাকায় পর্যটকদের কে চরম বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। চট্টগ্রাম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাফাত ইবনে মামুন ও শরীফ মাহমুদ বলেন সম্ভাবনাময় ইনানী বিচে অবকাঠামো উন্নয়নসহ সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হলে পর্যটন খাত থেকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় করা সম্ভব হতো।
এ ব্যায়পারে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বীচ ম্যানেজম্যান্ট কমিটির সভাপতি মোঃ নিকারুজ্জামান চৌধুরী জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশের একাধিক টিম সহ ইনানী পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা সবসময় টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও ইনানী বীচ কে আধুনিক ও পর্যটন বান্ধব করতে নানা পরিকল্পনা হাতে নিয়ে প্রাক্কলন তৈরী পূর্বক তা পর্যটন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
Posted ৫:২১ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০
coxbangla.com | Chanchal Chy