কক্সবাংলা ডটকম(১৮ নভেম্বর) :: ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রথমবারের মতো মালদ্বীপ সফর করছেন। ভারত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্রটির নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার জন্য শনিবার এ রাষ্ট্রীয় সফরে গেছেন নরেন্দ্র মোদি।তার এ সফরের মাধ্যমে ইঙ্গিত সুস্পষ্ট, চীন ছেড়ে ভারতমুখী হচ্ছে প্রতিবেশী দ্বীপরাষ্ট্রটি।
২০১১ সালের পর প্রথম কোনো ভারতীয় সরকারপ্রধান মালদ্বীপ সফরে গেলেন। মালদ্বীপের বিরোধী জোট থেকে নির্বাচিত প্রার্থী ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন মোদি। চীনপন্থী প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিনকে নির্বাচনে ধরাশায়ী করার পর ভারতমুখী হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে বিরোধী জোট।
সলিহের সরকার দক্ষিণ এশীয় দ্বীপরাষ্ট্রটিতে গত সেপ্টেম্বর থেকে চলা অনিশ্চয়তার অবসান ঘটাতে চায়। বিরোধী রাজনীতিবিদ, বিচারকদের আটক করে রাখার কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ইয়ামিন সরকারের সমালোচনা করা হয়। দক্ষিণ এশীয় প্রতিবেশী শ্রীলংকা ও পাকিস্তানের মতো চীন থেকে বিশাল অংকের ঋণ গ্রহণ করায় ঋণভারে জর্জরিত দ্বীপরাষ্ট্রটি। চীনা তত্পরতার সমালোচনা করে আসছিল বিরোধী জোট এবং জয়ী হলে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলো পুনর্বিবেচনা করা হবে বলে ঘোষণা দেয়।
মোদির মালদ্বীপ সফর নিয়ে নয়াদিল্লিভিত্তিক পর্যবেক্ষক সংস্থা অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের গবেষক কে ইয়োম বলেন, ‘মালদ্বীপে হারিয়ে ফেলা নিজেদের অবস্থান ফিরে পাচ্ছে ভারত।’ তিনি আরো বলেন, ‘নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদি অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে এই বার্তা দেয়া হচ্ছে মালদ্বীপের নতুন সরকারকে সমর্থন করে ভারত।’
তবে দায়িত্ব গ্রহণের পর সলিহ কেমন আচরণ করে, তা পর্যবেক্ষণ করার দরকার রয়েছে বলে মনে করেন ওই আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক।
বিরোধী জোট থেকে সলিহের বিজয় যেখানে মালদ্বীপে ইতিবাচক বার্তা হিসেবে দেখা দিয়েছে, সেখানে অন্য প্রতিবেশী দেশ শ্রীলংকা গভীর রাজনৈতিক সংকটে পড়েছে। গত মাসে দেশটির প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহেকে অপসারণ করে চীনপন্থী হিসেবে পরিচিত মাহিন্দা রাজাপাকসের হাতে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব অর্পণ করেন।
বিক্রমাসিংহের নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোট সিরিসেনার এ পদক্ষেপের বিরোধিতা করছে। চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে পড়েছে সিরিসেনা ও রাজাপাকসে জোট।
দক্ষিণ এশিয়ায় অবকাঠামো উন্নয়নের নামে চীনা প্রভাব বৃদ্ধি ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার ঐক্যবদ্ধ অবস্থানের প্রতিফলন ঘটেছে মোদির মালদ্বীপ সফরের মাধ্যমে। চার দেশের এ কূটনীতিক জোটকে অনানুষ্ঠানিকভাবে ‘কোয়াড’ বলা হয়।
সিঙ্গাপুরে দেশ চারটির বৈঠকের পর যুক্তরাষ্ট্রের পাঠানো একটি বিবৃতিতে মালদ্বীপের নতুন সরকারের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করা হয় এবং শ্রীলংকা গণতান্ত্রিক রীতির প্রতি সম্মান জানাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।
হিন্দুস্থান টাইমস ও ব্লুমবার্গ
Posted ১০:৫৪ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ১৮ নভেম্বর ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Chy