নজরুল ইসলাম, কুতুবদিয়া :: ঝুঁকি জেনেও কুতুবদিয়া চ্যানেল পারাপারে স্পীড বোটে ঝুঁকছেন যাত্রীরা। ঘাটে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে স্পীড না ভীড়তেই যাত্রীরা ড্রাইভারকে হাত দেখাচ্ছেন। কেউ কেউ হাতের আঙুল দিয়ে ইশারা করছেন।
যাত্রীরা স্পীড বোট থেকে নামার আগেই অনেকই ঝুঁকি নিয়ে হুড়োহুড়ি করে উঠে যাচ্ছেন। এসময় কোন যাত্রীর গায়ে লাইফ জ্যাকেটের দেখা মেলেনি।
কুতুবদিয়া চ্যানেল পাড়ি দিতে স্পীড বোটে সময় লাগে ৫ থেকে ৭ মিনিট। আর ডেনিশ বোটে লাগে ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট। সময়টা জোয়ার ভাটার উপর নির্ভর করে কম বেশি হতে পারে। ভাড়া হিসেব করে স্পীড বোটে পার হতে হলে ডেনিশ বোটের ৩গুণ ভাড়া গুনতে হয়। ডেনিশ বোটে ৪০টাকা। স্পীড বোটে ১২০।
যদিও অতিরিক্ত ভাড়া। লাইফ জ্যাকেট ছাড়া ঝুঁকিও বেশি। তারপরও কেন যাত্রীরা স্পীড বোটে ঝুঁকছে?
কথা বলেছি বেশ কয়েকজন যাত্রীর সাথে। তাঁরা জানান, জরুরি কাজে বাইরে যেতে হয়। তাই সময় বাঁচানোর জন্য তাঁরা স্পীড বোট পছন্দ করেন। যদিও খরচ একটু বেশি। সময় সাশ্রয় হয়। এ সুযোগটাকে কাজে লাগিয়েছেন ইজারাদার কর্তৃপক্ষ। ঘাটে বাড়িয়েছেন স্পীড বোটের সংখ্যা।
তবে আবহাওয়া খারাপ হলে স্পীড বোট বন্ধ থাকে বলে জানান।
অতিরিক্ত ভাড়ার বিষয়ে তাদের তেমন কোন অভিযোগ নেই যাত্রীদের। স্থানীয় প্রশাসন ও নেতাদের প্রতি ক্ষোভ দেখা গেছে তাঁদের কথায়। তাদের মতে স্থানীয় প্রশাসন ও নেতৃবৃন্দরা চাইলে একটা ব্যবস্থা করতে পারতেন।
খালেক নামের এক যাত্রী জানান, ডেনিশ বোটে পার হতে সময় লাগে। এটা বিরক্তিকর। ইঞ্জিনের বিকট আওয়াজ বিরক্তিকে আরও বাড়ায়। অনেকসময় ড্রাইভারগুলো ইচ্ছে করে দেরি করে। বিরক্তি চলে আসে। যাতে মানুষ স্পীড বোটে যায়।
ইছহাক নামের একজন জানান, প্রায় সময় ডেনিশ বোটগুলো সময়ের ১০ মিনিট আগেই ছেড়ে দেয়। যাতে যাত্রীরা স্পীড বোটে যেতে বাধ্য হয়।
রিদুয়ান নামের একজন এনজিও কর্মকর্তা জানান, সময় বাচাতে স্পীড বোটকে বেছে নিচ্ছেন যাত্রীরা। ভাড়া কিছুটা কমানো হলে এটা আরও জনপ্রিয়তা পেত বলে মনে করেন তিনি।
কুতুবদিয়া আদালতের আইনজীবী এস,এম, সাইফুল্লাহ খালেদ জানান,ডেনিস বোটে সময়ের বিডম্বনা। স্পীট বোটে দ্রুত সময়ে পারাপার। অপেক্ষা করতে হয় না। সময় সাশ্রয় ইত্যাদি কারণে স্পীচ বোটে ঝুকঁছে যাত্রীরা।
তবে বেশির ভাগ যাত্রী মনে করেন, কুতুবদিয়া চ্যানেল পারাপারে ডেনিশ বোট-৪০ টাকা এবং স্পীড বোটে ১২০ টাকা নেয়া অন্যায় হচ্ছে। কারণ দেশের অন্যান সকল পারাপার ঘাটে দুরত্ব বিবেচনায় এরচেয়ে অনেক কম ভাড়া নেয়া হয়। তাদের মতে দুই পাড়ে আবার দু’বার জেটি ভাড়া আদায় করা হয়। সেটাও দৃষ্টিকটু।
সচেতন মহল জানান, ঘাটগুলো ইজারা দিয়ে সরকার প্রচুর পরিমাণ রাজস্ব আদায় করছে। কিন্তু সে তুলনায় ঘাটের অবকাঠামোগত উন্নয়ন হচ্ছে না। দ্বীপের আলী আকবর ডেইল ঘাট, দরবার ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাট ঝুঁকিপূর্ণ। ইজারাদার কর্তৃপক্ষ পক্ষ তাদের বিনিয়োগের টাকা তুলতে ব্যস্ত।
এ বিষয়ে ইজারাদার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ঘাটের ইজারা নিতে যে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করেছেন তা পুষিয়ে নিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। প্রতিমাসে কয়েক লাখ টাকা ক্ষতি গুনতে হচ্ছে।
Posted ৮:৪৫ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩
coxbangla.com | Chanchal Chy