কক্সবাংলা ডটকম(১১ সেপ্টেম্বর) :: দীর্ঘদিন ধরেই দেশের শেয়ারবাজার ধুঁকছিল। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকার বদলের পর সাময়িক সময়ের জন্য চাঙ্গা হয়ে উঠেছিল শেয়ারবাজার।
কিন্তু কদিন যেতে না যেতেই পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন নিয়ে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও স্টক এক্সচেঞ্জের অংশীদারদের মধ্যে সংকট ঘনীভূত হতে থাকে।
সরকার সংস্কারে উদ্যোগী হলেও বিএসইসির নীতির বিষয়ে অস্পষ্টতা থাকায় শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে চরম আস্থাহীনতা দেখা দিয়েছে।
গত ৮ আগস্ট দায়িত্ব নেওয়ার পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার অর্থ ও শেয়ারবাজারসহ সব খাতেই সংস্কারে হাত দেয়।
এর অংশ হিসেবে সরকার বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনেও (বিএসইসি) সংস্কার কার্যক্রম শুরু করে।
গত ১৮ জুলাই সাবেক ব্যাংকার খোন্দকার রাশেদ মাকসুদকে কমিশনের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেয়। একই সঙ্গে নতুন করে আরও দুই কমিশনার নিয়োগ দেওয়া হয়।
চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন।
কিন্তু এমন উদ্যোগে বিনিয়োগকারীরা পুরোপুরি আস্থাশীল হতে পারছেন না বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
শেয়ারবাজার বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার ঘাটতি রয়েছে। রয়েছে ভালো কোম্পানির অভাব।
সেই সঙ্গে শেয়ারের বিপরীতে দেওয়া ঋণ সুবিধা (মার্জিন ঋণ) বাজারের জন্য গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে থেকে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে বাজার সংশ্লিষ্টদের মতামত ও পরামর্শ আমলে নিয়ে বিএসইসির কাজ করা উচিত।
এ ছাড়া আস্থা ফেরাতে বিএসইসির নীতি-অবস্থা কী হবে এবং কী লক্ষ্যে কাজ করবে-তা স্পষ্ট করতে হবে।
ডিএসইর সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ডিবিএর সাবেক সভাপতি আহমেদ রশিদ লালী বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর বাজার ৫ থেকে ৬ দিন ভালো ছিল।
এরপর সরকার বিএসইসির সংস্কার কার্যক্রম শুরু করে। এর অংশ হিসেবে নতুন চেয়ারম্যান ও কমিশনার নিয়োগ দেন। তবে নতুন কমিশন খুব তাড়াহুড়া করে কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেন।
এর মধ্যে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেয়। পরে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে নতুন পরিচালক নিয়োগ দেন।
পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও স্টক এক্সচেঞ্জের অংশীদারদের মধ্যে। এ ছাড়া তদন্ত কমিটি গঠন নিয়েও সমালোচনা হয়।
এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার সংকট তৈরি হয়। তিনি বলেন, বাজারে আস্থা ফেরাতে ধীরস্থিরভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
এ ছাড়া ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ নিয়ে তৈরি হওয়া বিতর্ক দ্রুত নিরসন করা দরকার।
প্রাইম ব্যাংক সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, কমিশনে আসা নতুন টিমের উচিত স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে এগিয়ে যাওয়া।
কমিশনের নীতি বিষয়ে জনগণের কাছে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া প্রয়োজন।
দায়িত্ব নেওয়ার পর বিএসইসির চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ জানান, আমাদের প্রথম কাজ হলো মার্কেটে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা। গত ১৪ বছর ধরে চলা অনিয়মে আমরা অনেক পিছিয়ে গেছি।
এ পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে ভালোই সময় লাগবে।
তবে আমরা যদি ফোকাসড থাকি, সবাই একসঙ্গে কাজ করি, তবে আশা করা যায় আমরা এ সমস্যা তাড়াতাড়ি কাটিয়ে উঠব।
বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়াতে হলে বাজারের স্বচ্ছতা আরও বাড়াতে হবে। স্বচ্ছতা বাড়লে বাজারে কারসাজিকারীরা আর কোনো প্রভাব ফেলতে পারবে না।
Posted ১:২১ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta