মো: ফারুক,পেকুয়া(১৫ অক্টোবর) :: পেকুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের পূর্ব বাইম্যাখালীস্থ শাহ জমিরিয়া তালিমুল কোরাআন মাদ্রাসা হেফজখানা ও এতিমখানাসহ তার মোহতামিম মাওলানা সিরাজুল হকের বিরুদ্ধে কুচক্রিমহল কর্তৃক ষড়যন্ত্র ও ধারাবাহিক মিথ্যা সংবাদের প্রতিবাদে প্রতিবাদ সভা করেছে মাদ্রাসা, এতিমখানা ও হেফজখানায় পড়–য়া শিক্ষার্থীদের অভিভাবক, শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দরা। গত ১৪ অক্টোবর রাতে মাদ্রাসা ভবনে প্রতিবাদ সভা অনুষ্টিত হয়।
হেফজখানার শিক্ষার্থী মো: ইসমাঈলের পবিত্র কোরাআন তেলোয়াতের মাধ্যমে অনুষ্টিত প্রতিবাদ সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সভার সভাপতি মাদ্রাসার মোহতামিম মাওলানা সিরাজুল হক। বক্তব্য রাখেন, মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির পক্ষে হাফেজ মুজিবুর রহমান, মাষ্টার আবুল কালাম আজাদ, অভিভাবকদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন, নুরুল হোসেন, মো: জাকের আহমদ, মো: আকতার মিস্ত্রি, মাওলানা মোকতার আহমদ, তাওহীদুল ইসলাম, জালাল আহমদ, জয়নাল আবদীন, আলী আহমদ, আবু তাহের।
প্রতিবাদ সভায় অভিভাবকেরা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পূর্ব বাইম্যাখালীর এই এলাকাটি শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত ছিল। ২০১৩ সালে পূর্ব বাইম্যাখালী এলাকার আশেপাশের লোকজন ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জেলা পরিষদ সদস্য জাহাঙ্গীর আলমকে নিয়ে এক বৈঠকে একটি মাদ্রাসা ও হেফজখানা করার পরিকল্পনা করা হয়। এটি প্রতিষ্টা করতে কি কি করণীয় তার জন্য পরামর্শ দেন বর্তমান মোহতামিম মাওলানা সিরাজুল হক।
শিক্ষার ক্ষেত্রে সুদুর প্রসারী পরিকল্পনার অংশ হিসাবে নানুপুরী হুজুরের মাদ্রাসায় গিয়ে শাহ জমিরিয়া তালিমুল কোরাআন মাদ্রাসা হেফজখানা ও এতিমখানা স্থাপন করার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। মাদ্রাসা কমিটির সভাপতি করা হয় শাহ সালাউদ্দিন আহমদ নানুপুরী, সেক্রেটারী করা হয় জাহাঙ্গীর আলমকে। এছাড়াও এলাকার গণ্যমাণ্য ব্যক্তি ও শিক্ষানুরাগীদের নিয়ে মাদ্রাসা প্রতিষ্টায় জমি ক্রয় করি।
আল্লাহ রহমতে নিজস্ব কার্যালয়ে মাদ্রাসা প্রতিষ্টা করার পর শিক্ষার্থীদের জন্য জায়গার অভাব হওয়ায় ভাড়া ঘর নিয়ে হেফজখানা চালু করতে হয়েছে। যার জন্য সীমাহীন পরিশ্রম করেছে বর্তমান মোহতামিম মাওলানা সিরাজুল হক।
সাথে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করেছেন জেলা পরিষদ সদস্য জাহাঙ্গীর আলম ও এলাকাবাসীগণ। যখনি বৃহত্ত আকারে মাদ্রাসা প্রতিষ্টা করার প্রয়াস নিচ্ছি তখন বারবাকিয়া এলাকার আতিকুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি লোভের বসবতি হয়ে হেফজখানার ভবনটি ভাড়া নিয়ে অনৈতিক কর্মকান্ড শুরু করে।
