কক্সবাংলা ডটকম(১৫ জানুয়ারি) :: মাদক চোরাচালানের অভিযোগে এক কানাডীয় নাগরিককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন চীনের একটি আদালত। সোমবারের এ রায়কে ‘স্বেচ্ছাচারপ্রসূত’ হিসেবে অভিহিত করেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। এদিকে কানাডার এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে চীন। খবর রয়টার্স ও বিবিসি।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে কানাডার প্রধানমন্ত্রীকে সতর্ক করে বলা হয়, তিনি যেন ‘এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য না করেন’। চীনের ‘বিচার বিভাগের সার্বভৌমত্বকে’ সম্মান করার আহ্বান জানিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনিয়াং বলেন, ‘কানাডা সরকারের পক্ষ থেকে করা মন্তব্যগুলো দ্বিচারিতায় পরিপূর্ণ। বরং কানাডাই স্বেচ্ছাচারপ্রসূত হয়ে একজন চীনা নাগরিককে আটক করে রেখেছে।’ স্পষ্টত কানাডায় আটক হুয়াওয়ের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা (সিএফও) মেং ওয়ানঝুর দিকে ইঙ্গিত করেই অভিযোগের পাল্টা তীর বেইজিংয়ের।
কানাডীয় রবার্ট লয়েড শেলেনবার্গকে ২০১৮ সালে প্রথমে ১৫ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছিল। আপিল আদালত ওই সাজাকে ‘অপরাধের তুলনায় কম শাস্তি’ বর্ণনা করে সোমবার মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন। এ রায় উভয় দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ককে আরো অবনতির দিকে ঠেলে দিল।
কানাডা মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে চীনের টেলিকম জায়ান্টা ‘হুয়াওয়ে’র সিএফও মেংকে গ্রেফতার করলে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের অবনতির সূত্রপাত হয়। ২০০৯ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে মার্কিন নিষেধাজ্ঞাকে ফাঁকি দিয়ে ইরানের সঙ্গে এক সাবসিডিয়ারি কোম্পানির মাধ্যমে হুয়াওয়ে ব্যবসা পরিচালনা করেছে বলে অভিযোগ আনা হয়। স্পষ্টত যুক্তরাষ্ট্রের পরামর্শ ও অনুরোধে মেংকে আটক করেছে কানাডা।
হুয়াওয়ের প্রতিষ্ঠাতার কন্যা মেংকে গ্রেফতারের পর ক্ষোভ প্রকাশ করে চীন তার মুক্তির দাবি জানায়। ডিসেম্বরে কানাডার আদালত মেংকে জামিনে মুক্তি দিলেও কানাডা ত্যাগ না করার নির্দেশ দিয়েছেন। এমনকি তার বাড়ির সামনে পুলিশ পাহারা এবং তাকে নির্দিষ্ট সময় নিজ বাড়িতে অবস্থান করারও নির্দেশ দিয়েছেন। ৪৬ বছর বয়সী মেং তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো অস্বীকার করেছেন।
মেংকে গ্রেফতার নিয়ে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে অবনতির মধ্যেই চীনে কানাডীয় শেলেনবার্গকে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার এ রায় এল। ২০১৪ সালে চীনে ২২৭ কেজি মেথঅ্যামফেটামিন পাচারের চক্রান্ত করার অভিযোগে শেলেনবার্গকে গ্রেফতার করা হয়।
চার বছর ধরে বিচারের পর ২০১৮ সালের নভেম্বরে তাকে ১৫ বছরের কারাদণ্ড দেন চীনের একটি আদালত।
সোমবার ডালিয়েন উচ্চ আদালত ওই রায় বাতিল করে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন এবং তার সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে ১০ দিনের মধ্যে আপিল করার সুযোগ পাবেন শেলেনবার্গ।
সোমবার রায় ঘোষণার আগে শেলেনবার্গ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি মাদক চোরাচালানি নই। আমি একজন পর্যটক হিসেবে চীনে এসেছিলাম।’
কারো কারো মতে, মেংয়ের গ্রেফতার নিয়ে দরকষাকষি করতে চীন কানাডার নাগরিক শেলেনবার্গকে ব্যবহার করছে। যদিও চীন এ অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেছে, শেলেনবার্গের বিচার প্রক্রিয়া আইন মেনেই হয়েছে।
Posted ২:০২ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ১৬ জানুয়ারি ২০১৯
coxbangla.com | Chanchal Chy