হেলাল উদ্দিন,টেকনাফ(২৪ জুলাই) :: কক্সবাজারের টেকনাফে ২৪ ঘন্টা পেরোতে না পেরোতেই এবার বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে দুইজন রোহিঙ্গা মাদক কারবারি নিহত হয়েছেন। এঘটনায় বিজিবির তিনজন সদস্য আহত হয়ে বলে জানিয়েছেন বিজিবি।
নিহত দুজন হলেন-উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির ০১, ব্লকের এইচ/২০ বাসিন্দা মৃত সৈয়দ আহমদের ছেলে মোঃ আব্দুস সালাম (৩৫) ও একই শিবিরের ব্লকের এইচ/২০ বাসিন্দা মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ ছেলে মোহাম্মদ ফেরদৌস (৩০) ।
বিজিবি দাবি, নিহত দুজন মাদক ব্যবসায়ী ও মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিক। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ২লাখ ১০হাজার পিস ইয়াবা বড়ি,১টি দেশীয় তৈরী অস্ত্র ও ১ রাউন্ড তাজা কার্তুজ এবং ১টি ধারালো কিরিচ উদ্ধার করা হয়েছে।
শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের লেদার মোছনির লবণ মাঠ সংলগ্ন ছুরিরখাল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে
এনিয়ে গত ৪৮ ঘন্টায় পুলিশ ও বিজিবির সাথে পৃথক বন্দুকযুদ্ধে’ উখিয়ার এক ইউপি সদস্য ও ৩ জন রোহিঙ্গা ইয়াবা ব্যবসায়ী নিহত হলো।
এর আগে ২৪ জুলাই শুক্রবার রাত ২টার দিকে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের ওয়াব্রাং এলাকায় পুলিশের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের কুতুপালং এলাকার মৃত কালা মিয়ার ছেলে বর্তমান ইউপি মেম্বার বখতিয়ার আহমদ প্রকাশ বখতিয়ার মেম্বার (৫৫) ও কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প ই-ব্লকের ইউসুফ আলীর ছেলে মো: তাহের (২৭) নিহত হয়। এসময় ৪ পুলিশও আহত হয়। এসময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ৫টি দেশীয় তৈরি এলজি, ১৭ রাউন্ড কার্তুজ, ১৩ রাউন্ড কার্তুজের খোসা , ১০ লাখ নগদ টাকা এবং ২০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করে। পুলিশ বলেছে তারা দুজনই ইয়াবা কারবারী।
টেকনাফে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-২ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ ফয়সল হাসান খান শুক্রবারের বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা নিশ্চিত করে জানান, মিয়ানমার থেকে ইয়াবার একটি বড় চালান পাচার হওয়ার গোপন সংবাদ পেয়ে বিজিবি। তারই সূত্র ধরে, উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের লেদা সীমান্ত চৌকির একটি বিশেষ টহলদল মোছনি লবণ মাঠ সংলগ্ন এলাকায় চোরাচালান বিরোধী টহল দিচ্ছিলেন।
এই সময় দূর থেকে ২-৩জন ব্যক্তি সাতরিয়ে নাফনদী পার হয়ে বেড়িবাঁধে উঠতে দেখে। টহলদল তাদের চ্যালেঞ্জ করলে বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে সশস্ত্র ইয়াবা কারবারিরা অতর্কিতভাবে গুলি ছোড়ে। এতে বিজিবি তিনজন সদস্য আহত হন। আত্মরক্ষার্থে বিজিবিও পাল্টা গুলি ছোড়ে। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে ৪-৫ মিনিটের মতো গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে।
এক পযার্য়ে ইয়াবা কারবারিরা গুলি করতে করতে পার্শ্ববর্তী গ্রামের দিকে পালিয়ে যায়। গোলাগুলি থামার পর টহলদল ঘটনাস্থল তল্লাশি চালিয়ে ২লাখ ১০হাজার পিস ইয়াবা বড়ি, ১টি দেশীয় তৈরী অস্ত্র ও ১ রাউন্ড তাজা কার্তুজ এবং ১টি ধারালো কিরিচসহ গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দুজনকে উদ্ধার করে। গুলিবিদ্ধ দুজন ও বিজিবির তিনজন সদস্যকে দ্রুত টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার দুইজনকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা তাদের পরিচয় শনাক্ত করেছেন।
টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক মোহাম্মদ নাসিম ইকবাল বলেন, রাতে বিজিবি পাঁচজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সাধারণ পোশাকে থাকা দুজনের শরীরে তিনটি গুলির চিহ্ন দেখা গেছে। তাদের অবস্থা ছিল আশঙ্কাজনক । তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পোশাক পরিহিত বিজিবি সদস্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সকালে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বিজিবির অধিনায়ক আরও বলেন, গুলিবিদ্ধ দুই জনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর জরুরী বিভাগের চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেছেন। লাশ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
Posted ১:৫৩ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ২৫ জুলাই ২০২০
coxbangla.com | Chanchal Chy