নাজিম উদ্দিন,পেকুয়া(২৭ জানুয়ারি) :: কক্সবাজারের পেকুয়ায় রাজাখালী ইউনিয়নের আমিন বাজার-ভাঁখালী সড়কে নেই ইট। দীর্ঘ ৩০বছর ধরে উপজেলার উপকুলবর্তী ওই ইউনিয়নের গ্রামীন অবকাঠামোর যাতায়ত অন্যতম প্রধান সড়কটি সংস্কার বঞ্চিত রয়েছে।
এতে করে ওই ইউনিয়নের পশ্চিম ও উত্তর অংশের বিপুল জনগোষ্টির যাতায়ত ব্যবস্থা থেমে গেছে। আর্তসামাজিক অবস্থাসহ যোগাযোগ ব্যবস্থায় পড়েছে এর নেতিবাচক প্রভাব। সুন্দরীপাড়া আমিন বাজারে থেকে ভাঁখালী পর্যন্ত সড়কটি কাচা রয়েছে। প্রায় ৪ কি.মি বহমান ওই সড়ক কাচা থাকায় জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারন করেছে। গাড়ি চলাচল একদম বন্ধ রয়েছে।
সড়কটি উপকুলের যাতায়তের জন্য অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে। ছনুয়া নদীর উপকন্ঠে এ সড়কের অবস্থান। নদীর স্রোতধারা লোকালয়ে প্রবেশ না ঘটাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বেড়িবাঁধ নির্মান করে। বেড়িবাঁেধর উপর দিয়ে যাতায়ত করে লোকজন। সড়কটি পাউবোর মালিকানাধীন। তবে মানুষের যাতায়ত সুগম করতে সরকার এর আধুনিকায়ন করছিলেন। ভাঁখালী থেকে উত্তর রাজাখালী মাতবর পাড়ার হাজি মার্কেট পর্যন্ত বেড়িবাঁধে ইট বিছানো ছিল।
১৯৯৯সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশ অধিদপ্তর (এলজিইডি) দেড় কি.মি ব্রিক সলিন দ্বারা সংস্কারকাজ বাস্তবায়ন করে। অপরদিকে সুন্দরীপাড়া আমিন বাজার থেকে দিলজান বাড়ি সড়কের মাথা পর্যন্ত বেড়িবাঁধের পশ্চিম অংশে প্রায় এক কি.মি ব্রিক সলিনের আওতায় সংস্কার কাজ বাস্তবায়ন হয়েছিল। দিলজান বাড়ি রাস্তার মাথা থেকে মাতবর পাড়া-হাজি মার্কেট পর্যন্ত প্রায় দেড় কি.মিটারে ইট বসানো ছিলনা। গত কয়েক বছরের ব্যবধানে ছনুয়া নদীর পানির তীব্র স্রোতে বেড়িবাঁধ বিলিন হয়ে যায়।
এতে করে প্রায় ৪ কি.মি সড়কটি অরক্ষিত ছিল। পাউবো ভাঁখালী থেকে হাজি মার্কেট হয়ে সুন্দরী পাড়া আমিন বাজার পর্যন্ত মাটি দ্বারা বেড়িবাঁধ সংস্কার কাজ শেষ করেছে। তবে সড়কটিতে ইট না থাকায় মানুষের দুর্ভোগ শেষ হয়নি।
উত্তর সুন্দরী পাড়ার ছৈয়দুল হক, আক্তার হোসেন, জহির আলম, জহিরুল ইসলাম মাতবর,ফরিদুল আলম সও:, মাহাবু সও: জুনাব আলী সও: ডা: সিরাজুল মোস্তফা, আ’লীগ নেতা নুরুল হোসেনসহ স্থানীয়রা জানায় সড়কটি যাতায়তের অন্যতম মাধ্যম। চার কি.মিটারের মধ্যে পুর্বে আড়াই কি.মিটারে ইট ছিল। হরুঘাট থেকে হাজি মার্কেট, একই মোকাম থেকে দিলজান বাড়ি রাস্তার মাথা পর্যন্ত কখনো ইট বিছানো হয়নি।
সুন্দরীপাড়া, মাতবর পাড়া, দিলজান পাড়া, কাঞ্চন পাড়া, উলুদিয়া পাড়াসহ পশ্চিম ও উত্তর অংশের এ ইউনিয়নের প্রায় ৪-৫হাজার মানুষ এ সড়ক দিয়ে যাতায়ত করে। মাটি ভরাট হয়েছে কিন্তু ইট না থাকায় সড়কটি অকেজো থেকে গেছে। থেমে গেছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। বর্ষার সময় একদম চলাফেরা করা যায়না। তিনটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি দাখিল মাদ্রাসা, একটি ফাযিল মাদ্রাসা, দুইটি হাই স্কুলের অসংখ্য শিক্ষার্থী এ সড়ক দিয়ে যাতায়ত করে। শুস্ক মৌসুমে পায়ে হেটে যাওয়া যায়। কিন্তু বর্ষার সময় পিচ্চিল সড়কটি কাঁদায় ভরপুর থাকে। এ সময় সড়ক দিয়ে যাতায়ত করা মানে কঠিন মানবেতর।
শিক্ষার্থী এমরান, আযাদ, আব্দু রব, তসলিমা, নাঈমা, রাজিয়া সোলতানা, ইয়াসমিন, সাদিয়াসহ আরো অনেকে জানায়, আমরা বেড়িবাঁেধর উপর ইট চাই। সড়কটি পাকা করনের যুক্তিক দাবি জানায়। বর্ষায় প্রতিষ্টানে যেতে পারিনা। বই পুস্তক নষ্ট হয়েছে অনেকের। মসজিদের ইমাম দেলোয়ার হোসেন ও আনোয়ার হোসেন জানায়, আমরা কঠিন অবস্থায় আছি। সড়কটি ইট দ্বারা সংস্কার না হলে এর দুর্ভোগ আরো বৃদ্ধি পাবে।
গৃহবধু ফেরদৌস বেগম, হালিমা বেগম, সাজেদা বেগম, পাখি, নুরুন্নাহার ও লায়লা বেগম জানায়, আমরা খুবই কষ্টের মধ্যে আছি। রিক্সায় চড়ে বাড়িতে যাওয়া আসা করতে পারিনা। প্রসুতি ও গর্ভবতী মহিলাদের সবচেয়ে কঠিন অবস্থায় পড়তে হয়। হাসপাতাল ও ক্লিনিকে নিতে হলে পিচ্চিল সড়ক দিয়ে যেতে হয়। এ সময় রোগির অবস্থা হয় খুবই করুন। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে ইট দ্বারা সংস্কার চাই।
ইউপি চেয়ারম্যান ছৈয়দনুর জানায়, সড়কটি খুবই গুরুত্বপুর্ন। ইট না থাকায় মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। আমিও জনগনের সাথে একমত পোষন করছি যাতে করে দ্রুত সময়ে এর সংস্কার কাজ বাস্তবায়নে উদ্যেগ নেয়া হয়।
Posted ৯:৩৮ অপরাহ্ণ | সোমবার, ২৭ জানুয়ারি ২০২০
coxbangla.com | Chanchal Chy