শনিবার ২৩শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শনিবার ২৩শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

অস্থির ভোগ্যপণ্যের বাজার : তৎপর সিন্ডিকেট

শনিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩
106 ভিউ
অস্থির ভোগ্যপণ্যের বাজার : তৎপর সিন্ডিকেট

কক্সবাংলা ডটকম(১৬ সেপ্টেম্বর) :: ভোগ্যপণ্যের বাজার অনেকদিন ধরেই অস্থির। চাল-ডাল, ভোজ্যতেল, পেঁয়াজ, চিনি থেকে শুরু করে সবজি, মাছ-মাংস সবকিছুর দাম সীমিত আয়ের মানুষের নাগালের বাইরে। একেক সময় একেক পণ্যে পড়ে সিন্ডিকেটের লোকের থাবা। সরবরাহে কোনো ধরনের জটিলতা, আমদানি সংকট বা জোগানের সমস্যা না থাকা সত্ত্বেও দিন দিন বেড়েই চলছে নিত্যপণ্যের দাম। নিয়মিত বাজার তদারকির অভাবে সিন্ডিকেটভুক্ত ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ছেন ক্রেতারা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নিত্যপ্রয়োজনীয় ৪ পণ্যের দাম ঠিক করে দিলেও বাজারে চলছে এখনো সেই বাড়তি দামই।

এদিকে সরকার বাজারের লাগাম টানতে বৃহস্পতিবার তিন পণ্য-আলু, পেঁয়াজ ও ডিমের মূল্য নির্ধারণ করে দিলেও রাজধানীসহ সারা দেশে নির্ধারিত মূল্য কার্যকর করা সম্ভব হয়নি। তবে সিদ্ধান্ত কার্যকরে সর্বাত্মক শক্তি প্রয়োগের কথাও জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে,প্রতি কেজি আলুর দাম খুচরা পর্যারে ৩৫-৩৬ টাকা নির্ধারণ করা হলেও বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকা। পেঁয়াজের দাম খুচরায় প্রতি কেজি ৬৪-৬৫ টাকা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকায়। আর প্রতি পিস ডিম ১২ টাকা বেঁধে দেওয়া হলেও বিক্রি হচ্ছে ১৩-১৪ টাকা। অর্থাৎ সরকারের আদেশের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ভোক্তার পকেট কাটছেন ব্যবসায়ীরা।

বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন-অসাধু ব্যবসায়ীরা ৩০ টাকা কেজি আলু ২০ টাকা দাম বাড়িয়ে ৫০ টাকা করার পর সরকার ১৫ টাকা কমিয়েছে। আর প্রতি পিস ডিমে অতি মুনাফা রোধে ১২ টাকা নির্ধারণ করেছে। কিন্তু বাজারে কার্যকর নেই। সাম্প্রতিক সময় একাধিকবার একাধিক পণ্যের দাম সরকার নির্ধারণ করে দিলেও তা কার্যকর করা সম্ভব হয়নি।

সরকারের বেঁধে দেওয়া দাম অমান্য করার চিত্র খোদ সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) দৈনিক বাজার মূল্য তালিকা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে। টিসিবি জানায়-শুক্রবার খুচরা বাজারে প্রতি কেজি আলু ৪৩ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ টাকায় বিক্রি হয়। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৭০-৮০ টাক। প্রতি হালি ডিম সর্বোচ্চ ৫৩ টাকায় বিক্রি হয়। অর্থাৎ প্রতি পিসের দাম হয় ১৩ টাকা ২৫ পয়সা।

জানতে চাইলে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়শন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ ও অসাধুদের অতি মুনাফা রোধে সরকার একাধিকবার একাধিক পণ্যের দাম নির্ধারণ করেছে। কিন্তু সেই দাম কার্যকর করা যায়নি। ক্রেতার বাড়তি দরেই পণ্য কিনতে হয়েছে। এবারও একই চিত্র দেখা যাচ্ছে। যদিও দাম নির্ধারণের মাত্র একদিন অতিবাহিত হয়েছে। তাই আরও কয়েকদিন দেখলে বোঝা যাবে সরকার দাম কার্যকর করতে পেরেছে কিনা।

তিনি বলেন, ‘অসাধুদের অনেক ছাড় দেওয়া হয়েছে। এবার আর ছাড় দেওয়া ঠিক হবে না। আলু নিয়ে কারা কারসাজি করছে সরকারের কাছে তথ্য আছে। ডিমের দাম বাড়িয়ে কারা ভোক্তার পকেট কেটেছে তারও তথ্য সংশ্লিষ্টদের কাছে আছে। পেঁয়াজ নিয়ে কারা অসাধু পন্থায় অতি মুনাফা করছে সে তথ্যও সরকারের কাছে আছে। তাই ভোক্তার স্বার্থে অসাধু ব্যবসায়ীদের কঠোরভাবে দমন করতে হবে।’

