নাজিম উদ্দিন,পেকুয়া :: পেকুয়ায় আ’লীগ নেতার হাতের কব্জি কর্তন ও কলেজ ছাত্রী অপহরণ মামলার ৩ আসামীকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। চাঞ্চল্যকর ঘটনা পৃথক মামলায় ৩ আসামী আদালতে আত্মসমর্পণ করে। বিচারিক আদালতের বিচারক ৩ আসামীর জামিন না মঞ্জুর করেন। এ ৩ জনকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
১৪ ডিসেম্বর (সোমবার) চকরিয়া সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক রাজীব কুমার দেব আসামীদের জামিন না মঞ্জুর করেন। তারা হলেন পেকুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের মইয়াদিয়ার আশরাফ মিয়ার ছেলে আলমগীর (৩০), তার ভাই নুরুল আবছার (২২) ও মা আয়েশা খাতুন (৪৫)।
সুত্র জানায়, চলতি বছরের ২৮ আগষ্ট মইয়াদিয়া ষ্টেশনে সদর ইউনিয়ন আ’লীগ সহসভাপতি আলী হোছাইন (৪৫) কে সকালে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করা হয়। এ সময় তাকে হত্যা চেষ্টার উদ্দেশ্যে হাতের একটি কব্জি ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। সর্ব শরীরে একাধিক স্থানে জখম করে। মূমুর্ষূ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়েছিল।
পেকুয়া হাসপাতাল থেকে তাকে দ্রæত রেফার করা হয়। রাজধানী ঢাকার জাতীয় পঙ্গু হাসপাতালে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন। ওই ঘটনায় পেকুয়া থানায় একটি মামলা রুজু করা হয়। জিআর ৮৮/২০। ওই মামলায় আশরাফ মিয়ার ছেলে আলমগীরকে প্রধান আসামীসহ ৭ জনকে বিবাদী করা হয়। একইভাবে চলতি বছরের ১২ জুন মইয়াদিয়া গ্রামে কলেজ ছাত্রী জন্নাতুন নাঈমা মুন্নী অপহৃত হয়েছে। মুন্নী নিজ বাড়ি থেকে বের হন।
এ সময় চাচার বাড়ি যাওয়ার পথে তাকে গাড়ীতে তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই ঘটনায় পেকুয়া শহীদ জিয়াউর রহমান উপকুলীয় কলেজের ১ম বর্ষের ছাত্রী জন্নাতুন নাঈমা মুন্নীর পিতা মইয়াদিয়ার বাসিন্দা ইউনিয়ন আ’লীগ নেতা আলী হোছাইন বাদী হয়ে পেকুয়া থানায় অপহরণ মামলা রুজু করে। যার নং ৫৯/২০। মামলায় আশরাফ মিয়ার ছেলে নুরুল আবছারকে প্রধান আসামী করা হয়। একই মামলায় দ্বিতীয় আসামী আশরাফ মিয়ার ছেলে আলমগীরকে স্থানীয়রা পেকুয়া বাজার থেকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। ১ মাস জেলে থাকার পর আলমগীর জামিন পান। জেল ফেরতের কয়েক দিন পর আলমগীর মইয়াদিয়া ষ্টেশনে ছাত্রী মুন্নীর পিতা আলী হোছাইনকে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়ি কুপায়।
এ দিকে পেকুয়ায় আ’লীগ নেতা আলী হোছাইনের হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন ও তার মেয়ে কলেজ ছাত্রী মুন্নীকে অপহরণের এ দুটি চাঞ্চল্যকর ঘটনায় মামলা হয়েছে। তবে ওই পৃথক মামলার ৭ জন আসামীকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। আলী হোছাইন মুন্সীর একটি হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এরপরেও প্রধান হামলাকারী আলমগীর গ্রেপ্তার হননি। ছাত্রী অপহরণ মামলার প্রধান আসামী নুরুল আবছারকেও পুলিশ গ্রেপ্তার করতে ব্যর্থ হয়েছে।
এ ব্যাপারে জখমী আ’লীগ নেতা আলী হোছাইন মুন্সী জানান, তারা আজকে কোর্টে আত্মসমর্পন করেছে। আদালত জামিন না মঞ্জুর করে। আমার মেয়ে মুন্নী ৬ মাস পর্যন্ত অপহৃত। মেয়ে উদ্ধার হয়নি। আমাকেও শেষ করা হয়েছে। আমি প্রশাসন ও বিচারিক আদালতকে আহবান করছি আলমগীর ও নুরুল আবছার শীর্ষ সন্ত্রাসী। এ ছাড়া তারা মাদক ব্যবসায়ও জড়িত। আমি এদেরকে রিমান্ড মঞ্জুর দাবী করছি। জিজ্ঞাসাবাদ করলে বেরিয়ে আসবে মাদক ও অস্ত্রের যোগানের বিষয়গুলি।
Posted ১০:০৯ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২০
coxbangla.com | Chanchal Chy