এম.জিয়াবুল হক,চকরিয়া(৯ অক্টোবর) :: চকরিয়া উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নে চিংড়িঘের কর্মচারী নুরুল ইসলাম হত্যা মামলা থেকে বাদ যেতে এজাহারনামীয় আসামিরা মোটা অঙ্কের টাকার মিশন নিয়ে নানাভাবে তদবির চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
বিশেষ করে মামলার অন্যতম আসামি কোরালখালী পশ্চিমপাড়া গ্রামের বশির আহমদের ছেলে আবদুস শুক্কুর প্রকাশ কানা শুক্কুরকে বাঁচাতে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল ইতোমধ্যে দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছে বলে দাবি তুলেছেন স্থানীয় লোকজন।
বিষয়টি নিয়ে রামপুর চিংড়িজোনে ঘের মাালিক-চাষী ও চোঁয়ারফাড়ির বাজারের ব্যবসায়ী এবং স্থানীয় এলাকাবাসির মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় লোকজনের দাবি, দুইটি হত্যা মামলার আসামি শুক্কুর মামলা থেকে কোনভাবে বাদ গেলে সে আবারও পুরানো পেশায় ফিরে যাবে। এতেকরে চিংড়িজোনের পাশাপাশি এলাকার জনগনের মাঝে ফের অশান্তি ও আতঙ্ক সৃষ্ঠি হবে।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নের কোরালখালী পশ্চিমপাড়া গ্রামের নুরুল আলমের ইজারা নেয়া রামপুর চিংড়িজোনের একটি চিংড়িঘেরে মাসিক বেতনে চাকুরী করতেন একই ইউনিয়নের দক্ষিন কোরালখালী গ্রামের মৃত ওয়াহেদ আলীর ছেলে নুরুল ইসলাম (৫৫)।
মাছ ডাকাতির জন্য চলতিবছরের ২৩ জুলাই রাতে ওই চিংড়িঘেরে ১০-১৫জনের অস্ত্রধারী হানা দেয়। এসময় অস্ত্রধারীরা ঘেরটির ইজারাদার নুরুল আলম ও কর্মচারী নুরুল ইসলামকে মাছ ধরার সময় আটকিয়ে বেদম প্রহার করে। এক পর্যায়ে অস্ত্রধারীরা এলোপাতাড়ি গুলি করলে ঘটনাস্থলে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন কর্মচারী নুরুল ইসলাম।
এ ঘটনায় ২৫ জুলাই চকরিয়া থানায় নিহত নুরুল ইসলামের স্ত্রী আছমা খাতুন বাদি হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে আসামি করা হয় সাহারবিল ইউনিয়নের রামপুর এলাকার মনজুর বলীর ছেলে সেকাব উদ্দিন, কোরালখালী পুর্বপাড়া গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে আবদুল হামিদ, আনোয়ার হোসেনের ছেলে রাজীব, জাগের আহমদের ছেলে কাইছার, কোরালখালীর দক্ষিনপাড়ার মৃত মোহাম্মদ ইছহাকের ছেলে নুরুল কাদের, কোরালখালী পশ্চিমপাড়ার মনছুর আলীর ছেলে তৌহিদুল ইসলাম, পুর্ববড় ভেওলা ইউনিয়নের ঈদমনি গ্রামের ছৈয়দ নুরের ছেলে বাবুল, সাহারবিল কোরালখালী পশ্চিমপাড়ার বশির আহমদের ছেলে আবদু শুক্কুর, একই এলাকার কাইছার ও নুরুল আলমের ছেলে জুনাইদকে। এছাড়াও মামলায় আরো ৪-৫জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
মামলাটি রুজু হওয়ার পর ইতোমধ্যে তদন্ত কর্মকর্তা চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলা থেকে এজাহারনামীয় আসামি রুহুল কাদেরকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে।
এলাকাবাসি ও ঘের মালিক-চাষীরা জানিয়েছেন, আবদুস শুক্কুর প্রকাশ কানা শুক্কুর রামপুর চিংড়িজোনের অঘোষিত স¤্রাট। কানা শুক্কুর ২০১০ সালের ৯ জানুয়ারী রামপুর চিংড়িজোনে খুন হওয়া রামপুর উমখালী গ্রামের দুলা মিয়ার ছেলে চিংড়িঘের ইজারাদার আবদুল হামিদ হত্যা মামলারও অন্যতম আসামি।
চিংড়িঘেরে হামলা, জবরদখল, লুটপাট ও হত্যাসহ নানা অপরাধ কর্মের অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে সংগঠিত ঘটনায় অন্তত আরো ১১টি মামলা রয়েছে। বর্তমানে এসব মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
এদিকে রামপুর চিংড়িজোনের একাধিক ঘের মালিক-চাষী ও আতঙ্কিত এলাকাবাসি অবিলম্বে নুরুল ইসলাম হত্যা মামলার অভিযুক্ত আসামিকে গ্রেফতার পুর্বক শাস্তি নিশ্চিতের জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পুলিশের আইজি, র্যাবের প্রধান, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি, জেলা পুলিশ সুপার ও থানার ওসিসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার উর্ধবতন মহলের কাছে হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
Posted ১২:১৩ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১০ অক্টোবর ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Chy