কাদের হোছাইন,ডুলাহাজারা(৯ ডিসেম্বর) :: চকরিয়ায় মালুমঘাট হাইওয়ে পুলিশের সাথে ডুলাহাজারা বাজারের ব্রিজের উত্তর পাশে টমটম গাড়ির চালক ও সাধারণ জনতার সাথে বাকবিতন্ডা সহ হাতাহাতি হয়েছে।
এতে রক্তঝরা আহত হয় এক টমটম চালক, পরে ক্ষুব্ধ জনতার পাল্টা ধাওয়াতে ২ জন পুলিশও আহত হয়।উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে দীর্ঘ ১ ঘন্টা যাবৎ কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সকল প্রকারের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ অপ্রীতিকর ঘটনাটি ঘটেছে গত ৯ই ডিসেম্বর সকাল ১১টায়।
ঘটনাসূত্রে জানা যায় , আহত টমটম চালক অত্র ইউনিয়নের বালুরচর-ষোলহিচ্ছা গ্রামের নুরুল হুদার পুত্র মহি উদ্দীন (২৫)। সে তার টমটম গাড়িতে যাত্রী নিয়ে হাইওয়ে মহাসড়ক দিয়ে ব্রিজের উত্তর দিকে যাওয়ার পথে মালুমঘাট হাইওয়ের পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বরত এ,এস,আই মাঈন উদ্দীন এ টমটম গাড়িকে সিগন্যাল দিয়ে গতি রোধ করার চেষ্টা করে।
এতে চালক গাড়ি থামালে কর্মরত পুলিশ তাকে মহাসড়ক থেকে টমটমটি এক পাশে সরাতে বলা মাত্র, টমটম চালক তার গাড়িটি না সরিয়ে আবারো চালিয়ের যাওয়ার চেষ্টাকালে এ কর্মকর্তার হাতে থাকা লাঠি নিয়ে গাড়িতে ভারি মারার সময়, গাড়ির গ্লাসে পড়লে গ্লাসটি ভেঙ্গে যায়।
এর পরও এ চালক উল্টো গাড়িটি ঘুরানোর সময়, পুলিশ চালকের গায়ে হাত দিলে, চালক পুলিশের হাতকে সরাতে গিয়ে একটু টানা হেচড়াঁতে সে খাত হয়ে পড়ে গেলে তার বামপাশের চোখের উপরে ফেটে গেলে রক্ত ঝরতে দেখে সাধারণ জনতা ক্ষুব্ধ হয়।
পরে ক্ষুব্ধ জনতাও ঘটনা কি? তা না জেনে হঠাৎ পুলিশের সাথে অশ্লীল আচারনের বাকবিতন্ডা করতে গিয়ে ভুল বুঝাবুঝিতে পুলিশের সাথে হাতাহাতি শুরু করে দেয় এতে ২ জন পুলিশ আহত হন। এরপরে আহত টমটম চালককে দ্রুত মালুমঘাট মেমোরিয়াল খ্রীষ্টান হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়।
তবুও থেমে থাকেনি ক্ষুব্ধ জনতা ও পুলিশের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, ফলে এ অপ্রীতিকর ঘটনা কারণে হাইওয়ে মহাসড়কে এক ঘন্টা মত যানচলাচল বন্ধ থাকে। ঘটনা খবর পেয়ে, চকরিয়া থানা তদন্ত ওসি. মিজানুর রহমান সহ আরো ছয় জন এস.আই. ও দশ জন মত পুলিশ সদস্য নিয়ে ঘটনাস্থলে এসে ঘটনার হৈ-ছৈ ক্ষুব্ধ জনাতার উত্তেজনা থামানো বা নিয়ন্ত্রনে আনার চেষ্টা চালাচ্ছে।
এ সময় অত্র ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন, প্যানেল চেয়ারম্যান শওকত আলী, আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক মনছুর আলম, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম , নুরুল আবচার এমইউ.পি, মেম্বার ফরিদুল আলম, জয়নাল আবেদিন (সোনা মিয়া) ঘটনার খবর পেয়ে তড়িৎ গতিতে ঘটনাস্থলে এসে নিজেরা ও থানা পুলিশের সাথে জড়িত হয়ে, ক্ষুব্ধ জনতার উপচে পড়া জড়ো হওয়া বিড়, মহা সড়কের উপর অপ্রীতিকর ঘটনা নিয়ন্ত্রনে আনতে সক্ষম হয়।
পরে যান চলাচল স্বাবাভিক হয়ে যায়। এ ঘটনার খবর পেয়ে চকরিয়া সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ও সাথে সাথে এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ও আহত টম টম চালককে হাসপাতালে দেখতে যান।
মালুমঘাট হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ রুহুল আমিন বলেন, ঘটনার একটু আগে ও আমি নিজেই ছোট-খাট গাড়ি চালককে শুধু মাত্র এক ঘন্টার জন্য হাইওয়ে মহাসড়কে এলোপাতাড়ি গাড়ি রেখে ভিড় না করার জন্য অনুরোধ করে গেছি। কারণ কক্সবাজার শহর থেকে কুমিল্লার উদ্দেশ্যে মহাসড়ক হয়ে হাইওয়ে পুলিশের ডি.আই.জি. ও এস.পি.স্যারেরা আসতেছে।
এজন্য অন্তত এক ঘন্টা মহাসড়কে ভিড় না করার অনুরোধ করার পর ও হঠাৎ করে অত্র পুলিশ ফাঁড়ির কর্মরত মাঈন উদ্দিনের সাথে ভুল বুঝাবুঝিতে টমটম চালক ও জনতার সাথে এ ঘটনা ঘটে যায়।
চকরিয়া থানার তদন্ত ওসি. মিজানুর রহমান বলেন, আমি সহ থানার কর্মরত এ.আই. ও পুলিশ সদস্য নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌছালে, এতে অত্র ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সহ কয়েক জন ইউ.পি সদস্যকে পেয়ে, সকলে মিলে ঘটনার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনি। পরে আহত দু’জন হাইওয়ে পুলিশ সদস্যকে অপ্রিতীকর ঘটনায় ক্ষুব্ধ জনতার হাত থেকে উদ্ধার করে পুলিশ ফাঁড়িতে পৌছার ব্যবস্থা করি।
পরে সবাই হাসপাতালে আহত চালকে দেখতে যায়। ঘটনার শেষে হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ওসি. মোঃ মোজাহিদ এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে শেষে আহত চালককে দেখতে যান।
উক্ত ঘটনার বিষয়ে সিনিয়র সহকরী পুলিশ সুপার কাজী মতিউল ইসলাম বলেন, আহত টম টম চালকের যাবতীয় চিকিৎসা খরচ ও সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত পরিবারের যাবতীয় খরচ হাইওয়ে পুলিশের পক্ষে বহন করবে।
এছাড়া আমি হাইওয়ে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি, কর্তৃপক্ষরা বলেন, এ ঘটনার বিষয়ে ঘটনাকারী কর্মকর্তা মাঈন উদ্দিনকে এখান থেকে রিলেক্স করা হবে এবং বিভাগীয় তদন্ত প্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
Posted ১২:৪৮ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Chy