বিশেষ প্রতিবেদক :: কক্সবাজারের মধ্যম কুতুবদিয়াপাড়ায় গৃহবধূকে পিস্তল ঠেকিয়ে তিন লাখ টাকা লুটের অভিযোগে করা মামলায় তিন পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকেলে ওই তিনজনকে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করে পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়েছে পুলিশ।
গ্রেপ্তার তিন পুলিশ সদস্য হলেন কক্সবাজার শহর পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) নুর হুদা ছিদ্দিকী, কনস্টেবল আমিনুল মমিন ও মামুন মোল্লা।
গত সোমবার রাতে গৃহবধূ রোজিনা খাতুন বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় তিন পুলিশ সদস্যের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা পাঁচজনের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলা করেন। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, গতকাল তাঁর বাড়ির সামনে থেকে টাকা লুটের ঘটনা ঘটে।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মুনীর উল গীয়াস বলেন, তিন পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে মঙ্গলবার বিকেলে কক্সবাজার আদালতে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত রিমান্ডের শুনানি হয়নি। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। লুট হওয়া টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান বলেন, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নন। অপরাধ করে কেউ পার পাবেন না। গ্রেপ্তার পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, গতকাল বিকেলে কক্সবাজার পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যম কুতুবদিয়া পাড়ার বাসিন্দা ব্যবসায়ী রিয়াজ আহমদের বসতবাড়িতে টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। এখানে শুঁটকি উৎপাদনের প্রায় ৭০০টি মহাল আছে। এটি দেশের সর্ববৃহৎ শুঁটকি মহাল। বিকেল ৪টার দিকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে সাদা পোশাকধারী পুলিশের পাঁচ সদস্য রিয়াজ আহমদের বসতবাড়িতে যান। এরপর পুলিশ পরিচয় দিয়ে সাদা পোশাকধারীরা ব্যবসায়ী রিয়াজের স্ত্রীকে অস্ত্র ঠেকিয়ে টাকা লুট করেন।
রোজিনার চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এলে টাকা নিয়ে পুলিশ সদস্যরা অটোরিকশায় করে পালানোর চেষ্টা করেন। জনতা ধাওয়া দিয়ে একজন কনস্টেবলকে ধরে ফেলেন। বাকি চারজন পালিয়ে যান। পরে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯–এ ফোন করা হয়। কক্সবাজার সদর মডেল থানার পুলিশকে ঘটনাটি জানানো হয়। রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে আরও দুই পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে।
ব্যবসায়ী রিয়াজ আহমদ বলেন, তাঁর স্ত্রী রোজিনাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। পুলিশ পিস্তল দিয়ে তাঁর স্ত্রীর হাত-পাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। মঙ্গলবার সকালে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে ফেরেন রোজিনা।
মঙ্গলবার রোজিনা সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার কিছুক্ষণ আগে তিনি ব্যবসার তিন লাখ টাকা নিয়ে বাড়িতে পৌঁছান। কিন্তু টাকার জন্য পুলিশ সদস্যরা এত বেপরোয়া হবেন, এটি ছিল তাঁর কল্পনার বাইরে।
সূত্র : প্রথম আলো
Posted ১১:৩০ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০২ মার্চ ২০২১
coxbangla.com | Chanchal Chy