কক্সবাংলা রিপোর্ট :: একদিকে করোনা মহামারির ধাক্কা অন্যদিকে ভারী বর্ষণে হঠাত বন্যায় বিপর্যস্ত কক্সবাজার জেলার ২ লাখ ৩৬ হাজার কৃষক বৃষ্টিতে ভিজে আমন আবাদের জন্য জমি প্রস্তুত ও ধানের চারা রোপন শুরু করেছে। তবে চলতি আমন মৌসুমের শুরুর দিকে বৃষ্টি হানা দেওয়ায় কৃষকদের বীজতলা তৈরিতে বেগ পেতে হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ জানায়, ২০২১-২০২২ মৌসুমে ৭৯ হাজার ৭৩ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।এতে চালের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ২২ হাজার ৭৫৫ মেট্রিক টন। এবছর আবাদের মধ্যে রয়েছে উচ্চ ফলনশীল জাতের ৭৪ হাজার ৬শ’ হেক্টর, হাইব্রিড জাতের ২ হাজার ৪শ’ ৭৩ হেক্টর এছাড়াও স্থানীয় জাতের রয়েছে ২ হাজার হেক্টর। জেলায় এবার বোরোতে বাম্পার ফলনের পর কক্সবাজারের কৃষকরা এখন আমন ধানের চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আশীষ কুমারে দে জানান, এই বর্ষা মৌসুমে ধান আবাদ করতে খরচ কম হয়। কারণ- প্রকৃতির বৃষ্টিতে জমিতে চাষ দেওয়া যায়। যা জমিতে ধান রোপনের পরও সেচ দেওয়া লাগেনা এবং জমি পানিতে তলিয়ে থাকে বলে আগাছাও তুলনামূলকভাবে কম হয়। সবকিছু মিলিয়ে আষাঢ়ে ধান চাষে কৃষকরা কম খরচে বেশি লাভবান হয়ে থাকে। এবার আষাঢ় মাস এবং শ্রাবণ মাসের প্রথমের দিকে বৃষ্টিপাত হওয়ার ফলে রোপা আমন চাষে এখনও কোন সমস্যা হচ্ছে না। তবে গত এক সপ্তাহ টানা বর্ষনে কিছু কিছু এলাকায় বন্যার পানিতে জমি তলিয়ে গেছে। এবারের বন্যায় জেলায় ৭ হাজার ৩৫৭ হেক্টর জমি পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। তবে কৃষকরা শীঘ্রই এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠবে।
তিনি আরো জানান,২০২১-২২ মৌসুমে রোপা আমন চাষ সফল করতে প্রায় ৪ হাজার হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে জেলার কৃষকরা আমনের চারা রোপণ শুরু করেছে এবং ২ আগস্ট পর্যন্ত ১৪ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে চারা রোপণ সম্পন্ন হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ডক্টর মোহাম্মদ একলাস উদ্দিন জানান,জেলায় ৮৫ হাজার ৮৮২ হেক্টর জমির মধ্যে চলতি মৌসুমে ৭৯ হাজার ৭৩ হেক্টর জমিতে আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।এর মধ্যে কক্সবাজার সদর উপজেলায় ৮ হাজার ৯৬৫ হেক্টর,চকরিয়া উপজেলায় ১৯ হাজার ৫০ হেক্টর, পেকুয়া উপজেলায় ৮ হাজার ৪০০ হেক্টর,রামু উপজেলায় ৯ হাজার ৪৭০ হেক্টর,উখিয়া উপজেলায় ৯ হাজার ৬৮০ হেক্টর, মহেশখালী উপজেলায় ৮ হাজার ২৩৮ হেক্টর এবং টেকনাফ উপজেলায় ৮ হাজার ১০ হাজার ৮১০ হেক্টর। গত বছর আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ছিল ৭৮ হাজার ৯৫০ হেক্টর।
তিনি আরও জানান, চলতি মৌসুমে জেলায় বোরোর বাম্পার ফলন হয়েছিল। চাল উৎপাদন হয়েছে ২ লাখ ১৫ হাজার ৮৯৫ মেট্রিক টন যা জেলার চাহিদার তুলানায় বেশি। বোরো’র বাম্পার ফলনের পরে কৃষকরা বর্তমানে রোপা আমন ধানের চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছে এবং আগামী ১৫/২০ দিনের মধ্যে আমন ধানের চারা রোপন শেষ হবে। ধানে বেশি ফলন পেতে সাধারণত ২০ থেকে ২২ দিনের চারা রোপণ করার জন্য এবং পরিমাণ মতো সুষম সার ব্যবহার,কীটনাশকবিহীন রোগবালাইমুক্ত ধান উৎপাদন এবং করানোসহ নানা ধরনের পরামর্শ কৃষকদের দেওয়ার জন্য মাঠ পর্যায়ে কৃষি বিভাগ কাজ করছে।
Posted ৯:১০ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০২ আগস্ট ২০২১
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta