কক্সবাংলা ডটকম(১৩ জুলাই) :: করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা কেলেঙ্কারির হোতা রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক মো. সাহেদ এখন মৌলভীবাজারে অবস্থান করছে বলে ধারণা করছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। এই জেলার যে কোনও সীমান্ত দিয়ে সে ভারতে পালিয়ে যেতে পারে এমন আশঙ্কা করছে তারা।
সোমবার (১৩ জুলাই) সাহেদের ফোন ট্র্যাক করে সকালে জেলার ভেতরে তার অবস্থান বুঝতে পারায় তার খোঁজে জেলাজুড়ে তল্লাশি চালাচ্ছে র্যাব ও পুলিশ। তবে এখনও সাহেদের খোঁজ মেলেনি। জেলার সব সীমান্ত, রিসোর্ট, হোটেল মোটেলেও বাড়ানো হয়েছে নজরদারি।
জানা গেছে, গোপন সূত্রে আইন শৃঙ্খলাবাহিনী খবর পায় যে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার চাতলাপুর সীমান্ত দিয়ে আজ বিকাল বা রাতে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে পারে রিজেন্ট হাসপাতাল কেলেঙ্কারির হোতা মো. সাহেদ। এ খবর পাওয়া মাত্র ওই এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে নজরদারি শুরু করেছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।
সোমবার বিকাল থেকে ভারতের ত্রিপুরাগামী সড়কের মৌলভীবাজার-চাতলাপুর সড়কের শমসেরনগর চৌমুহনী চত্বর ও লাউয়াছড়া সড়কের ফুলবাড়ি এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে যানবাহনে তল্লাশি চালায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
কমলগঞ্জ থানা পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ থেকে তাদেরকে জানানো হয়েছে ঢাকার রিজেন্ট হাসপাতালের করোনা কেলেঙ্কারি ঘটনার পলাতক প্রধান আসামি মো. সাহেদ এ পথে কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর সীমান্ত পথে ভারতের ত্রিপুরা যেতে পারেন এমন সংবাদ রয়েছে। তাই সতর্কতা স্বরূপ যানবাহন তল্লাশি করতে হবে। এ খবর পেয়ে সোমবার বিকাল ৫টার দিকে কমলগঞ্জ থানার শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক আনজির হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল শমশেরনগর চৌমুহনায় দাঁড়িয়ে যানবাহনগুলো তল্লাশি করেন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি সূত্র জানায়, সোমবার দুপুরে সাহেদের মুঠোফোন ট্র্যাক করে সে মৌলভীবাজার জেলায় অবস্থান করছে ঢাকা থেকে এমন তথ্য জানানো হয় মৌলভীবাজার জেলা পুলিশকে। সেজন্য পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনী সতর্ক হয়ে উঠে। এর পরপরই বিকাল থেকে শমশেরনগর ও শ্রীমঙ্গল উপজেলায় পুলিশি তৎপরতা বাড়ানো হয়।.
শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক (তদন্ত) অরুপ কুমার চৌধুরী বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা গেছে মো. শাহেদ চাতলাপুর সীমান্ত দিয়ে ভারতের ত্রিপুরা প্রবেশ করতে পারেন। তাই তাকে ধরার জন্য সতর্কতামূলক পুলিশ শমশেরনগরে নজরদারি চালাচ্ছে।
সোমবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টা পর্যন্ত পুলিশ সদস্যদের শমশেরনগর চৌমুহনায় দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে।
কমলগঞ্জ থানার ওসি আরিফুর রহমান বলেন, সাহেদ কমলগঞ্জে অবস্থান করছে কিনা তা জানা যায়নি। তবে পুলিশি তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
এদিকে শ্রীমঙ্গল থানার পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত মো. সোহেল রানা বলেন, সারাদিন র্যাবের পাশাপাশি পুলিশের অভিযান করেছে শ্রীমঙ্গল উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়। সাহেদ মৌলভীবাজারে আছে এমন তথ্য আছে, তবে কোথায় অবস্থান করছে তার সুনির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না।
মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মো. ফারুক আহমেদ আইসোলেশনে থাকায় তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। তবে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আশরাফুজ্জামান জানিয়েছেন, সাহেদকে গ্রেফতারের জন্য মূলত র্যাব এ অভিয়ান চালাচ্ছে। পুলিশ তাদের সহায়তা করছে। তবে সুনির্দিষ্টভাবে বলা সম্ভব নয় যে সাহেদ এখন মৌলভীবাজারেই আছে। তবে আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি।
উল্লেখ্য, গত ৬ জুলাই র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলমের নেতৃত্বে রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়। পরীক্ষা ছাড়াই করোনার সনদ দিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা ও অর্থ হাতিয়ে নিয়ে আসছিল তারা। র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত অন্তত ছয় হাজার ভুয়া করোনা পরীক্ষার সনদ পাওয়ার প্রমাণ পায়। একদিন পর গত ৭ জুলাই স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশে র্যাব রিজেন্ট হাসপাতাল ও তার মূল কার্যালয় সিলগালা করে দেয়। রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহেদসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে ওই দিনই উত্তরা পশ্চিম থানায় নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়। এরপর থেকে মো. সাহেদ পলাতক রয়েছেন।
Posted ১১:৫৪ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১৩ জুলাই ২০২০
coxbangla.com | Chanchal Chy