হুমায়ূন রশিদ,টেকনাফ(৯ অক্টোবর) :: মিয়ানমার সেনা বাহিনীর নির্যাতন ও অবরোধের কারণে খাদ্য সংকটে পড়া রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশুরা জীবিকার তাগিদে বাংলাদেশ পালিয়ে আসার সময় নাফনদীতে পৃথক নৌকা ডুবির ঘটনায় ১৪জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছে প্রায় অর্ধশত রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশু।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়,৯অক্টোবর ভোররাত ৪টারদিকে মিয়ানমারের বুছিধংয়ের কুহং এলাকা হতে একটি ট্রলারে করে ৭৬জন নারী-পুরুষ ও শিশুর বহর নাফনদী অতিক্রম করে বাংলাদেশ সীমান্তে আসার জন্য রওয়ানা দেন।
ভোরের দিকে ঘোলার চরে পৌঁছলে প্রবল ঢেউয়ের তোড়ে পড়ে ট্রলারটি ডুবে যায়। উক্ত ট্রলার ডুবির ঘটনায় তাৎক্ষণিক ১৬জন নারী-পুরুষ ও শিশুদের জীবিত উদ্ধার করা হলেও ৬০জন নিখোঁজ রয়ে যায়।
উক্ত ট্রলার ডুবি থেকে প্রাণে রক্ষা পাওয়া মা-বাবা হারানো আরফাত (৮),স্ত্রী ও ছেলে-মেয়ে হারানো মোঃ হাসান ও মোঃ শাকের এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
এছাড়া গত রাত সাড়ে ৯টারদিকে একই পয়েন্টে মিয়ানমারের নাইক্যংদিয়া হতে আগত ৩৫/৪০ জনের রোহিঙ্গা বোঝাই একটি নৌকা ঘোলার চর এলাকায় ডুবোচরে আটকা পড়ে ঢেউয়ের তোড়ে ডুবে যায়। বিজিবি টহলদল নদীর মধ্যে নারী-শিশুর কান্না শুনে উদ্ধারে বের হয়।
কোস্টগার্ড-বিজিবির সহায়তায় ২শিশুসহ ১৩জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। অবশিষ্টরা নিখোঁজ ছিল। বাদে জোহর শাহপরীর দ্বীপে জানাজা শেষে পৃথক স্থানে তাদের দাফন করা হয়েছে।
তারা আরো জানায়,সেনাবাহিনীর নির্যাতন, হামলা ও খুনের পর রোহিঙ্গাদের এলাকা ভিত্তিক অবরুদ্ধ করে রাখায় চরম খাদ্য সংকটে পড়ে। তারা একমুঠো খাবারের জন্য বাংলাদেশ আসতে গিয়েই এই দূঘর্টনার কবলে পড়ে।
এদিকে সকালে নাফনদী ও বঙ্গোপসাগর উপকূল থেকে কোস্টগার্ড,বিজিবি ও স্থানীয় জনসাধারণ ১০শিশু-কিশোর,১নারী ও ১পুরুষ এবং সন্ধ্যায় টেকনাফ সীবীচ হতে আরো একজনের মৃতদেহসহ মোট ১৪জনের মৃতদেহ উদ্ধার করে। এখনো মৃতদেহ উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
উদ্ধারকৃত মৃতদেহ সমুহ স্থানীয় গোরস্থানে জানাজা শেষে দাফন করা হয়েছে।
টেকনাফ মডেল থানার ওসি মোঃ মাইন উদ্দিন খান ১৪জন রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করে দাফনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৫ আগস্ট মাসে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনা অভিযান শুরুর পর সৃষ্ট সহিংসতা থেকে বাচঁতে নাফ নদী ও সাগর পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আসতে গিয়ে রোহিঙ্গাবোঝাই নৌকাডুবির ঘটনায় এ পর্যন্ত ১৪৭ জন রোহিঙ্গার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।
Posted ৯:১৯ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০৯ অক্টোবর ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Chy