নাজিম উদ্দিন,পেকুয়া(২৯ সেপ্টেম্বর) :: পেকুয়ায় প্রবাসীর বিরুদ্ধে মামলা রুজু করল স্ত্রী। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে এ মামলা রুজু করে ওই গৃহবধূ। যৌতুক নিরোধ আইন ও নারী নির্যাতন ধারায় এ মামলা আমলে নেয় আদালত। আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা ইস্যু হয়েছে।
এ দিকে প্রথম স্ত্রীকে মারধরসহ নির্যাতন চালিয়ে সংসার থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে। এ সুবাধে ওই প্রবাসী অপর রমনীকে নিয়ে লাপাত্তা হয়েছে। প্রথম স্ত্রীর অনুমতি না নিয়ে ওই ব্যক্তি তার প্রেমিকাকে নিয়ে সম্প্রতি উধাও হয়েছে।
চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সদর ইউনিয়নের জালিয়াখালী গ্রামে। প্রবাসীর স্ত্রী ফাতেমা বেগম(২৪) বাদী হয়ে কক্সবাজারের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে একটি নালিশি অভিযোগ পৌছায়।
আদালত সেটি আমলে নিয়ে ফৌজধারী দন্ডবিধির ধারায় নিয়মিত মামলা রুজু করে। মামলায় ওই গৃহবধূর স্বামী মালয়েশিয়া প্রবাসী মোহাম্মদ ইসমাইল, তার মা ফরিদা বেগম, দেবর আবু তাহেরসহ তিনজনকে আসামী করে।
এদের মধ্যে ১ নং বিবাদী ইসমাইল মামলার শুনানীতে অনুপস্থিত ছিল। আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা ইস্যু করে। এ দিকে ফাতেমা স্বামী ইসমাইল গত মাস দেড়েক আগে মালয়েশিয়া থেকে দেশে আসে। গ্রেফতারী পরোয়ানা থাকায় ওই ব্যক্তি বর্তমানে এলাকা ছাড়া।
সুত্র জানায়, প্রবাসে থাকা অবস্থায় ওই ব্যক্তি এক নারীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক তৈরী করে। তারা দুইজনই বিবাহিত। প্রেমিকের স্বামী ছিল। অপরদিকে ইসমাইলও বিবাহিত। তবে এ সম্পর্ক দু’জনের মধ্যে অনেকটা গোপনে চলছিল।
প্রেমিক প্রেমিকা মন দেয়া নেয়ার এ সুত্র ধরে গত ১৫ দিন আগে লাপাত্তা হয়। ইসমাইলের শাশুড় জানায়, আমার মেয়েকে ফেলে এ ছেলে মগনামার একজন নারীর সাথে বর্তমানে গোপনে সংসার করছে। প্রথম স্ত্রী অনুমতি না নিয়ে ওই ব্যক্তি দ্বিতীয় বিয়ে করে ফেলেছে। এ মেয়ের নাম জানা নেই।
তবে তার পিতার বাড়ি মগনামায়। সেটি নিশ্চিত হয়েছি। জেনেছি তারা চট্রগ্রাম শহরে অবস্থান করছে। আমার মেয়েকে সর্বনাশ করা হয়েছে। মেয়েটি যাবে কোথায়। আদালত গ্রেফতারী পরোয়ানা দিয়েছে।
আদালতে প্রেরিত আর্জি সুত্র জানায়, ২০১২ সালের ২৬ জুন ফাতেমা বেগম ও একই এলাকার মোহাম্মদ আলীর ছেলে মো: ইসমাইল বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। দাম্পত্য জীবনে এ দম্পতির ফরহাদ নামের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে।
বিবাহের কিছুদিন স্বামী স্ত্রীর সংসার সুখের ছিল। এরই মধ্যে ইসমাইল জীবিকার সন্ধানে মালয়েশিয়ায় পাড়ি দেয়। আর্জিতে জানায়, ১ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবী করছিল ইসমাইল। মুঠোফোনে ওই টাকা তার মা ও ভাইকে দিতে বলছিলেন।
এ নিয়ে এ দম্পতির বনিবনা হয়। এর সুত্র ধরে ফাতেমার শাশুড়ী ফরিদা ও দেবর আবু তাহের প্রায় সময় মারধরসহ যৌতুকের জন্য মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চালাত।
এর সুত্র ধরে ২০১৭ সালের ৪ এপ্রিল সকালে স্বামীর প্ররোচনায় অপর দুই আসামী ফরিদা ও আবু তাহের তাকে মারধর ও নির্যাতন করে স্বামীর সংসার থেকে বিতাড়িত করে। এর সুত্র ধরে বাদী কক্সবাজারের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে মামলা রুজু করে।
ফাতেমা বেগম জানায়, আমাকে যৌতুকের জন্য অনাচার ও নিপীড়নসহ নির্যাতন চালানো হয়েছে। স্বামী অনেক দিন ধরে আমাকে স্ত্রীর মর্যাদা থেকে বঞ্চিত করছে। স্ত্রী ও সন্তানের খরপোষ ও ভরনপোষন থেকে বঞ্চিত রেখেছে। আমার সাথে সব রকমের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। অপর একজন নারীর সাথে চুপিসুরে প্রেম করছিলেন।
চট্রগ্রাম শহরে ১৫ দিন আগে থেকে এ নারীকে নিয়ে সংসার করছিলেন। আমার অনুমতি নেয়নি। জেনেছি ওই নারী বিবাহিত। তবে স্বামী পরিত্যক্ত। তার একটি মেয়েও আছে। এখন ছেলেকে নিয়ে অন্ধকার ভবিষ্যত আমার।
Posted ১২:১৪ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Chy