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বৃহস্পতিবার নিত্যপ্রয়োজনীয় কৃষিপণ্যের উৎপাদন, চাহিদা ও মূল্য পরিস্থিতি পর্যালোচনা সভা হয়। সভা শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী আলু, পেঁয়াজ ও ডিমের দাম নির্ধারণের কথা জানান। তিনি বলেন, কোল্ডস্টোরেজ পর্যায়ে প্রতি কেজি আলু ২৬-২৭ টাকায় বিক্রি করতে হবে। খুচরা পর্যায়ে বিক্রি করতে হবে ৩৫-৩৬ টাকা। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ পাইকারি পর্যায়ে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৩-৫৪ টাকা। আর খুচরা পর্যায়ে ৬৪-৬৫ টাকা। এছাড়া ডিমের দাম নির্ধারণ উৎপাদক পর্যায়ে ১০ টাকা ৫০ পয়সা এবং খুচরা পর্যায়ে সর্বোচ্চ ১২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কোল্ড স্টোরেজে খোঁজ নিয়ে জানা যায়- সেখানে প্রতি কেজি আলু ৩৪-৩৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রাজধানীর পাইকারি আড়তে বিক্রি হচ্ছে ৩৯-৪০ টাকা। আর খুচরা বাজারে ভোক্তার কাছে বিক্রি করা হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকা। পাশাপাশি প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ পাইকারি আড়তে বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা ও খুচরা বাজারে ৮০-৯০ টাকা। আর প্রতি পিস ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩-১৪ টাকা।

রাজধানীর নয়াবাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা হুসনে আরা বেগম বলেন, ‘সরকারের মন্ত্রীরা এসি রুমে বসে পণ্যের দাম নির্ধারণ করেন। বিভিন্ন মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তা প্রচার করা হয়। কিন্তু বাজারে এর কোনো প্রভাব পড়ে না। যারা বিষয়টি দেখবে তারাও টিনের চশমা পরে বসে আছেন। আর আমরা ভোক্তারা অসহায়ের মতো বাড়তি টাকা ব্যয় করতে করতে শেষ হয়ে যাচ্ছি।’

একই বাজারের বিক্রেতা শাহ আমানত আলী বলেন, সরকার পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দায়িত্ব শেষ করে বসে থাকে। পাইকারি বাজারে দাম না কমালে আমরা খুচরা বিক্রেতারা কি করে দাম কমিয়ে বিক্রি করব। কিন্তু দেখা যায়, যারা দাম বাড়ায় তাদের না ধরে তদারকি সংস্থা আমাদের ধরে। জরিমানা করে। এছাড়া ক্রেতারাও আমাদের গালাগাল করেন। সব মিলে আমরাও অসহায়।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, বীজ আলু বাদ দিলে কোল্ড স্টোরেজে খাবারের আলু আছে প্রায় ১২ লাখ টন; যা দিয়ে ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। কোল্ড স্টোরেজে যারা আলু সংরক্ষণ করেন তারা দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছেন। মাঠ থেকে নিয়ে পরিবহণ খরচ ও কোল্ড স্টোরেজ ভাড়া মিলে এক কেজি আলুর খরচ হয় ১৮-২০ টাকা। সংরক্ষণকারীরা ৬-৭ টাকা লাভ করে আলু বিক্রি করলে কোল্ড স্টোরেজ থেকে ২৬-২৭ টাকায় বিক্রি করতে পারেন। সেটাই উচিত। কিন্তু কোল্ড স্টোরেজে প্রতি কেজি আলু ৩৪-৩৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এটা ২৭ টাকার বেশি হওয়া উচিত নয়। আর বিভিন্ন হাত ঘুরে ভোক্তা পর্যায়ে ৩৬ টাকার বেশি হওয়ার কথা নয়। কিন্তু বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা। কারা দাম বাড়াচ্ছে তা সরকারও জানে। ব্যবস্থা নিলে মূল্য কমে আসবে।

শ্যাম বাজারের পেঁয়াজের পাইকারি ব্যবসায়ী শংকর চন্দ্র দাস বলেন, আমদানিকারকরা পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণ করেন। তারা দাম বাড়ালে সারা দেশে বেড়ে যায়। আর কমালে দাম কমে। তাই সেখানে অভিযান পরিচালনা করা দরকার।

তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতির একটি সূত্র বলছে, কারা ডিমের বাজার অস্থির করেছে তা সরকার জানে। এসএমএসের মাধ্যমে কারা বাজার নিয়ন্ত্রণ করে তা গোয়েন্দা সংস্থাও জানে। তাদের রুখতে পারলে সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে ডিম বিক্রি করা যাবে।

