কক্সবাংলা ডটকম(১ আগস্ট) :: সুশান্ত সিং রাজপুতের আত্মহত্যার রহস্য ক্রমেই জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে৷ প্রতিদিনই পুলিশি তদন্ত নতুন মোড় নিচ্ছে। এই বলিউড তারকার মৃত্যুরহস্যের জল অনেক দূর গড়াবে, তা বলাবাহুল্য। সম্প্রতি পাটনা পুলিশ তদন্তে নেমে আরও নতুন বিষয় খোলাসা করেছে।এদিকে সুশান্ত সিং রাজপুত মৃত্যুর ঘটনায় এবার মুখ খুলেছেন সুশান্তের রাঁধুনি (Cook) অশোক। তিনি জানিয়েছেন রিয়ার সঙ্গে ইউরোপ থেকে ফেরার পরই সুশান্ত অসুস্থ হয়ে পড়েন সুশান্ত।
কিছুদিন আগে সুশান্তর বাবা কে কে সিং তার ছেলের এই মর্মান্তিক পরিণতির জন্য রিয়া চক্রবর্তীকে দায়ী করে পাটনা থানায় এফআইআর দায়ের করেছেন। তাই মুম্বাই পুলিশের পাশাপাশি পাটনা পুলিশও এখন সুশান্তর মৃত্যুরহস্য সমাধান করতে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে। আর তদন্তে নেমে পাটনা পুলিশ বেশ কিছু বিষয় সামনে এনেছে। তারা সুশান্তর সম্পত্তির তালিকা মিলিয়ে দেখেছে যে বান্দ্রায় তাঁর বাসা মন্ট ব্ল্যাংক থেকে বহু জিনিস গায়েব আছে, সব মিলিয়ে যার দাম আনুমানিক ৫০ লাখ রুপি।
সুশান্ত সিং রাজপুত। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
জানা গেছে, সুশান্তর আইফোনের কালেকশন সম্পূর্ণ গায়েব। এই বলিউড নায়কের স্মার্টফোনের বিভিন্ন মডেল সংগ্রহ করার নেশা ছিল। কিন্তু তাঁর মন্ট ব্ল্যাংক বাসায় একটিও আইফোনের সন্ধান পায়নি পাটনা পুলিশ। এ ছাড়া সুশান্তর দুটো ল্যাপটপের মধ্যে একটা গায়েব, যার মূল্য ছিল এক লাখ রুপি। ল্যাপটপটি দুটো উচ্চমানের ক্যামেরার সঙ্গে যুক্ত ছিল। সেই ক্যামেরা দুটিরও সন্ধান পায়নি পাটনা পুলিশ। এই ক্যামেরা দুটির প্রতিটির লেন্সের দাম ১৫ লাখ রুপি। সুশান্তর দামি স্পোর্টস সাইকেলটিও গায়েব। এই সাইকেলটির দাম ২ লাখ রুপি। এ ছাড়া এই বলিউড তারকার সব ডেবিট এবং ক্রেডিট কার্ডের খোঁজ পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া আরও অনেক জিনিসের সন্ধান পায়নি পাটনা পুলিশ। সবচেয়ে অদ্ভুত বিষয় হলো, মুম্বাই পুলিশ তাদের তদন্তে সুশান্তর গায়েব হওয়া জিনিসের তালিকা বানায়নি।
এ ছাড়া সুশান্তের হিসাব থেকে ১৫ কোটি রুপি অন্য একটা হিসাবে ট্রান্সফার করা হয়েছে, যার সঙ্গে সুশান্তের কোনো লেনদেন নেই। এই বিষয়েও তদন্ত করছে পাটনা পুলিশ।
সুশান্ত সিং রাজপুত। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
১৯৮৬ সালের ২১ জানুয়ারি জন্ম নেওয়া সুশান্ত পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট। তাঁর বড় চার বোন আছেন। ২০১৩ সালে ‘কাই পো চে’ দিয়ে বড় পর্দায় অভিষেক ঘটে সুশান্তর। একই বছরে মুক্তি পায় ‘শুদ্ধ দেশি রোমান্স’। ২০১৬ সালে ‘ধোনি: দ্য আনটোল্ড স্টোরি’ মুক্তির পর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি সুশান্তকে।
