বিশেষ প্রতিবেদক(২৫ অক্টোবর) :: কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) ৭ সদস্যকে বুধবার ভোরে নগদ ১৭ লাখ টাকাসহ আটক করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি দল।অপহৃত ব্যবসায়ীর নাম আবদুল গফুর।সে টেকনাফ পৌরসভার আট নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মনিরুজ্জামান এর ছোট ভাই।
আবদুল গফুর, তার ভাই জাফর আলম ওরফে টি টি জাফর ও তার ভাই কাউন্সিলর মনিরুজ্জমান পুলিশের তালিকাভূক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ী। গফুরের ভাই টি টি জাফর মিয়ানমার থেকে ইয়াবা আনার এজেন্ট হিসেবে কাজ করেন। মিয়ানমারের সাথে ইয়াবার হুন্ডি ব্যবসার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকার শীর্ষে আছে টি টি জাফর। জাফর মূলত দেশের নাম্বার ওয়ান ইয়াবা ব্যবসায়ী হাজী সাইফুল করিমের এজেন্ট হিসেবে কাজ করেন।
পরে ভোররাত ৪টার দিকে সেনাবাহিনীর লম্বরী ক্যাম্পের কিছু দূরে ১৭ লাখ টাকা দেওয়ার পর আমার ভাইকে ছেড়ে দেয় ডিবি সদস্যরা। ডিবি পুলিশের দলটি কক্সবাজার ছাড়ার পথে সেনাবাহিনীর ওই ক্যাম্পে তাঁদের আটক করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক র্যাবের একটি সূত্র জানায়, আবদুল গফুরকে মঙ্গলবার সকালে অপহরণ করে ডিবির একটি দল। এরপর মুক্তিপণ হিসেবে পরিবারের কাছে ৫০ লাখ টাকা দাবি করে তাঁরা। কিন্তু দর-কষাকষির পর ওই ব্যবসায়ীর পরিবার ১৭ লাখ টাকা দিতে রাজি হয়। পরে ভোররাত ৪টার দিকে সেনাবাহিনীর লম্বরী ক্যাম্পের কিছু দূরে ১৭ লাখ টাকা দেওয়ার পর তাকে ছেড়ে দেয় ডিবি সদস্যরা।
সূত্র জানায়,এরপর ওই ব্যবসায়ীর পরিবার একটি মিডিয়ার সহযোগিতায় বিষয়টি সেনাবাহিনীকে জানালে টেকনাফের মেরিন ড্রাইভ এলাকার লম্বরী সেনাবাহিনীর তল্লাশি চৌকিতে ডিবির গাড়িটি সংকেত দিয়ে থামানো হয়। এ সময় একজন উপপরিদর্শক (এসআই) পালিয়ে যান।সাতজনকে আটক করা হয়। গাড়ি থেকে মুক্তিপণ হিসেবে আদায় করা ১৭ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। পরে ভোররাতেই তাঁদের সাবরাং সেনাবাহিনীর অস্থায়ী ক্যাম্পে নিয়ে আসা হয়।
জেলা পুলিশের পুলিশ সুপার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সেনাবাহিনী ক্যাম্পে এসে আলোচনার মাধ্যমে আটক কর্মকর্তাদের নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তাঁদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আমাদের জানান তাঁরা। তবে উদ্ধার করা টাকা আমাদের হাতেই রয়েছে।সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র্যাবের দফায় দফায় বৈঠকের পর উদ্ধার ১৭ লাখ টাকা ওই ব্যবসায়ীকে ফেরত দিয়ে আটক ৭ ডিবি সদস্যকে কক্সবাজারের পুলিশ সুপারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের আফরুজুল হক টুটুল জানিয়েছেন, গুটি কয়েক পুলিশ সদস্যের অপকর্মের জন্য পুরো বাহিনীর নাম খারাপ হচ্ছে। সেনাবাহিনীর হাতে আটক ও পালিয়ে যাওয়া ৮ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আইনগত ও বিভাগীয় শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গ্রেফতারকারী সেনাদের হয়ে মেজর নাজিম জানান, কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভ দিয়ে এলাকার ‘মাইক্রোবাসটি চলে যাচ্ছে এমন তথ্যের পরিপ্রেক্ষিতে টেকনাফের মেরিন ড্রাইভের সেনা চেকপোস্টে ভোরে মাইক্রোবাসটি থামানো হয়। সেনাবাহিনী মাইক্রোবাসটি তল্লাশি করতে চাইলে যাত্রীরা নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দেয়।এসময় সেনা সদস্যরা গাড়ি তল্লাশি করতে চাইলে এক ব্যক্তি গাড়ির গ্লাস ভেঙ্গে পালিয়ে যায়। পরে গাড়ি তল্লাশি করে হলুদ রংয়ের কাপড়ের প্যাকেট থেকে ১৭ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়,’ বলেন মেজর নাজিম। পরে গাড়ি থেকে ওই ডিবি সদস্যদের আটক করা হয়।মেজর নাজিম টেকনাফের সাব্রাং ত্রাণ কেন্দ্রের দায়িত্বে আছেন।
Posted ৫:২৫ অপরাহ্ণ | বুধবার, ২৫ অক্টোবর ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Chy