এ ব্যাপারে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, তিনটি কৃষিপণ্যের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। কৃষি এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে এই দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর থেকে শুরু করে জেলা প্রশাসকরা (ডিসি) বাজার মনিটরিং করবে। মূল্য বাস্তবায়নে সর্বাত্মক শক্তি নিয়ে বাজারের দাম নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হবে। তিনি বলেন, দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে সবকিছু বিবেচনায় নিয়েই করা হয়েছে। আশা করছি এটা আমরা বাস্তবায়ন করতে পারব। শুধু মূল্য ঘোষণা হলো। প্রচার হতে একটু সময় লাগবে। আশা করছি এক-দু দিনের মধ্যে বেঁধে দেওয়া দাম কার্যকর হবে।

বাজার তদারকি সংস্থা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুল জব্বার মন্ডল বলেন, পণ্যের দাম কার্যকরে অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নির্দেশে রাজধানীসহ সারা দেশে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। শনিবার  মহাপরিচালক এইচএম সফিকুজ্জামান মুন্সীগঞ্জ জেলার বিভিন্ন আলুর হিমাগার পরিদর্শন করবেন। সব মিলে মূল্য কার্যকর করতে কাজ চলমান আছে। আশা করছি সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে পণ্য বিক্রি হবে।

চট্টগ্রামের বাজারেও সব ভোগ্যপণ্যের দামই চড়া

নগরীর রেয়াজউদ্দিন ও চকবাজারসহ বেশ কয়েকটি কাঁচাবাজার ঘুরে শুক্রবার দেখা যায়, এক সপ্তাহের ব্যবধানে আদা, রসুন, হলুদ ধনিয়াসহ প্রায় সব মসলাজাত পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। তাছাড়া সমুদ্রের মাছ ধরা স্বাভাবিক এবং বাজারে পর্যাপ্ত মাছ থাকার পরও মাছের দাম বেড়েছে। কেজিপ্রতি ২০০ টাকার নিচে কোনো ধরনের মাছ মিলছে না। ব্রয়লার মুরগির বাজারও লাগামহীন। ঊর্ধ্বমুখী শাক-সবজি, ডিম ও মাংসসহ প্রায় প্রতিটি পণ্যের দাম। এতে বাজারে এসে বেশ বিপাকে পড়ছেন ক্রেতারা। অন্যদিকে বাজার

নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার আলুর দাম নির্ধারণ করে দিলেও বাজারে তা কার্যকর হয়নি। অনেক ব্যবসায়ী, ক্রেতা ও বিক্রেতা নির্ধারিত দামের বিষয়ে জানেন না। আবার আলুর পর্যাপ্ত মজুত থাকার পরও দাম নেয়া হচ্ছে বেশি। এ অবস্থায় বাজার নিয়ন্ত্রণে অভিযানে নেমেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। গতকাল বেলা ১১টায় নগরীর রেয়াজুদ্দিন বাজারে অভিযান চালানো করা হয়। এ সময় মূল্যতালিকা ও ক্রয় রশিদ দেখাতে না পারায় তিনটি আড়তের মালিককে ১২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের উপপরিচালক মোহাম্মদ ফয়েজুল্লাহ জানান, অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে এ অভিযান চলমান থাকবে।

লিয়াকত হোসেন নামে জামালখান এলাকার বাসিন্দা এক ক্রেতা বলেন, বাজার তদারকিতে প্রশাসনের দুর্বলতা রয়েছে। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একেকদিন একেকটি পণ্যের দাম বাড়াচ্ছে সিন্ডিকেটভুক্ত ব্যবসায়ীরা। এসব অসাধু ব্যবসায়ী প্রতিরোধ করতে হলে তদারকি প্রতিষ্ঠানগুলোর বড় অভিযানের প্রয়োজন রয়েছে। তিনি বলেন, নিত্যপণ্যের বাজার সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। ১৪০ টাকার মুরগি ১৮০ টাকা, ১১০ টাকার ডিম ১৫০ টাকা, মাছে তো হাতই দেয়া যায় না। বাজার এখন যার যেমন ইচ্ছা বিক্রি করছে ব্যবসায়ীরা।

