হুমায়ূন রশিদ,টেকনাফ(২৩ অক্টোবর) :: টেকনাফে ধান-চাষাবাদে বাম্পার ফলন দেখা দেওয়ায় কৃষকদের মুখে হাসির ঝিলিক দেখা দিলেও রোহিঙ্গাদের কারণে স্থানীয় চাল বাজারে চালের দাম কমে আসায় বাণিজ্যিক আমন ধান চাষীরা ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি নিয়ে হতাশ হয়ে পড়ছে। এমতাবস্থা বিরাজমান থাকলে বাণিজ্যিক চাষাবাদ বন্ধ হওয়ার আশংকা করা হচ্ছে।
জানা যায়, টেকনাফে উপজেলার ১৮ হাজার ৪শ কৃষক পরিবারের বেশীর ভাগই চলতি আমন মৌসুমে হোয়াইক্যং ইউনিয়নে ৬হাজার ৭শ ২৪ হেক্টর, হ্নীলা ইউনিয়নে ১ হাজার ৩শ ৫৫ হেক্টর, টেকনাফ সদর ইউনিয়ন ৯শ ৫ হেক্টর, সাবরাং ইউনিয়ন ৭শ ১৬ হেক্টর, বাহারছড়া ইউনিয়ন ১ হাজার ১শ হেক্টর, সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন ৬০ হেক্টর, টেকনাফ পৌরসভায় ১০ হেক্টরসহ আমন মৌসুমে ১০ হাজার ৮শ ৭০ হেক্টর জমিতে উফশী, হাইব্রীড ও স্থানীয় প্রজাতির ধান চাষাবাদ করা হয়।
যাতে চালের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ২৮ হাজার ৮শ ৪ মেট্টিকটন। আরো অতিরিক্ত ১০ হেক্টর বেশী জমিতে চাষাবাদ হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা আরো বাড়বে।
উপজেলা কৃষি অফিস সুত্র, চালের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সাফল্যের আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তবে স্থানীয় বাজারে চালের মূল্য কমে আসায় কিছু করার নেই বলে মনে করেন।
এদিকে মাঠে ধানের বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকেরা যেমন খুশি হয়েছেন ; তেমনি স্থানীয় বাজারে চালের দাম কমে যাওয়ায় ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি হতে বঞ্চিত হওয়ার আশংকায় হতাশ হয়ে পড়েছেন বাণিজ্যিক ধান চাষীরা।
এই বিষয়ে উপজেলার কয়েকজন চাল ব্যবসায়ী জানান, উখিয়া-টেকনাফে প্রায় ৩০টি রোহিঙ্গা ক্যাম্প রয়েছে। এসব ক্যাম্পে ত্রাণ হিসেবে বিতরণকৃত চাল স্বল্পমূল্যে স্থানীয় বাজারে বিক্রি হওয়ায় সাধারণ মানুষ উপকৃত হলেও সাধারণ চাল ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত দিতে হচ্ছে। যার কারণে অনেক চালের দোকান বন্ধ হয়ে গেছে।
হোয়াইক্যং নয়া বাজারের কৃষক আব্দুল মজিদ জানান, প্রতি কানি জমি চাষ করতে শ্রমিক, বীজ, সার, জমি লাগিয়তসহ ১৫ হাজার ৬শ টাকা খরচ হয়। যারা খোরাকের জন্য ধান চাষাবাদ করে থাকেন তারাই কোন প্রকারে সহনীয় থাকবে। আর যারা বাণিজ্যিক চাষ করেন তারা চরম ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। হ্নীলা পূর্ব পানখালীর কৃষক খলিল আহমদ বলেন, ৩৫ কানি জমি চাষ করেছি।
এতে ৫ লক্ষ সাড়ে ৩৪ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আনুমানিক ৬শ সাড়ে ১২মণ ধান পেতে পারি। প্রতিমণ ধান ৪শ ৮০টাকা খরচ হলে যার বাজার মূল্য ২লক্ষ ৯৩হাজার ৭শ ৬০টাকা। আর চাষাবাদে ঘাটতি থাকে ২লাখ ৪০হাজার ৭শ ৪০ টাকা। ধান চাষাবাদে এই অবস্থা বিরাজমান থাকলে বাণিজ্যিক ধান চাষীরা আস্থা হারিয়ে হতাশ হয়ে পড়বে।
টেকনাফের বাণিজ্যিক ধান চাষীরা সাধারণ মানুষ কমমূল্যে চাল খাওয়া নিয়ে সন্তুষ্ট হলেও চাষাবাদে ব্যাপক আর্থিক ক্ষতিতে অস্থির হয়ে উঠেছে। উপরোক্ত বিষয়ে কৃষকেরা সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
Posted ৪:৪৩ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২৩ অক্টোবর ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Chy