কক্সবাংলা ডটকম(২১ জুলাই) :: ডিমের মতো সস্তায় পুষ্টিকর আর একটি খাবারও আপনি খুঁজে দেখাতে পারবেন না। তাই ভারত সহ সারা পৃথিবীতেই ডিমের চাহিদা রয়েছে তুঙ্গে। ৮ থেকে ৮০, সবাই এই খাবারের স্বাদে মশগুল।
তবে আজকাল কথায় কথায় ডিম নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক বিতর্ক তৈরি হয়। এই যেমন একদল বোদ্ধার কথায়, ডিমের কুসুমের তুলনায় নাকি সাদা অংশ বেশি উপকারী। আর এর বিপরীতে একদল বুদ্ধিজীবী জানাচ্ছেন যে, ডিমের সাদা অংশ উপকারী ঠিকই, তবে তার থেকেও নাকি খাদ্যগুণ সমৃদ্ধ হল ডিমের কুসুম।
আর এই ধরনের বিপরীতমুখী বক্তব্য শুনেই জনসাধারণের চোখের জলে-নাকের জলে অবস্থা। তাঁরা বুঝতেই পারছেন না ডিমের সাদা অংশ নাকি কুসুম, কোনটা বেশি উপকারী! তাই সকলের মনে ঢেউ তোলা এই প্রশ্ন নিয়েই আমরা হাজির হয়েছিলাম কলকাতার ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সের প্রধান পুষ্টিবিদ মীনাক্ষী মজুমদারের কাছে। তিনিই আমাদের এই বিষয়ে খোলসা করে জানালেন।
ডিমের সাদা অংশে রয়েছে অ্যালবুমিন। আর এই অ্যালবুমিন হল সবথেকে উৎকৃষ্ট মানের প্রোটিন। অর্থাৎ এই প্রোটিন খেলে শরীর তা অত্যন্ত দ্রুত গ্রহণ করে নেয়। ফলে নিয়মিত ডিম খেলে যে দেহে প্রোটিনের ঘাটতি মিটে যাবে, তা বলাই বাহুল্য। আর দেহে প্রোটিনের ঘাটতি পূরণ হলে মাসল-মাস বৃদ্ধি পাবে। এমনকী ইমিউনিটিও বাড়বে কয়েকগুণ। তাছাড়া মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত গঠনেও প্রোটিনের প্রয়োজন হয়। তাই শরীরে প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে চাইলে ডিমের সাদা অংশ খাওয়া চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিলেন মীনাক্ষী মজুমদার।
আজকাল অনেকেই কুসুমকে খলনায়ক ভেবে নেন। তবে বিষয়টি একবারেই কিন্তু তেমন নয়। বরং কুসুমে রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি, কোলেস্টেরল, জিঙ্ক এবং সেলেনিয়াম সহ একাধিক প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ। তাই দেহের পুষ্টির চাহিদা মেটাতে চাইলে কুসুমকে বাদ দেওয়া চলবে না। বরং সময়-সুযোগ পেলেই কুসুম খান। এতেই একাধিক ছোট-বড় রোগব্যাধি শরীরের কাছে ঘেঁষার সুযোগ পাবে না।
এই প্রশ্নের উত্তরে মীনাক্ষী মজুমদার জানালেন, এভাবে ভালো-খারাপ বিচার করা মুর্খামি ছাড়া আর কিছুই নয়। কারণ ডিমের এই দুটি অংশের নিজস্ব কিছু গুণ রয়েছে। তবে মনে রাখবেন, সকলের জন্য সব খাবার নয়। ঠিক তেমনই ডিমের কুসুম এবং সাদা অংশও কিন্তু সকলের খাওয়া উচিত নয়, যেমন ধরুন-
১. বাচ্চাদের যখন প্রথম ডিম খাওয়ানো হয়, তখন কুসুম খাওয়ানোই বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ ডিমের কুসুম একটি সহজ পাচ্য খাবার।অন্যদিকে ডিমের সাদা অংশ কিন্তু এই বয়সের বাচ্চার পেটে সহ্য নাও হতে পারে। তাই ডিমের সাদা অংশ খেলে তাদের পেটের সমস্যা হওয়ারও আশঙ্কা বাড়বে।
অনেকেই মনে করেন, অর্ধসিদ্ধ ডিম খেলে বুঝি বেশি উপকার মিলবে। তবে বিষয়টা একবারেই তেমন নয়। বরং অর্ধসিদ্ধ ডিম খেলে ব্যাকটেরিয়ার ফাঁদে পড়ে ডায়ারিয়া, বমির সমস্যায় ভোগার আশঙ্কাই বাড়বে। তাই ডিম সবসময় সিদ্ধ করে খান। আর মন চাইলে সপ্তাহে এক আধবার ডিমের অমলেট বা পোচ করেও খেতে পারেন।
আর সবশেষে বলি, যে কোনও সুস্থ মানুষ দিনে একটি গোটা ডিম খেতে পারেন। আর কোনও ক্রনিক অসুখ থাকলে এক থেকে দুটি ডিমের সাদা অংশ অনায়াসে মুখে তুলে নেওয়া যায়। এতেই উপকার মিলবে। শরীরও চাঙ্গা থাকবে।
Posted ২:৪৩ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ২১ জুলাই ২০২৩
coxbangla.com | Chanchal Chy