বিষয়টি স্থানীয় অভিভাবকগণ যখন বাঁধাগ্রস্থ করেছি তখনি আতিকুল ইসলামের এই ব্যক্তিটি আমাদের মাদ্রাসা নিয়ে চক্রান্ত শুরু করে। তিনি কয়েক সংবাদিক দিয়ে মিথ্যা রিপোর্ট করান এ বলে এখানে জঙ্গি সৃষ্টি হয় ও কার্যক্রম চলে। যার কারণে আমরা চরমভাবে মর্মাহত হয়েছি। রিপোর্ট করুণ কোন অসুবিধা নাই। সম্পূর্ন মিথ্যা রিপোর্ট করে গরীব অসহায় লোকদের জন্য প্রতিষ্টিত মাদ্রাসাটি চক্রান্ত করলে আমরা কিছুতেই মেনে নিবনা। আর শিক্ষাবান্ধন মাওলানা সিরাজুল হক না হলে গরীব অসহায় ও এতিম ছেলে মেয়েরা লেখাপড়া করতে পারত না।
জাহাঙ্গীর আলম ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ইনশাল্লাহ বর্তমানে মাদ্রাসায় ২শ আর হেফজখানায় ৩০জন শিক্ষার্থী রয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মরত সম্মানীত ব্যক্তিরা এসে দেখে যাক কারা প্রকৃত জঙ্গি ও অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িত। এ মাদ্রাসা নিয়ে আবার চক্রান্ত শুরু করলে আমরা অভিভাবকেরা বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব।
পরিচালনা কমিটির পক্ষে বক্তব্য রাখতে গিয়ে হাফেজ মুজিবুর রহমান ও মাষ্টার আবুল কালাম আজাদ বলেন, প্রকৃত ইসলামের আদর্শ নিয়ে গরীব অসহায়দের লেখা পড়ার জন্য এই মাদ্রাসা এতিমখানা ও হেফজখানাটি আমরা প্রতিষ্টিত করার পর এলাকার গরীব অসহায়দের সন্তান লেখাপড়ার সুযোগ পাচ্ছে। বর্তমানে মোহতামিম ও মাদ্রাসা নিয়ে যে ষড়যন্ত্র হচ্ছে তা নেক্কারজনক। ভবিষ্যতে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিব।
প্রতিবাদ সভায় সহমত জানিয়ে অত্র মাদ্রাসার সেক্রেটারী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পবিত্র কোরাআন ও ইসলাম শিক্ষার জন্য অনেক ত্যাগ ও পরিশ্রম করে আমরা শাহ জমিরিয়া মাদ্রাসাটি প্রতিষ্টা করেছি। আমি মনে এ চক্রান্ত সাময়িক। পবিত্র কোরাআন এর সাথে চক্রান্তে করে কেউ ঠিকে থাকতে পারবেনা। সামনের দিনে এ মাদ্রাসা আরো বড় পরিসরে হবে ইনশাআল্লাহ।
মোহতামিম মাওলানা সিরাজুল হক বলেন, আমি কামিল পাশ একজন শিক্ষক। মাদ্রাসায় আরো ৫জন শিক্ষক আছে। নানুপুরী হুজুরের ছেলে শাহ সালাউদ্দিন আহমেদ সার্বক্ষনিক এ মাদ্রাসা নিয়ে খোঁজ খবর রাখেন। এ মাদ্রাসায় আমি একজন চাকুরীজীবিমাত্র।
জাহাঙ্গীর ভাইসহ এলাকাবাসী ও অভিভাবকগণও সার্বক্ষনিক তদারকি করে থাকেন। এখানে জঙ্গি তৈরি হয়না। আমরা তৈরি করি পবিত্র কোরানে হাফেজ ও প্রকৃত ইসলামী শিক্ষায় আদর্শ ছাত্র। যারা চক্রান্ত করছেন তারাই অনৈতিক কর্মকান্ড করছেন তা এলাকাবাসী জানে।
আপনাদের সহযোগিতা ফেলে এ মাদ্রাসাটি উপজেলার প্রথম সারিতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা থাকবে আমার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও পরিচালনা কমিটির সকল নেতৃবৃন্দরা।
Posted ১২:৩৯ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ১৬ অক্টোবর ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Chy