কক্সবাংলা ডটকম(২৭ জুন) :: লাদাখে চিনা আগ্রাসন পাল্টে দিয়েছে যাবতীয় সমীকরণ। ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক আরও মজবুত করতে তৎপর আমেরিকা। ভারতীয় বায়ুসেনার পাইলটদের প্রশিক্ষণ দিতে তৈরি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এমনকী সামরিক ক্ষেত্রেও ভারতকে একাধিক সহযোগিতার বার্তা আমেরিকার।
লাদাখের গালওয়ান সীমান্তে লাল ফৌজের চোখরাঙানি জারি রয়েছে। মুখে ভারতীয় ভূখণ্ড থেকে সরে যাওয়ার কথা বললেও ঠিক তার উল্টো পথেই চলছে বেজিং।
উপগ্রহ চিত্রে পরিস্কার, গালওয়ানে এখনও ঘাঁটি গেড়ে রয়েছে চিনা সেনা। যার দরুণ নিজেদের ভূখণ্ডেই নিয়মিত টহলদরিতে যেতে পারছে না ভারতীয় সেনাবাহিনী।
যদিও কূটনৈতিকস্তর ও সামরিকস্তরে এখনও আলোচনার মাধ্যমেই জটিলতা কাটানোর পথে দিল্লি ও বেজিং।
এরই মধ্যে ভারতের পাশে দাঁড়াল আমেরিকা। ভারতীয় বায়ুসেনার পাইলটদের প্রশিক্ষণ দিতে তৈরি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
এশিয়া মহাদেশে চিনের আগ্রাসন রুখতে বিশেষ একটি বিল সেনেটে পেশ করে ট্রাম্প প্রশাসন। বিলটি আইনে পরিণত হলেই ভারত, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার বায়ুসেনার পাইলটদের প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে মার্কিন ফৌজের ঘাঁটি গুয়ামে প্রশিক্ষণ দেওয়া যাবে।
কূটনীতিবিদদের মতে, এশিয়া মহাদাশে বরাবরের চিনা চোখরাঙানি শুরু থেকেই ভালো চোখে নেয়নি আমেরিকা। তবে সরাসরি এব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ নানা কূটনৈতিক জটিলতার জেরে তারা করতেও পারেনি। তবে এবার ভারতীয় ভূখণ্ডে অবৈধভাবে চিন ঢুকে পড়ায় সমীকরণ বদলেছে।
চিনকে ঘিরে ফেলতে তৎপর হয়েছে আমেরিকা। সেই কারণেই ভারত, জাপান, সিঙ্গাপুর ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বিশেষ সামরিক বলয় বানাতে তৎপর মার্কিন যুক্ররাষ্ট্র। যেকোনওভাবে এবার চিনকে বেকায়দায় ফেলতে কোনও কসুর ছাড়তে নারাজ ওয়াশিংটন।
গালওয়ান উত্তপ্ত পরিস্থিতির জেরে আকাশপথে চীনের সম্ভাব্য যে কোনো হামলা রুখতে ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য এই ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। সরকারি ভাবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় কিছু না বললেও, সরকারি সূত্রকে উদ্ধৃত করে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদসংস্থা এএনআই।
প্রসঙ্গত, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর এরই মধ্যেই শক্তি বাড়িয়েছে চীন। সুখোই-৩০ এর মতো যুদ্ধবিমান এলএসি থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে দেখা গেছে। পিছিয়ে নেই ভারতও। দেশটির বিমান বাহিনী প্রধান লে-শ্রীনগরে বিমান ঘাঁটি পরিদর্শনের পর পরই গালওয়ান উপত্যকার আকাশে ভারতীয় যুদ্ধবিমান দেখা গেছে। বিমান বাহিনীকে চূড়ান্ত সতর্কবার্তায় সবরকম পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফরওয়ার্ড বিমান ঘাঁটিগুলোতে যুদ্ধবিমান মোতায়েন করে প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
আকাশপথে তৎপরতা দেখাতে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর আকাশে উড়তে দেখা গিয়েছে চিনুক কার্গো, অ্যাপাচি, পি-৮ সার্ভেইলেন্স এয়ারক্র্যাফ্টের মতো একাধিক সামরিক হেলিকপ্টার। গালওয়ান উপত্যকায় ভারত-চীন সেনা সংঘর্ষের পর থেকেই ওই এলাকায় বেশি বাহিনী, সরঞ্জাম ও রসদ পাঠাতে শুরু করেছে ভারতীয় সেনা। এমনকী বিশ্বের সবচেয়ে বড় ট্যাকটিক্যাল এয়ারলিফ্টার বিমান সি-১৩০ জে হারকিউলিকেও লাদাখের আকাশে দেখা গেছে। দৌলত বেগ ওল্ডির বিমানঘাঁটিতে নেমেই আবার তা উড়ে চলে গেছে।
প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, স্থলসেনা মোতায়েনের পাশাপাশি এবার এয়ার ডমিন্যান্স শুরু করেছে ভারত। অর্থাৎ, প্রতিপক্ষের দিক থেকে কোনো আগ্রাসনের চেষ্টা হলেই আকাশপথে জবাব দেওয়া হবে। যদি চীনের তরফে পাল্টা বিমান হামলার চেষ্টা হয়, তা রুখতেই এই বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র বসানো হচ্ছে।
Posted ১১:২১ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২৭ জুন ২০২০
coxbangla.com | Chanchal Chy