হেলাল উদ্দিন,টেকনাফ :: অস্ত্র, মানব পাচার ও মাদক ব্যবসা নিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তার দখলদারিত্ব বজায় রাখাসহ নানামুখী জটিলতায় অস্থির হয়ে উঠেছে উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা শিবিরগুলো। রোহিঙ্গাভিত্তিক বিবদমান গ্রুপগুলোর মধ্যে প্রতিদিনই ঘটছে সংঘর্ষ ও প্রাণহানির মতো ঘটনা। গত দুইদিনে উখিয়া টেকনাফে রোহিঙ্গাদের নিজেদের গ্রুপ ভিত্তিক সংঘর্ষে নারী পুরুষ ৩ নিহত হয়েছে। এসব ঘটনায় আরো অন্তত দশ বিশজন আহত হয়েছে।
রোহিঙ্গাদের এ অভ্যন্তরীণ বিরোধে উদ্বিগ্ন এবং আতঙ্কিত স্থানীয়রা। এ অবস্থায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গুলোতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি জোরদার করার দাবি জানান স্থানীয়রা।আধিপত্য বিস্তার নিয়ে তাদের দুইটি গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলছিল অনেকদিন থেকে। এর আগেও দুই গ্রুপের মধ্যে ছোট-বড় বেশ কয়েকবার ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বাংলাদেশে ইয়াবা, অস্ত্র ও মানবপাচারসহ অন্যান্য মাদক বিস্তারে বড় ধরণের ভূমিকা রাখছে ক্যাম্পে থাকা রোহিঙ্গারা। আর পুলিশের তথ্য মতে, এর মধ্যে বিভিন্ন অভিযোগে দু’হাজারের বেশি রোহিঙ্গার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে প্রায় সাড়ে সাতশ। দায়েরকৃত মামলাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রয়েছে মাদক মামলা। যার সংখ্যা প্রায় সাড়ে চারশ। এর বাইরে রয়েছে ৬০টির বেশি খুনের মামলা এবং অন্তত ৬৫টি অস্ত্র মামলা।
প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, গত ৩ বছরের বেশি সময় ধরে টেকনাফ এবং উখিয়ার আশ্রয় শিবিরগুলোতে থাকা রোহিঙ্গারা খুন, ধর্ষণ, মাদক ও মানব পাচার এবং অস্ত্র ব্যবসার মতো অন্তত ১৫ রকমের অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। বিশেষ করে মাদক ও অস্ত্র ব্যবসা নিয়ে অভ্যন্তরীন বিরোধ চরম আকার ধারণ করেছে। প্রতি রাতেই ক্যাম্পগুলোতে শোনা যায় গুলির শব্দ।
উখিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী বলেন, মানবিক দিক বিবেচনা করে আমরা রোহিঙ্গাদের জায়গা দিয়েছি। এখন তারা সন্ত্রাসী কার্যকলাপের পাশাপাশি এলাকায় মাদক, অপহরণ ও মুক্তিপণ বাণিজ্য চালিয়ে আসছে। এতে করে স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কিত ও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। সন্ত্রাসী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর হওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে।
রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের নিরাপত্তা দায়িত্বে থাকা ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক আতিকুর রহমান বলেন, গত কিছুদিন ধরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রোহিঙ্গাদের দু’গ্রুপের মধ্যে একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শরণার্থী শিবিরের শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করার চেষ্টা চালানোদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
Posted ১১:০৪ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৬ অক্টোবর ২০২০
coxbangla.com | Chanchal Chy