কক্সবাংলা ডটকম(২৮ ডিসেম্বর) :: ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
টার্মিনালের নির্মাণ কাজে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৮৭-৯ সিরিজের নতুন দু’টি ড্রিমলাইনার- ‘সোনার তরী’ ও ‘অচিন পাখি’ এবং এয়ারলাইন্সের মোবাইল অ্যাপও উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রবাসীদের অর্থে আমাদের রিজার্ভ নিশ্চিত হয়, তারা যখন একটি কর্মস্থল থেকে ফেরেন, অনেক সময় তাদের নানাভাবে হয়রানি করা হয়। তবে, এখন অনেকটা কমে গেছে। তারপরও আমি বলবো, আমাদের দেশের যারা বিদেশে যান, তাদের কাছ থেকে থেকে বিরাট অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রাও অর্জন করি। তাদের সুবিধাগুলো দেখতে হবে। তাদের যেন কোনোরকম হয়রানি এখানে করা না হয়।’
সরকার প্রধান বলেন, ‘একটা কথা মনে রাখবেন। আসলে আমার তো আর কোনও কাজ নেই। সারাদিন আমি দেশের কাজই করি। কাজেই কোথায় কী হয় না হয়, টুকটাক খবরগুলো নেওয়ার চেষ্টা করি। কাজেই অনিয়ম বা ব্যত্যয় ঘটাতে গেলে সঙ্গে সঙ্গে আমার কাছে কিন্তু খবরটা চলে আসে। এটা সবাইকে মনে রাখতে হবে।’
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণে ২১ হাজার ৩শ’ কোটি টাকা ব্যয় হবে। এর মধ্যে সরকারি কোষাগার থেকে পাওয়া যাবে পাঁচ হাজার কোটি টাকা এবং বাকি অর্থ জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) থেকে পাওয়া যাবে। জাপানের মিতসুবিশি ও ফুজিতা এবং কোরিয়ার স্যামসাং একটি কনসোর্টিয়ামের অধীন একটি কনসোর্টিয়াম এই নির্মাণ কাজ করবে।
নতুন আন্তর্জাতিক যাত্রী টার্মিনালটি হবে ২২ দশমিক ৫ লাখ বর্গফুট। বর্তমানে দুটি টার্মিনালে ১০ লাখ বর্গফুট স্পেস রয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বিমানবন্দরের বর্তমান যাত্রী ধারণ ক্ষমতা ৮০ লাখ থেকে বেড়ে ২ কোটি হবে এবং কার্গোর ধারণ ক্ষমতা বর্তমান দুই লাখ টন থেকে বেড়ে পাঁচ লাখ টন হবে।
এদিকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে চতুর্থ ড্রিমলাইনার ’রাজহংস’ উদ্বোধনের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিমানের জন্য আরও নতুন দুটি ড্রিমলাইনার কেনার ঘোষণা দেন। মূলত প্রধানমন্ত্রীর আগ্রহেই এ দুটি উড়োজাহাজ কিনেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। প্রায় ৪০টি নামের মধ্য থেকে দুটি নাম পছন্দ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একটির নাম ‘সোনার তরী’, অন্যটি ‘অচিন পাখি’।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজের সংখ্যা দাঁড়ালো ছয়টিতে।
২০১৮ সালে বাংলাদেশ বিমানের বহরে ড্রিমলাইনারের ‘আকাশবীণা’ ও ‘হংসবলাকা’ এবং চলতি বছরে যুক্ত হয় ‘গাঙচিল’ ও ’রাজহংস’।
বিমানের সবগুলো ড্রিমলাইনারের নাম-ই দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তির উড়োজাহাজ ড্রিমলাইনার একটানা ১৬ ঘণ্টার বেশি উড়তে পারে। অন্য উড়োজাহাজের চেয়ে এর জ্বালানি খরচও ২০ শতাংশ কম। নতুন দুটিসহ বিমানের বহরে বর্তমানে উড়োজাহাজ রয়েছে ১৮টি। এর মধ্যে নিজস্ব উড়োজাহাজের সংখ্যা ১২। বাকি ৬টি লিজে আনা। নিজস্ব ১২টি উড়োজাহাজের সবই বোয়িং কোম্পানি থেকে কেনা। এর মধ্যে ছয়টি ড্রিমলাইনার ৭৮৭-৮, চারটি ৭৭৭-৩০০ ইআর ও দুটি ৭৩৭-৮০০।
এছাড়া কানাডা থেকে কেনা তিনটি ড্যাশ-৮ আগামী বছর দেশে আসছে।
Posted ১১:৩০ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৯
coxbangla.com | Chanchal Chy