কক্সবাংলা ডটকম(২১ জুন) :: নতুন করে সম্ভাব্য বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সংশ্লিষ্ট সকলকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আবহাওয়ার পূর্বাভাসে মনে হচ্ছে আবারও বন্যা হতে পারে।
সোমবার মন্ত্রিসভা বৈঠকের শুরুতে তিনি বলেন, সিলেটে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির ক্রমোন্নতিতে সন্তুষ্ট না হয়ে দেশে নতুন করে সম্ভাব্য আরও বন্যা মোকাবেলায় সংশ্লিষ্ট সকলকে প্রস্তুত থাকতে হবে। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এক ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার কথা সাংবাদিকদের জানান।
তিনি বলেন, নির্দেশনা দিয়ে দেয়া হয়েছে আমরা কেউ যেন সন্তুষ্ট না থাকি। পানি এসে দ্রুত চলে গেছে বলে এটা মনে করার কারণ নেই যে, পানি আর আসবে না। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আবহাওয়ার পূর্বাভাস যেমন দেখছি, তাতে একেবারে অসম্ভব কিছু না যে, পরে আবার এ রকম বন্যা হতে পারে।
আসামে ম্যাসিভ বন্যা হয়েছে, কিন্তু অসমের পানি ওইভাবে আসেনি, যেভাবে মেঘালয়ের পানি আসছে। সিলেট ও সুনামগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলার জেলা প্রশাসকদের বলে দেয়া হয়েছে। কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসকদেরও বলা হয়েছে, অসমের পানি এলে তারা যেন প্রস্তুত থাকেন।
বন্যাকবলিতদের পাশে দাঁড়াতে ও তাদের প্রতি সহমর্মিতা জানাতে প্রধানমন্ত্রী সিলেট সফরে যাচ্ছেন জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বন্যার মতো এ ভয়াবহ দুর্যোগকালীন নির্দেশনা মোতাবেক সবার ছুটি বাতিল করা হয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে সবাইকে একসঙ্গে বসে বন্যা মোকাবেলায় কর্মপরিকল্পনা ঠিক করতে বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, একই সঙ্গে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত থাকতেও বলা হয়েছে। বিশেষত, কৃষিমন্ত্রীকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, এর পর বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে যেন ভাসমান বীজতলা করার প্রস্তুতি নেয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, আমাদের এখানে যে পানি এসেছে, সেটা মেঘালয় দিয়ে এসেছে। মেঘালয় দিয়ে আসার কারণে একটা স্পেসিফিক জোনে পানি বেশি ছিল। অসম ও ত্রিপুরায়ও কিছু বৃষ্টি হয়েছে, কিন্তু সেটার ইম্প্যাক্ট ঠিক আমাদের এখানে সেভাবে পড়েনি।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এবার বন্যায় যেভাবে পানি এসেছে, গত ৫০-৬০ বছরের মধ্যে তা হয়নি। যে পানি এসেছে, সেটা সামলানো কঠিন। পানি এত দ্রুত এসেছে যে, কাউকে প্রস্তুত হওয়ার মতো সুযোগও দেয়নি। আমাদের সৌভাগ্য যে, শুরু থেকে আমরা সমন্বিতভাবে কাজ করায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়তে হয়নি।
তিনি বলেন, চারপাশে দেয়াল তৈরি করে সুনামগঞ্জ সদরের খাদ্যগুদাম রক্ষা করা হয়েছে। আর একটা গুদামে সার ছিল, সেটাও আমরা রক্ষা করতে পেরেছি।
খন্দকার আনেয়ারুল ইসলাম বলেন, সিলেটের বন্যায় সবচেয়ে প্রশংসিত বিষয়, সেখানকার মানুষের ধৈর্য। আমি বহু বন্যা হ্যান্ডেল করেছি। সিলেটে মানুষ ধৈর্যের চূড়ান্ত পরীক্ষা দিচ্ছে, মানুষ কোথাও ক্ষুব্ধ হয়নি।
তিনি জানান, সিদ্ধান্ত হয়েছিল প্রয়োজনে রাস্তা কেটে বন্যার পানি সরে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়ার। কিন্তু দেখা গেছে, রাস্তার ৫-৬ ফুট ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এ অবস্থায় রাস্তা কাটার মতো অবস্থাও ছিল না।
