কক্সবাংলা রিপোট(৪ আগস্ট) :: তিন বছর থেকে দেশের বাজারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কক্সবাজারেও চামড়ার বাজারে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তবে এবারে হয়েছে নজিরবিহীন ধস। বিভিন্ন জায়গা থেকে খুচরো ব্যবসায়ীদের কেনা বেশিরভাগ গরুর প্রতি পিস চামড়ার দাম ২০০ টাকার উপরে উঠেনি। আর এ দামে চামড়া কিনে সিলেটর বড় ব্যবসায়ীরা বাইরের ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করতে পারছেন না নায্য দামে।
অন্যদিকে,কক্সবাজারে চামড়ার বাজারে এমন ভয়াবহ ধসের কারণে এবারে ব্যবসায় নামেননি প্রায় ৬০ ভাগ ব্যবসায়ী- এমনটাই জানালেন সংশ্লিষ্টরা। গত ২৬ জুলাই চামড়ার দাম ঠিক করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এ বছর পবিত্র ঈদুল আজহার জন্য নির্ধারিত পশুর চামড়ার দর গত বছরের চেয়েও বেশ কম ছিলো।
এ বছর ঢাকার জন্য লবণযুক্ত কাঁচা চামড়ার দাম গরুর প্রতি বর্গফুট ৩৫ থেকে ৪০ টাকা এবং ঢাকার বাইরে সিলেটসহ সারা দেশে ২৮ থেকে ৩২ টাকা নির্ধারণ করা হয়। যা গত বছর ঢাকায় ছিলো ৪৫ থেকে ৫০ টাকা আর ঢাকার বাইরে ছিলো ৩৫ থেকে ৪০ টাকা।
এবারে চামড়ার দাম কম হওয়ায় ভালো ব্যবসার হওয়ার আশা করেছিলেন কক্সবাজারের চামড়া ব্যবসায়ীরা। কিন্তু ঘটেছে বিপর্যয়। এছাড়াও সোমবার (৩ আগস্ট) ঈদের তৃতীয় দিনে কিছুটা দাম উঠার প্রত্যাশায় ছিলেন ব্যবসায়ীরা, কিন্তু তাও হয়নি।
কক্সবাজারের কয়েকজন চামড়া ব্যবসায়ীেদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকার নির্ধারিত দাম অনুযায়ী গরুর যে চামড়ার দাম হওয়ার কথা সর্বনিম্ন ৭০০ থেকে ১০০০ টাকা, সেটার দাম চাওয়া হচ্ছে ২০০ থেকে ৪০০ টাকা।
অনেক ব্যবসায়ী আজকে পর্যন্ত অপেক্ষা করেছিলেন, ভেবেছিলেন আজ হয়তো ভালো দাম পাবেন। কিন্তু আজকের পরিস্থিতি আরও খারাপ। আকারভেদে প্রতি চামড়ার দাম ঢাকার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আজ চাওয়া হচ্ছে ১৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা। আর ছাগলের চামড়ার জন্য কেউ কোনো দামই দিতে চাইছে না। দিলেও সেটা ৫-১০ টাকার বেশি না।
এছাড়াও প্রচণ্ড গরমে চামড়া নষ্ট হতে শুরু করায় দাম আরও নামছে। এমন অবস্থায় কক্সবাজারের অনেক ব্যবসায়ী তাদের কাছে থাকা কাঁচা চামড়াগুলো ফেলে দেয়া ছাড়া আর কোনো উপায় দেখছেন না।
এ বিষয়ে কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, কক্সবাজার জেলায় চামড়ার বাজার মুখ থুবড়ে পড়েছে। আমাদের পথে বসার উপক্রম। ঈদের আগের দিন ঢাকার বড় ব্যবসায়ী আমাদের কাছ থেকে চামড়া কিনবেন না জানিয়ে দেন। আমিও আর চামড়া ক্রয় করবো না বলে সিদ্ধান্ত নেই।
কিন্তু ঈদের গতবারের কিছু কাসম্টামার একরকম জোরেই কিছু মাল গছিয়ে দেন। তাই প্রায় ৩ হাজার পিস চামড়া বাধ্য হয়ে কিনেছি। কিন্তু সেগুলোর নায্য দাম পাবো না, লোকসানেই বিক্রি করতে হবে। কারণ- চামড়ার মূল আড়ত ঢাকার পোস্তায় সিলেটের অনেকে মাল নিয়ে গিয়ে বিক্রি করতে না পেরে ফিরে এসেছেন। পোস্তার ব্যসায়ীদের সঙ্গে কথাই বলা যাচ্ছে না।
উল্লেখ্য, গত ১ আগস্ট ঈদুল আযহার দিন কক্সবাজারে দেখা যায়- বেশি দামে বিক্রির আশায় বিভিন্ন স্থান থেকে চামড়া সংগ্রহ করে খুচরো ব্যবসায়ীরা বিক্রির জন্য নিয়ে আসেন শহরে, কিন্তু তাদেরকে পুড়তে হয় হতাশার খরতাপে। কারণ, চামড়ার দাম ছিলো অকল্পনীয় কম। গরুর একেকটি চামড়া ১০০ টাকা দামেও বিক্রি হয় ঈদের দিন। বড় আকারের গরুর চামড়ার দাম সর্বোচ্চ ওঠে ২০০ টাকা!
Posted ৮:৩৮ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৪ আগস্ট ২০২০
coxbangla.com | Chanchal Chy