কক্সবাংলা রিপোর্ট :: কক্সবাজার জেলায় চলতি ২০২০-২০২১ মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ২০ হাজার মেট্রিক টন অতিরিক্ত চাল উৎপাদনের কথা জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।। ইতিমধ্যে চাষিরা বিভিন্ন মাঠে জমির ধান কাটা-মাড়াইয়ের কাজ সম্পন্ন করে বিক্রির প্রস্তুতি নিচ্ছেন। জেলায় ১০০ শতাংশ জমির আমন ধানই কাটা সম্পন্ন হয়েছে। প্রতি হেক্টরে এবার ধানের উৎপাদন গড়ে ৩ দশমিক ৮২ মেট্রিক টন।এবছর বাম্পার আমন ধান বিক্রি করে করোনা মহামারির আর্থিক সংকট কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে বলে মনে করছেন কৃষকরা।
এদিকে ১৪ ডিসেম্বর থেকে জেলায় শুরু হচ্ছে সরকারীভাবে আমন ধান সংগ্রহ অভিযান। এবার কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন উপজেলায় সর্বমোট ২লাখ ৬৭ হাজার ৭০০মে.টন ধান, ১৫৬৩ মে.টন সিদ্ধ চাল ও ৯২৬মে.টন সিদ্ধ চাল সংগ্রহ করা হবে। প্রতি কেজি ধানের দাম ধরা হয়েছে ২৬ টাকা করে।আতপ চাল কেজি প্রতি ৩৬ টাকা ও সিদ্ধ চাল কেজি প্রতি ৩৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সংগ্রহ চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত।
জেলা কৃষি সম্প্র্সারণ অধিদফতর একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে,চলতি ২০২০-২০২১ মৌসুমে কক্সবাজারের আট উপজেলায় চলতি মৌসুমে এবার আমন ধানের চাষ হয়েছে ৭৯ হাজার ১০৮ হেক্টর জমিতে। আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিলো ৭৮ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে।এর মধ্যে কক্সবাজার সদর উপজেলায় ৮ হাজার ৯৮০ হেক্টর,টেকনাফ উপজেলায় ২১ হাজার ৪৭০ হেক্টর,মহেশখালী উপজেলায় ৮ হাজার ২৪০ হেক্টর,কুতুবদিয়া উপজেলায় ৪ হাজার হেক্টর,চকরিয়া উপজেলায় ১৯ হাজার ৫০০ হেক্টর,রামু উপজেলায় ৯ হাজার ৪৮০ হেক্টর, পেকুয়া উপজেলায় ৮ হাজার ৪০৩ হেক্টর,উখিয়া উপজেলায় ৯ হাজার ৬৯০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয়েছে।
আর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিলো ২ লাখ ২৪ হাজার ২৮৮ মেট্রিক টন আমন ধান। এবছর আমন উৎপাদন হয়েছে ২ লাখ ৪৩ হাজার ৮৭৬ মেট্রিক টন ।এর মধ্যে কক্সবাজার সদর উপজেলায় ২৭ হাজার ৫২৭ মেট্রিক টন,টেকনাফ উপজেলায় ৩৩ হাজার ৩৮৪ মেট্রিক টন,মহেশখালী উপজেলায় ২৫ হাজার ৩৯৩ মেট্রিক টন,কুতুবদিয়া উপজেলায় ১১ হাজার ৮৫০মেট্রিক টন,চকরিয়া উপজেলায় ৬২ হাজার ২৪৭ মেট্রিক টন,রামু উপজেলায় ২৯ হাজার ৪২২ মেট্রিক টন, পেকুয়া উপজেলায় ২৬ হাজার ২ মেট্রিক টন,উখিয়া উপজেলায় ২৮ হাজার ৫১ মেট্রিক টন উৎপাদন হয়েছে। আমনের এমন ভালো ফলনে খুশি কৃষি সম্প্র্সারণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা।
তারা জানিয়েছেন, কৃষকের আগ্রহ, সরকারের নজরদারি, পৃষ্ঠপোষকতা এবং সরকারের দেওয়া ভর্তুকিসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার ফলেই এবার আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। তারা আশা করছেন, আমনের পর আগামী বছর বোরোর উৎপাদনও ভালো হবে।এবারের মৌসুমে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা করা হয়েছে ৫২ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে এবং উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ১৪ হাজার ৬৫ মেট্রিক টন চাল।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো: আবুল কাশেম জানিয়েছেন, এ বছর ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত আমন ধানের উৎপাদন হয়েছে ২ লাখ ৪৩ হাজার ৮৭৬ মেট্রিক টন । তিনি জানান,জেলায় আমন ধান চাষাবাদ যখন শুরু হয়, তখন বৃষ্টিপাতে জেলার জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়নি। যারফলে চাষিদের আমন ধান চাষাবাদে কোন সমস্যায় পড়তে হয়নি। এছাড়াও আমন চাষিদের সুবিধা-অসুবিধা দেখার জন্য আমাদের দপ্তরের সকল কর্মকর্তা/কর্মচারী সব-সময় তৎপর ছিলেন। ধানের বাম্পার ফলনের জন্য আমরা আন্তরিকভাবে চেষ্টা করি, সেই সুফলও পেয়েছি।
কৃষকরা জানিয়েছেন,এবছর আমনের ভালো ফলনের পাশাপাশি ভালো দামও পাওয়া যাবে। ইতোমধ্যেই বাজারে যারা আমন ধান বিক্রি করতে নিয়েছেন তারা ভালো দাম পেয়েছেন। তারা জানিয়েছেন, সরকার নিজের জন্য আমন ধান ও চাল কেনার যে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছেন, সে কারণেই এবার আমনের ভালো দাম পাবেন কৃষকরা।
Posted ৩:১৬ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২০
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta