প্রেস বিজ্ঞপ্তি :: বাংলাদেশ বিশ্ব খাদ্য দিবস উদযাপন করতে ও স্থানীয় খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থায় বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তার ওপর আলোকপাত করতে জাতিসংঘ বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) ও জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) কৃষকদের মধ্যে কৃষি উপকরণ বিতরণ করেছে ও ফার্মার্স মার্কেট প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে।
কক্সবাজারে খাদ্যের যোদ্ধা, যারা করোনা মহামারির সময়জুড়ে খাদ্য সরবরাহ চক্র ও মানবিক সহায়তা সরবরাহের চাকাকে গতিশীল রেখেছিলেন, তাদেরকে স্বীকৃতি দেওয়া ও তাদের সাথে উদযাপন করার জন্য এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
কক্সবাজারে, ডব্লিউএফপি ও এফএও স্থানীয় কৃষকদের সাথে কাজ করছে যেন এই অঞ্চলের খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থা আরও সুদৃঢ় হয় ও স্থানীয় বাজারের সাথে তাদের সংযোগ তৈরি করা যায় যার ফলে ক্ষুদ্র কৃষকরা তাদের উৎপাদিত খাদ্য সামগ্রী আরও বেশি পরিমাণে বিক্রি করতে পারেন এবং যাতে তাঁদের পরিবার, স্থানীয় জনগোষ্ঠী ও জাতীয় কৃষি উৎপাদন উপকৃত হয়।
এফএও-এর কক্সবাজার অফিসের কর্ণধার মার্কো ডে গায়েতানো বলেন, “আজ আমরা খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে আমাদের খাদ্যের যোদ্ধাদের অনবদ্য কাজের স্বীকৃতি দেওয়ার পাশাপাশি তাদের মাঝে পশু খাদ্য ও ফলের চারা বিতরণ করেছি। কক্সবাজারে ২৫,০০০ কৃষক ও ১২০০ কৃষক-দলকে সহায়তা দেওয়ার জন্য এফএও বাংলাদেশ সরকারের সাথে কাজ করছে।” তিনি আরও বলেন, “আমরা বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তা করছি যেন খাদ্য শৃঙ্খলের সাথে যুক্ত প্রত্যেকেই খাদ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও তা ভোগ করার পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনার মাধ্যমে আমাদের খাদ্য ব্যবস্থায় রূপান্তর ঘটাতে পারে।”
এই আয়োজনে ফার্মার্স মার্কেট-এর মাধ্যমে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ডব্লিউএফপি ফার্মার্স মার্কেটের প্রদর্শনী করা হয়। ফার্মার্স মার্কেটে স্থানীয় সরবরাহকারীদেরকে যুক্ত করা হয় যারা এই উৎপাদিত দ্রব্য সরবরাহ ও তা বিক্রি করতে পারেন। আর এই সরবরাহকারীরা হলেন ডব্লিউএফপি ও এফএও-এর সহায়তাপ্রাপ্ত কৃষক ও বেসরকারি খাতের সরবরাহকারীগণ। স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য অর্থনৈতিক সুযোগ বৃদ্ধি করার পাশাপাশি, এই ফার্মার্স মার্কেট হলো স্থানীয় জনগোষ্ঠী ও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে একই কাতারে নিয়ে আসার মাধ্যমে
সামাজিক সংহতি বৃদ্ধি করার অন্যতম প্রথম এক প্রচেষ্টা।
ডব্লিউএফপি কক্সবাজার-এর সিনিয়র ইমার্জেন্সি কোঅর্ডিনেটর শিলা গ্রুডেম বলেন, “ফার্মার্স মার্কেটে প্রতি মাসে গড়ে ১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকার খাদ্যসামগ্রী বিক্রি হয়। আর এই অর্থ সরাসরি স্থানীয় অর্থনীতিতে যুক্ত হয় এবং টেকসই খাদ্য ব্যবস্থায় সহায়ক হিসেবে কাজ করে।”
তিনি আরও বলেন, “ক্ষুদ্র কৃষকরা হলেন টেকসই খাদ্য ব্যবস্থার এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই অঞ্চলের কৃষকদেরকে তাদের নিজেদের ব্যবসা শুরু করা ও সেই ব্যবসার পরিধি বাড়ানোয় সহায়তা করার পাশাপাশি এই জীবিকাকে টেকসই করার জন্য তাদেরকে বাজারের সাথে সংযুক্ত হতে সহায়তা করতে পেরে আমরা গর্বিত।”
এই বছর কোভিড-১৯ মহামারির আর্থ-সামাজিক প্রভাব, বিশেষ করে মানুষের উপার্জন ও রেমিট্যান্স-এ মন্দার ফলে বিশ্বব্যাপী ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার কারণে অনেকগুলো দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ডব্লিউএফপি এবং এফএও -এর হিসাব অনুযায়ী, এই বছরে বিশ্বব্যাপী তীব্রভাবে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা আরও ১০ কোটি বেড়ে যেতে পারে।
ডব্লিউএফপি ও এফএও আমাদের খাদ্যের উৎপাদন ও বিতরণ ব্যবস্থাকে উন্নত করার জন্য বৈশ্বিক উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছে, যাতে করে মানুষ করোনা মহামারির মতো ধাক্কা সামলে নিতে পারে এবং বিশ্বব্যাপী ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা আশংকাজনকভাবে বেড়ে না যায়।
বিশ্ব খাদ্য দিবস ২০২০-এ এফএও-এর ৭৫তম বার্ষিকী পালন করা হচ্ছে এমন এক ব্যতিক্রমী সময়ে, যখন সারা বিশ্বের দেশগুলো বৈশ্বিক করোনা মহামারির ব্যাপক বিস্তৃত প্রভাব মোকাবেলা করছে। ১৫০টি দেশে সমন্বিত প্রচেষ্টা বিশ্ব খাদ্য দিবসকে জাতিসংঘের ক্যালেন্ডারে অন্যতম উদযাপিত দিবসে পরিণত করেছে। শত শত অনুষ্ঠান ও প্রচার কার্যক্রম বিভিন্ন দেশের সরকার, এনজিও, গণমাধ্যম ও সাধারণ জনগণকে একই কাতারে নিয়ে এসেছে এবং এর মাধ্যমে যারা ক্ষুধায় কষ্ট পাচ্ছে, তাদের জন্য ও সবার জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার ব্যাপারে বিশ্বব্যাপী সচেতনতা বৃদ্ধি করছে ও কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করছে।
Posted ৪:১৫ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৫ অক্টোবর ২০২০
coxbangla.com | Chanchal Chy