মুকুল কান্তি দাশ, চকরিয়া :: দেশের প্রথম স্থাপিত কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারাস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক। এই পার্ক দেখতে প্রতি বছর লাখো দর্শনার্থীর সমাগম হয়। ঈদ বা কোন উপলক্ষ্য এলেই বেড়ে যেতো দর্শনার্থীদের সংখ্যা।
প্রতিবছর ঈদের সময়টাতে দর্শনার্থীদের ব্যাপক সমাগম হলেও এবারের ঈদুল-আজহায় আশানুরুপ দর্শনার্থীর সমাগম ঘটেনি। যার কারণে হতাশ হয়েছেন পার্ক সংশ্লিষ্টরা। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের নিরাপত্তাও নেয়া হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঈদের এই সময়টাতে স্থানীয়দের পাশাপাশি দেশের শহুরে দর্শনার্থীরাও বৈচিত্রময় ও প্রায় বিলুপ্ত পশু-পাখি দেখতে ভিড় করতো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে। সপ্তাহজুড়ে কম করে হলেও লাখো দর্শনার্থীর পা পড়তো সাফারি পার্কে। তবে, অতিরিক্ত গরমের কারণে আশানুরুপ দর্শনার্থীদের সমাগম ঘটেনি বলে পার্ক কর্তৃপক্ষ সুত্রে জানা গেছে।
সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে, অতিরিক্ত গরমের সাথে হাল্কা বৃষ্টি উপেক্ষা করে ভ্রমণের জন্য আসা কিছু সংখ্যক দর্শনার্থীরা পার্কে ভিড় জমিয়েছে। তাদের মধ্যে অধিকাংশ স্থানীয়। পার্কে থাকা বাঘ, সিংহ, উল্টো লেজী বানর, লাম চিতা, হনুমান, উল্লুক, কালো শিয়াল, জলহস্তী, ওয়াইল্ডবিষ্ট, চিত্রা হরিণ, মায়া হরিণ, প্যারা হরিণ, মিঠা পানির কুমির, মঁয়ূর, বনমোরগ, বন্য শুকর, তারকা কচ্ছপ, বানরসহ অসংখ্য বন্যপ্রাণী ঘুরে ফিরে দেখছিল দর্শনার্থীরা।
পার্কে আসা দর্শনার্থীদের মধ্যে বেশিরভাগ ছোট বাচ্চা। এছাড়া তরুণ-তরুণী, কিশোর-কিশোরীদের উপস্থিতি ছিলোও মোটামুটি। তারা বন্যপ্রাণী দেখার পাশাপাশি সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত মনের সুখে উপভোগ করছেন নান্দনিক বৃক্ষ রাজির ফাঁকে ফাঁকে উন্মুক্ত বিচরণ করা হরিণ, খরগুস, বানর। বেশিরভাগ দর্শনার্থী ও পর্যটকদে কাছে আকর্ষনীয় ছিল বাঘ, সিংহ, জেব্রা এবং জলহস্তীর বেষ্টনী। আর বানরের নাচতো আছেই।
তবে, পার্কে ঘুরতে আসা অধিকাংশ দর্শনার্থীরা অভিযোগ করে বলেছেন, পার্কে নতুন কোন অতিথি নাই। আগে যা দেখেছি এখনও তাই রয়েছে। পার্কের চারপাশ উপর থেকে দেখার জন্য একটি ১০ তলা বিশিষ্ট টাওয়ার থাকলেও তা বন্ধ করে রেখেছে পার্ক কর্তৃপক্ষ।
সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম বলেন, রবিবার ঈদের পরদিন থেকে বুধবার পর্যন্ত ১২-১৩ হাজারের মতো পার্কে দর্শনার্থী এসেছে। যা অন্যান্য বারের তুলনায় খুবই কম। যারা এসেছে পার্কের প্রধান গেইটের বাইরে নির্মিত দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর বিশাল ম্যুরাল ছাড়াও পার্কের বাইরে নব-নির্মিত লেক ও বাগান ছিল দর্শনার্থীদের কাছে বেশ আকর্ষনীয়।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে পার্কে ব্যাপক উন্নয়ন কাজ চলছে। সে কারণে কিছুটা অগোচালো। আর অতিরিক্ত গরমের কারণেও দর্শনার্থীর সংখ্যা কিছুটা কমেছে। যা এসেছে গত ঈদের তুলনায় খুব কম। আশাকরি কয়েকদিনে আরও দর্শনার্থী বাড়বে।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চন্দন কুমার চক্রবর্তী বলেন, ঈদ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক ছাড়াও অন্যান্য দর্শনীয় স্থানগুলোতে আগত দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পাশাপাশি ট্যুরিষ্ট পুলিশও কাজ করছে। আশাকরি কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার সম্ভবনা নেই।
Posted ৫:১১ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৪ জুলাই ২০২২
coxbangla.com | Chanchal Chy