মসলার বাজার ঘুরে দেখা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানে বেশি বেড়েছে আদা, রসুন, হলুদ ও পেঁয়াজের দাম। আমদানি করা আদা, রসুন, হলুদ বিক্রি হচ্ছে মানভেদে কেজিপ্রতি ১৯০ থেকে ২২০ টাকা, যেসব পণ্য গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা। সেই হিসাবে সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি বেড়েছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। আর এসব পণ্যের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পেঁয়াজের দামও। গত সপ্তাহে যে মানের পেঁয়াজ কেজিপ্রতি বিক্রি হয়েছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়, তা ৬৫ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খুচরা দোকানে প্রতি কেজি আলু ৫০ টাকা, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে বাজারে ঊর্ধ্বমুখী সব ধরনের মাছের দাম। নি¤œআয়ের মানুষের ভরসা চাষের পাঙাশের দামও চড়া। এ মাছ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা। আর ইলিশ, রূপচাঁদা, লাক্ষা, কোরাল, মাইট্টার মতো সমুদ্রের মাছ এখন ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। বাজারে আকারভেদে প্রতি কেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকায়। তাছাড়া প্রতি কেজি কোরাল, আইড়, ছোট লাক্ষা মাছ ৬৫০ থেকে ৭৫০ টাকায়। আর প্রতি কেজি রুই ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা, কাতলা ৩৮০ থেকে ৪৩০ টাকা, চিংড়ি সাইজভেদে ৬০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা ও তেলাপিয়া ২৩০ থেকে ২৫০ টাকা। প্রতি কেজি পাবদা ৫০০, রূপচাঁদা ৮শ, লইট্টা ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে মাংসের বাজারও চড়া। প্রশাসনের তদারকিতে কিছুদিন কমতির দিকে থাকলেও গতকাল বাজারে আবারো ডাবল সেঞ্চুরি ছুঁই ছুঁই ব্রয়লার মুরগির বাজার। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে সোনালি মুরগির দামও। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজিতে ব্রয়লার মুরগি আকারভেদে দাম বেড়েছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৮৫ টাকায়, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকায়। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ২৯০ থেকে ৩৩০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ২৮৫ থেকে ৩০০ টাকা। বিক্রেতারা বলছেন, উৎপাদন পর্যায়ে মুরগির কিছুটা সংকট থাকায় বাজারে হঠাৎ করে কমে গেছে মুরগির সরবরাহ; এ কারণে গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহ দাম কিছুটা বাড়তি।

এদিকে গরু ও খাসির মাংসের দামও ঊর্ধ্বমুখী। বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৯৫০ টাকা। আর প্রতি কেজি খাসির মাংস ১ হাজার ৫০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা। বাজারে প্রতি ডজন লাল ডিম ১৫৫ টাকা ও সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। এছাড়া প্রতি ডজন হাঁসের ডিম ২১০ টাকার উপরে। অন্যদিকে শাক-সবজির বাজার ঘুরে দেখা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়ে গেছে সব ধরনের শাক-সবজির। বাজারে কোনো ধরনের ঘাটতি দেখা না গেলেও ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরবরাহ ঘাটতি ও সংকটের কারণে সবজির দাম বাড়ছে। বাজারে প্রতি কেজি বেগুন ৭০ থেকে ১০০ টাকা, বরবটি ৯০ থেকে ১১০ টাকা, পটোল ৬০ টাকা, করলা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, টমেটো ১৬০ টাকা, ভারতীয় টমেটো ২৮০ টাকা আর ঢেঁড়স ৬০ টাকা। এছাড়া প্রতি আঁটি পুঁইশাক ২০ থেকে ৩০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১২০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০, বাঁধাকপি ৪০ টাকা, ফুলকপি ৮০ থেকে ৯০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, কাঁকরোল ৬৫ টাকা, আলু ৪৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

শরীফ স্টোরের মালিক মো. শরীফ উদ্দিন বলেন, সরকার সবেমাত্র পণ্যগুলোর দাম নির্ধারণ করে দিয়েছেন। ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে নতুন দরে পণ্য বিক্রি করা সম্ভব হয় না। কারণ আমাদের কাছে থাকা পণ্যগুলো আগের চালানের। পুরনো চালানের পণ্য নতুন দরে বিক্রি করলে আমাদের লোকসান গুনতে হবে। তাই নতুন দরের পণ্য পেতে হলে নতুন চালানের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। তবে এক ক্রেতা বলেন, ব্যবসায়ীরা হলো সবচেয়ে বড় প্রতারক। তারা দাম বাড়ানোর ঘোষণা এলে পুরনো চালানের পণ্য নতুন দরে বিক্রি করে। দাম কমানোর সিদ্ধান্ত এলে তাদের অজুহাতের শেষ নেই। নতুন দরের কোনো সুফল সাধারণ মানুষ পাচ্ছে না।
কনজিউমার অ্যাসোশিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলেন, বাজার মনিটরিংব্যবস্থা কঠোর করতে হবে। অপরাধ প্রমাণিত হলে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা জরুরি।

106 ভিউ

Posted ২:৩৬ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com