এম.জিয়াবুল হক,চকরিয়া(৫ আগষ্ট) :: দেশব্যাপী ছাত্র আন্দোলনের রেশধরে এবার চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে নিরাপত্তার অজুহাতে অঘোষিত ভাবে চলছে শ্রমিকদের পরিবহন ধর্মঘটে নেমেছে শ্রমিকরা।
ফলে রোববার সকাল থেকে রাত অবদি কক্সবাজার থেকে কোন ধরনের দুরপাল্লার যানবাহন ছেঁেড় যায়নি রাজধানী ঢাকা কিংবা বাণিজ্যিক নগরী চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে। এমনকি সারাদিন বন্ধ থাকে কক্সবাজারমুখী সব ধরনের যানবাহন চলাচল।
অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘটে কারনে রোববার সকাল থেকে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে অবস্থানরত হাজার হাজার পর্যটক আটকে পড়ছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে চকরিয়া, কক্সবাজার থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রামগামী যাত্রী সাধারণ, অফিস আদালত মুখী সরকারি বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সর্বস্তরের জনগন।
কক্সবাজার থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রামমুখী সব ধরনের দুরপাল্লার যান চলাচল বন্ধ থাকলেও যাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হওয়ায় বিকল্প পরিবহন হিসেবে ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা ও টমটম যাতায়াত করছে।
রোববার কক্সবাজার পৌর বাস টার্মিনালে সকাল থেকে বিকল্প পরিবহনে পথে পথে গাড়ি পাল্টিয়ে বেশিরভাগ যাত্রী সাধারণ অতিকষ্টে চট্টগ্রাম যেতে যাত্রীদের গুনতে হয়েছে কয়েকগুন বেশি ভাড়া। দেশজুড়ে অঘোষিত পরিবণ ধর্মঘটের কারণে দুর্ভোগে পড়েছে জেলার আট উপজেলার মানুষসহ দূরপাল্লা যাত্রীরা।
সড়কে যানবাহনে নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে কেন্দ্রীয় শ্রমিক ফেডারেশনের নেতাদের নির্দেশে রোববার সকাল থেকে কক্সবাজার ও চকরিয়া পৌরশহর থেকে অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার রুটে সব ধরণের যানবাহন চলাচল বন্ধ রেখেছে পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তাদের এই পরিবহন ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে বলে জানান স্থানীয় পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতারা।
চকরিয়া বদরখালী-মহেশখালী সড়কের সিএনজি অটোরিক্সা চালক নাছির উদ্দিন বলেন, নিরাপত্তা জনিত কারনে শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দের নির্দেশক্রমে রোববার সকাল থেকে সড়কে কোন ধরণের সিএনজি গাড়ী বাহির করা হয়নি। কেন্দ্রের নির্দেশনানুযায়ী সকল পরিবহণ শ্রমিকরা ধর্মঘটে সাড়া দিয়ে পালন করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, পরবর্তী নির্দেশনা পেলে ফের যানবাহন চলাচল শুরু করা হবে।
কেন্দ্রীয় শ্রমিক ফেডারেশনের অন্তর্ভুক্ত চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের অন্যতম বড় শ্রমিক সংগঠন আরকান সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জহিরুল ইসলাম বলেন, সড়কে পরিবহণ শ্রমিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া এবং কেন্দ্র থেকে যতক্ষণ পর্যন্ত ইতিবাচক নির্দেশনা আসবেনা ততক্ষন পর্যন্ত চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে পরিবহন ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, শ্রমিকরা তো সরকারের প্রতিপক্ষ না। সরকার পরিবহন ও শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিরপেক্ষ ভাবে দায়িত্ব পালন করছে। এখানে সরকারের সাথে পরিহণ শ্রমিকের কোন ধারণের বিরোধ বা বৈরী পরিবেশ নেই।
পরিবহণ ধর্মঘট নিয়ে আরকান সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়ন যুগ্ন সম্পাদক কামাল আজাদ সাথে স্বাক্ষাত হলে বলেন, শতভাগ নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে হলে সারা দেশে মহাসড়কের রাস্তার দু’ধারে যে সমস্ত ভাসমান দোকান ও ফুটপাত রয়েছে তা পরিস্কার করতে হবে।বহি বিশ্বের রাষ্ট্রের মতো ওয়ান ওয়ে রোড চালু করতে হবে। অন্যান্য রাষ্ট্রের মতো এ স্বল্পন্নোত দেশে শতভাগ নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে হলে মহাসড়কে ছোট যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে বিকল্প সড়ক তৈরি করতে হবে।
তিনি বলেন, একজন গাড়ীর শ্রমিক তার দৈনিক মজুরী হিসেবে পাই নূন্যতম ৮শত টাকা থেকে ১২শত টাকা।বর্তমান সরকার সড়কে দূর্ঘটনার ব্যাপারে যে গৃহীত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তা একজন পরিবহণ শ্রমিকের পক্ষে কখনও সম্ভব না। পরিবহণ শ্রমিকের শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট অব্যাহত থাকতে পারে বলে তিনি জানান।
কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার ড. একএম ইকবাল হোসেন বলেন, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কসহ উপজেলার প্রতিটি সড়কে শ্রমিক এবং পরিবহনের নিরাপত্তা নিয়ে পুলিশ প্রশাসন ব্যাপক নজরদারী রেখেছে। যাতে কোন ধরণের অপ্রীতিকর ও ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ড ঘটাতে না পারে। ইতোমধ্যে প্রতিটি সড়কে পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে।
Posted ১২:৫৩ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ০৬ আগস্ট ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Chy