কক্সবাংলা ডটকম(৫ অক্টোবর) :: বাড়িতে বা বেড়াতে গেলে পপকর্নের ঠোঙায় সময় কেটে যায়। তবে বিভিন্ন মলে বিক্রি হওয়া রেডিমেড পপকর্ন মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়। শুধু তাই নয়, মাইক্রোওয়েভ বা মেশিনে তৈরি পপকর্নের শরীরে এমন কিছু উপাদানের সন্ধান পাওয়া গেছে, যা ধীরে ধীরে আমাদের মারাত্মক শারীরিক ক্ষতির দিকে ঠেলে দেয়। শুধু তাই নয়, হঠাৎ মৃত্যুর আশঙ্কাও বাড়ায়।
গবেষকরা জানাচ্ছেন, মাইক্রোওয়েভ বা কোনও মেশিনে তৈরি পপকর্ন খেলে শরীরে বেশ কিছু ক্ষতিকর উপাদানের মাত্রা হঠাৎ করে বৃদ্ধি পেতে শুরু করে।
ক্যালরি: একাধিক কেস স্টাডি করে দেখা গেছে ২৮০ গ্রাম পপকর্নের মধ্যে কম-বেশি প্রায় ১৫১২ ক্যালরি থাকে। এই পরিমাণ ক্যালরি শরীরে প্রবেশ করলে ওজন চোখে পড়ার মতো বৃদ্ধি পায়। ওবেসিটি বা অতিরিক্ত ওজন একাধিক মারণ রোগকে ডেকে আনে, যার মধ্যে অন্যতম হল ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল এবং হার্ট ডিজিজ।
লবণ: গবেষকরা জানাচ্ছেন প্রতিদিন যে পরিমাণ লবণ খাওয়া উচিত, তার থেকে কয়েক গুণ বেশি লবণের ব্যবহার হয়ে থাকে লার্জ প্যাক পপকর্নে। এমন খাবার খেলে শরীরে লবণ বা সোডিয়ামের পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, যা রক্তচাপকে এতটাই বাড়িয়ে দেয় যে হঠাৎ করে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে শরীরে লবণের পরিমাণ বাড়তে থাকলে কিডনির উপরও খারাপ প্রভাব পরে। যার ফলে একদিকে যেমন কিডনি ফাংশন কমে যেতে শুরু করে, তেমনি অন্যদিকে নানাবিধ কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়।
স্যাচুরেটেড এবং ট্রান্স ফ্যাট: সারা বিশ্বব্যাপী সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে বেশিরভাগ মাইক্রোওয়েভ পপকর্নের মধ্যেই হাইড্রোজেনেটেড অয়েলের সন্ধান পাওয়া গেছে। এই বিশেষ ধরনের তেলটির শরীরে রেয়েছে প্রচুর মাত্রায় ট্রান্স ফ্যাট, যা শরীরে প্রবেশ করার পর ক্যালরির মাত্রা এতটাই বাড়িয়ে দেয় যে ওজন বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে হার্টের উপরও মারাত্মক খারাপ প্রভাব পড়ে। বেশ কিছু গবেষণা বলছে ট্রান্স এবং স্যাচুরেটেড ফ্যাটের মাত্রা শরীরে বাড়তে থাকলে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়।
দাঁতের মারাত্মক ক্ষতি হয়: পপকর্ন অতটা যত্ন দিয়ে বানানো হয় না। ফলে তার মধ্যে কাঁচা অবস্থায় বেশ কিছু কর্ন থেকে যায়। এই কাঁচা কর্ন সেগুলি এতটাই শক্ত হয় যে নিমেষে দাঁতের মারাত্মক ক্ষতি করে দেয়।
শরীরের আরও বেশ কিছু ক্ষতি হয়: ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে বাজার চলতি একাধিক রেডিমেড পপকর্নে পার্ফ্লিউঅরোকটেনিক অ্যাসিড নামে একটি উপাদান থাকে, যা শরীরে দিনের পর দিন প্রবেশ করতে থাকলে ধীরে ধীরে থাইরয়েড গ্ল্যান্ডের ক্ষতি হতে শুরু হয়। সেই সঙ্গে হার্টের রোগ এবং নানাবিধ অটোইমিউন ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়।
একাধিক ক্ষতিকর রাসায়নিকের সন্ধান: পপকর্নকে মাখনের স্বাদ দিতে অনেক ক্ষেত্রেই ডায়াসেটাল নামে এক ধরনের উপাদান ব্যবহার করা হয়। ২০০৪ সালে হওয়া একটি স্টাডিতে দেখা গেছে এই ডায়াসেটাল নামক রাসায়নিকটি শরীরে প্রবেশ করার পর মারাত্মক প্রদাহ বা ইনফ্লেমেশন দেখা দেয়, যার প্রভাবে শ্বাস কষ্ট সহ নানাবিধ সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়।
তাই পপকর্ন খেতে চাইলে নিজে বানিয়ে খাওয়াটাই উত্তম।
Posted ১:০৫ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ০৬ অক্টোবর ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Chy