কক্সবাংলা ডটকম(৫ ফেব্রুয়ারি) :: চিনে ক্রমে মহামারির আকার নিয়েছে করোনা ভাইরাস। শ্বাসকষ্ট জনিত এই রোগ ছড়ানোর ভাইরাস ঘিরে বিশ্ব কাঁপছে। চিনের প্রতিবেশী মঙ্গোলিয়া, রাশিয়া, নেপাল, রাশিয়া, ম্যাকাও, জাপান, মায়ানমার, ভারত, পাকিস্তান সহ আরও কিছু দেশে প্রবল আতঙ্ক। এখনো পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৫০০ জন। ২০ হাজারের বেশি আক্রান্ত।
এদিকে চিনা জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের রিপোর্ট, মঙ্গলবার নতুন করে ৬৫ জনের মৃত্যু হয়। এতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৯০ জনে পৌঁছেছে। আর বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার রিপোর্ট বুধবার সকালে সেই সংখ্যা ৫০০ জনে গিয়ে ঠেকল। করোনা ভাইরাসের ভয়ে চিন সংলগ্ন একের পর এক দেশের সীমান্ত বন্ধ হতে শুরু করেছে। ক্রমে আন্তর্জাতিক দুনিয়া থেক বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে চিন।
বিবিসি, আল জাজিরা, চিনা সংবাদ মাধ্যম জিনহুয়া সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থার খবর, বুধবার প্রায় ৫০০ জনের কাছাকাছি পৌঁছেছে মৃতের সংখ্যা। অচিরেই এই সংখ্যা আরও বাড়বে। চিনের প্রতিবেশী সবকটি রাষ্ট্রে ছড়িয়েছে প্রবল ভয়। কারণ করোনা ভাইরাসের মারাত্মক সংক্রমণ। চিনের পর সব থেকে বেশি মৃতের সংখ্যা জাপানে। ২০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে এই দেশে। জাপানি সংবাদ মাধ্যমগুলি।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, জাপানের একটি ক্রুজ শিপে আরও ১০ জন করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হয়েছেন। রয়টার্স জানাচ্ছে এই খবর। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু জানাচ্ছে, চিন থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ২০টির বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। চিনে এটি মহামারির আকার নিলেও বাকি দেশগুলিতে সেই পরিস্থিতি এখনও তৈরি হয়নি। হু রিপোর্টে বলা হয়েছে, যখন বিশ্বজুড়ে অসংখ্য মানুষ কোনও সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হন, তখনই বিশ্ব মহামারি হয়। যেমন ২০০৯ সালের সোয়াইন ফ্লু।
তাতে মৃত্যু হয় কয়েক লক্ষ মানুষের। বিবিসি ও চিনের সরকারি সংবাদপত্র পিপলস ডেইলির খবর, ভয়ঙ্কর করোনাভাইরাস সংক্রমণের কেন্দ্রবিন্দু উহান শহর। এটি হুবেই প্রদেশের অন্যতম এলাকা। এখানে থাকা শত শত বিদেশি নাগরিককে সরিয়ে নেয়া শুরু হয়েছে।
আন্তর্জাতি বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য মতে, বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল পর্যন্ত ভয়াবহ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৯০ জনে। উহানে এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নামকরা ৬ হাজারের অধিক চিকিৎসক জড়ো হয়েছেন। মূলত এখান থেকেই ভাইরাসটি ছড়িয়েছিল। আর সবমিলিয়ে চীনে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২৪ হাজারে পৌঁছেছে। যদিও বেসরকারি হিসাবে এই সংখ্যা আরও বেশি।
বর্তমানে থাইল্যান্ড, তাইওয়ান, জাপান, যুক্তরাজ্য, ইসরায়েল, দক্ষিণ কোরিয়া এবং ভারতসহ বেশকিছু দেশে অজ্ঞাত এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা গেছে। তাছাড়া আতঙ্কে রয়েছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তানও। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রেও ভাইরাসে আক্রান্ত এক ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়েছে। আক্রান্তদের সবাই সম্প্রতি চীনে ভ্রমণ করেছেন কিংবা সেখানে বসবাস করেন।
এ দিকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় মাত্র ১০ দিনে নতুন একটি হাসপাতাল নির্মাণ করেছে চীন। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) থেকে রোগীদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালটি উন্মুক্ত করা হয় বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। খবর সিএনবিসি।
অপরদিকে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এ ভাইরাস মানুষ ও প্রাণীদের ফুসফুসে সংক্রমণ করতে পারে। ভাইরাসজনিত ঠাণ্ডা বা ফ্লুর মতো হাঁচি-কাশির মাধ্যমে মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়ে পড়ছে করোনা ভাইরাস। এ ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার প্রধান লক্ষণগুলো হলো- শ্বাসকষ্ট, জ্বর, কাশি, নিউমোনিয়া ইত্যাদি। শরীরের এক বা একাধিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিষ্ক্রিয় হয়ে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হতে পারে।
সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয় হলো ভাইরাসটি নতুন হওয়ায় এখনো কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। এ ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় সংক্রমিত ব্যক্তিদের থেকে দূরে থাকা। তাই মানুষের শরীরে এমন উপসর্গ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চীনা বিজ্ঞানীরা।
Posted ৪:১৭ অপরাহ্ণ | বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০
coxbangla.com | Chanchal Chy