সুশান্ত সিং রাজপুত মৃত্যুর ঘটনায় এবার মুখ খুলেছেন সুশান্তের রাঁধুনি (Cook) অশোক। যাঁকে কিনা ছাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে জানা যায়। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষৎকারে বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ্যে এনেছেন তিনি। তাঁর কথায়, রিয়া আসার পরই তাঁদের ছাড়িয়ে দেওয়া হয়।
সুশান্তের কুক অশোকের কথায়, তিনি ২০১৯-এর সেপ্টেম্বর বাড়ি গিয়েছিলেন। অক্টোবরে ফিরে এসে জানতে পারেন সুশান্ত-রিয়া ইউরোপ ট্রিপে গেছেন। মাঝে রিয়ার ভাই সৌভিকও গিয়েছিলেন। ইউরোপ ট্রিপ থেকে ফেরার পর সুশান্তের সঙ্গে তিনি আর কথা বলে উঠতে পারেননি। সুশান্তের দিদিদের সঙ্গে ফোনে কথা হলে তাঁরা জানান, আগামী মাসে তাঁরা আসবেন। যদিও ডিসেম্বরে তাঁরা আসার পরও তাঁদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
সুশান্তের কুক অশোকের কথায়, অক্টোবরেই আমাদের ছাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। ফোনে যিনি আমাকে জানিয়েছিলেন তিনি এমনটাই বলেছিলেন। কুক অশোকের কথায়, প্রথমে বুঝতে পারি নি, আমাদের কী দোষ ছিল, তবে পরে হাউস ম্যানেজার জানান, স্যার নয়, রিয়াই তোমাদের ছাড়িয়ে দিয়েছে।
অশোক আরও জানান, শুধু তাঁকেই নয়, সুশান্তের এক বাউন্সার, অ্যাকাউটেন্ট সহ বেশ কয়েকজনকেই ছাড়িয়ে দিয়েছিলেন রিয়া।
অশোকের কথায়, প্রথমে আমার সন্দেহ হয়নি, পরে দেখলাম, এক এক করে সবাইকে বের করে দেওয়া হচ্ছে, তখন প্রশ্ন জেগেছিল কী এমন ব্যাপার যে সব পুরনো কর্মীদের সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
কুক অশোক আরও বলেন, ”স্যার আগে কোনওদিন পুরনো কর্মীদের ছাড়িয়ে দেননি। সকলের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ কথা বলতেন। যদি কেউ নিজের থেকে ছেড়ে গেছে অন্য কোথাও কাজ পেয়ে , সেটা আলাদা, তবে স্যারকে কখনও কাউকে ছাড়াতে দেখিনি। ”
সুশান্তের কুকের কথায়, আমি স্যারের সঙ্গে ২৪ ঘণ্টা থাকতাম, তিনি সুস্থই ছিলেন, তিনি কখনও সুশান্তকে অসুস্থ দেখেননি। উনি সবসময় ফিটনেস ট্রেনারের সঙ্গে থাকতেন। তিনি কখনও সুশান্তকে অসুস্থ হতে, ওষুধ খেতেও দেখেননি।
তবে সুশান্তের কুক জানান, সুশান্ত ইউরোপ ট্রিপ থেকে ফিরেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তখন বলা হয়েছিল ডেঙ্গু হয়েছে, মানসিক অবসাদের কথা কেউই জানাননি। কুক অশোকের কথায়, আমি বুঝতে পারছি না, উনি অবসাদগ্রস্ত কীভাবে হঠাৎ করে হবেন? একথা এখনই শুনছি।
সুশান্তের কুক অশোকের দাবি, স্যার, যদি অবসাদগ্রস্ত হয়ে গিয়েছিলেন, তাহলে সেকথা তো ওনার পরিবারেরও জানার কথা, আর তাছারা ওনার কাছে অনেক ছবিরই প্রস্তাব আসছিল, ওনাকে অনেক ছবি ফিরিয়ে দিতে দেখেছি।
সুশান্তের কুকের কথায়, স্যারের সববিষয় রিয়াই চালনা করতেন, আর উনি কোনও কথা প্রকাশ্যে আসতে দিতেন না। তাই যাঁরা অন্যান্য কর্মী ছিলেন তাঁরাও সবটা জানতে পারেন না।
Posted ৮:৪৮ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০১ আগস্ট ২০২০
coxbangla.com | Chanchal Chy