মোঃ রেজাউল করিম, ঈদগাঁও(৭ সেপ্টেম্বর) :: মিয়ানমারে নির্বিচারে মুসলিম গণহত্যার প্রতিবাদে ঈদগাঁওতে বিশাল মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৭ সেপ্টেম্বর বিকেলে বাজারের শাপলা চত্বর তথা হোটেল নিউ স্টার চত্বরে সম্মিলিত নাগরিক সমাজ এ কর্মসূচীর আয়োজন করে।
বাংলাদেশ মানবাধিকার কাউন্সিল ঈদগাঁও সাংগঠনিক উপজেলা শাখার ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে উপস্থিত হাজারো জনতার সম্মুখে বক্তব্য রাখেন ঈদগাঁও বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ খতিব হাফেজ মাওলানা জহিরুল ইসলাম।
মানবাধিকার কাউন্সিল ঈদগাঁও সাংগঠনিক উপজেলা শাখার সভাপতি সিনিয়র সাংবাদিক মো. রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জেলা মানবাধিকার কাউন্সিলের সহ ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মাষ্টার সরওয়ার কামাল, বিশিষ্ট আলেমেদ্বীন হাফেজ আবদুর রহিম ফারুকী, মানবাধিকার কাউন্সিল ঈদগাঁও সাংগঠনিক উপজেলা শাখা সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল আমির চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক সাংবাদিক মিছবাহ উদ্দীন, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা দেলোয়ার হোছাইন, সহ-তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক শহিদুল হক, সহ-প্রচার সম্পাদক নাছির উদ্দীন পিন্টু প্রমুখ। কর্মসূচীর প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করে বক্তব্য দেন ফ্রেন্ডস এ ওয়ান এসোসিয়েশন সভাপতি জসিম উদ্দীন।
উপস্থিত ছিলেন মানবাধিকার ট্রাস্ট জেলা শাখার সহ-সভাপতি নুরুল হুদা, সহ-সভাপতি সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন, যুগ্ম সম্পাদক ফরিদুল ইসলাম প্রকাশ দুবাই ফরিদ, জেলা মানবাধিকার কাউন্সিল মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা রাবেয়া খানম, সাংগঠনিক উপজেলার উপদেষ্টা আমির সুলতান, কাজী নুরুল আলম, সহ-সভাপতি জাফর আলম, অধ্যাপক খোরশেদ আলম, বশির আহমদ, যুগ্ম সম্পাদক মো. এরশাদ, অর্থ সম্পাদক আবু তৈয়ব, শ্রম ও কৃষি সম্পাদক মোজাম্মেল হক, সহ-শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক বেলাল উদ্দীন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আমান উল্লাহ আমান, সমাজ সেবক ইকবাল হাসানসহ রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, সামাজিক ও শ্রমিক সংগঠন নেতৃবৃন্দ, যুব প্রতিনিধি, ছাত্র সংগঠন সমূহের নেতৃবৃন্দ, পেশাজীবী ব্যক্তিবর্গ, বাজার ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, শিক্ষক, ও ছাত্র নানা শ্রেণিপেশার লোকজন।
বক্তারা রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানে কতিপয় দাবী উত্থাপন করেন। এর মধ্যে রয়েছে কফি আনান কমিশন রিপোর্টের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন, রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব প্রদান, তাদের চলাচলে বিধি নিষেধ প্রত্যাহার, স্বাভাবিক জীবন যাপনের গ্যারান্টি দান। এসব দাবী বাস্তবায়ন না হলে দেশটির বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অবরোধ আরোপ।
বক্তারা বলেন, গণতান্ত্রিক সংগ্রামের জন্য বিশে^র সর্বোচ্চ পুরস্কার নোবেল বিজয়ী অন সাং সুচীর দেশে যেভাবে মানবতা লঙ্ঘিত হচ্ছে তা ভাষায় প্রকাশ করা যাচ্ছে না। প্রতিদিন হাজার হাজার রোহিঙ্গা দূর্গম পাহাড়ী পথ পাড়ী দিয়ে বাংলাদেশসহ সীমান্তবর্তী দেশসমূহে অনুপ্রবেশ করছে। মিয়ানমার নিরাপত্তা বাহিনীর অত্যাচার, নির্যাতন, দমন পীড়ন, গণহত্যা সর্বকালের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে।
দেশটির প্রধানমন্ত্রীর পদমর্যাদা সম্পন্ন রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টার নির্দেশে সেদেশের সরকারী বাহিনী গত ২৫ আগষ্ট থেকে মধ্য যুগীয় কায়দায় গোটা রাখাইন রাজ্যে বর্বরতা চালাচ্ছে। তাদের দমন পীড়ন থেকে রেহাই পাচ্ছে না নারী, শিশু, বৃদ্ধা।
বক্তারা এ বৈশি^ক সমস্যা সমাধানে বিশে^র প্রভাবশালী রাষ্ট্রসমূহ ও ক্ষমতাধর ফোরাম তথা জাতিসংঘ ও ওআইসি, আরব লীগ, আসিয়ান, ন্যাটোসহ প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোকে সংলাপের মাধ্যমে এগিয়ে আসার আহবান জানান। তারা ইসরাঈল, ভারত ও চীন কর্তৃক মিয়ানমারের এ মানবতা বিরোধী অভিযান সমর্থন করায় সেসব দেশের তীব্র নিন্দা জানান।
বক্তারা উল্লেখ করেন, ইতিমধ্যে ৩ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। কিন্তু তাদের ভার সইবার মত এত ক্ষমতা এদেশের নেই। তাই শীঘ্রই এসব সমস্যার সমাধানে এবং মিয়ানমারে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, ইন্দেনেশিয়া, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে পালিয়ে শরণার্থী হিসেবে জীবন যাপন করা রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে মিয়ানমারকে বাধ্য করতে হবে।
প্রথাগত কুসংস্কারের ধারাবাহিকতায় মায়ানমারের উগ্র বৌদ্ধ সম্প্রদায়, জাতীয়তাবাদী চরমপন্থী ও নির্দয় সেনাবাহিনীর যুগপৎ অভিযানে শত বছরের প্রাচীন ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠি রোহিঙ্গাদের নির্মূল ও বাস্তুচ্যুত করার যে হীন নীলনকশা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে তা পৃথিবীর কোন বিবেকবান মানুষ মেনে নিতে পারবে না। সমাবেশ চলাকালে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন আইন-শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে দায়িত্ব পালন করেন।
Posted ২:২২ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Chy