কক্সবাংলা ডটকম(৩০ মে) :: অনেক ক্ষেত্রেই মৃত্যুর সঠিক কারণ নিরূপণ না করে ‘স্বাভাবিক মৃত্যু’ বলে উল্লেখ করা হয়, যা প্রবাসী পরিবারের মধ্যে গভীর সন্দেহ ও ক্ষোভের জন্ম দেয়।
২০২২ সালের রামরুর এক গবেষণায় দেখা গেছে, মৃতদের গড় বয়স মাত্র ৩৮ বছর এবং অনেকের মরদেহে আঘাতের চিহ্ন থাকা সত্ত্বেও তা উপেক্ষা করা হয়।
২৯ মে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত ‘লাশ হয়ে ফিরে আসা অভিবাসী কর্মীর সম্মান ও মর্যাদা’ শীর্ষক জাতীয় সংলাপে এসব তথ্য তুলে ধরেন রামরুর নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক তাসনিম সিদ্দিকী ও মৃত অভিবাসীদের পরিবারের সদস্যরা।
সংলাপটি জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিটের (রামরু) যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়।
২০২২ সালে রামরু পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৪৮ শতাংশ পরিবার মনে করে, তাদের প্রিয়জনদের মৃত্যুর কারণ হিসেবে ডেথ সার্টিফিকেটে যা উল্লেখ করা হয়েছে তা সঠিক নয়।
এর পেছনে শরীরে ক্ষতচিহ্ন, মৃত্যুর আগে পরিবারের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ বা শারীরিক নির্যাতনের তথ্যের মতো প্রমাণ রয়েছে।
ওই গবেষণা অনুযায়ী, কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে বিদেশে গিয়ে মৃত্যুবরণকারী অভিবাসীদের ৩১ শতাংশ দুর্ঘটনা, আত্মহত্যা কিংবা হত্যার শিকার হয়েছেন।
২০২৪ সালে ৪ হাজার ৮১৩ জন অভিবাসী কর্মীর মরদেহ দেশে প্রত্যাবর্তিত হয়েছে, যাদের মধ্যে ৯৪ দশমিক ৪ শতাংশ পুরুষ ও ৩ দশমিক ৬ শতাংশ নারী।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সচিব সেবাস্টিয়ান রেমা বলেন, ‘অভিবাসীদের মৃত্যু অত্যন্ত বেদনাদায়ক।
এই ইস্যু আন্তর্জাতিক ফোরামে তুলে ধরে মৃত্যুর হার কমাতে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া সম্ভব।
আন্তর্জাতিক মৃত্যুসংক্রান্ত প্রটোকলগুলোকে দ্বিপক্ষীয় বা বহুপক্ষীয় সমঝোতা স্মারকে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।’
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্লাহ ভূঁইয়া বলেন, ‘মরদেহ ব্যবস্থাপনায় আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয়ের মাধ্যমে সম্মানজনক প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা সম্ভব।
এ ধরনের ছোট ছোট পদক্ষেপ একদিন বড় পরিবর্তনের সূচনা ঘটাবে।’
মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব সেলিম রেজা বলেন, ‘অনেক দুর্ঘটনার পেছনে কর্মীদের সচেতনতার অভাবও দায়ী।
লাশ প্রত্যাবর্তনের প্রক্রিয়ায় কিছুটা অগ্রগতি হলেও আরো স্ট্রিমলাইন করার সুযোগ রয়েছে।’
বিএমইটির পরিচালক মাসুদ রানা বলেন, ‘রিইন্ট্রিগ্রেশন প্রকল্পে মৃত অভিবাসীদের পরিবারদের অন্তর্ভুক্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক এটিএম আব্দুর রউফ মন্ডল বলেন, ‘ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের তহবিলের মাধ্যমে মরদেহ প্রত্যাবর্তন সম্ভব না হলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব বাজেট থেকে তা দ্রুত সম্পন্ন করা হবে।
রামরুর গবেষণা, এনএইচআরচি ও মন্ত্রণালয়ের সুপারিশ অনুযায়ী, মরদেহ রাখার জন্য নির্ধারিত স্থান ও পরিবারের সদস্যদের বসার জায়গার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
Posted ১২:৩৯ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta