কক্সবাংলা ডটকম(৪ জানুয়ারী) :: ভয়ঙ্কর হচ্ছে পরিস্থিতি। চরমে উঠল আমেরিকা এবং ইরানের মধ্যে সংঘাত। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে, তাতে যে কোনও মুহূর্তে বিশ্বে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ বেঁধে যেতে পারে। এই আশঙ্কায় যখন বুক বাঁধছে গোটা বিশ্বের মানুষ, ঠিক সেই সময় ইরাকে আমেরিকার উপর একের পর এক প্রত্যাঘাত ইরান এয়ারফোর্সের।
জানা যাচ্ছে, মার্কিন সেনাঘাঁটি টার্গেট করে ফের হামলা করেছে ইরান। ইরাকের মসুলে কিন্দি সেনা ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে ইরানের ইয়ারফোর্স। এই ঘাঁটিতে বহু মার্কিন সেনা-জওয়ান ছিলেন। এমনকি রাখা রয়েছে বহু যুদ্ধাস্ত্র। আর সে কারণে এই ঘাঁটিকেই টার্গেট করেছে ইরানের এয়ারফোর্স। গত কয়েক ঘন্টায় এই নিয়ে মোট তিনবার অতর্কিতে মার্কিন বাহিনীর উপর হামলা চালাল ইরান।
বেশ কিছু সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে ইরাকে অন্যতম এই শক্তিশালী মার্কিন ঘাঁটি মসুলে। আর সেটি হামলার পর দাউ দাউ করে জ্বলছে। তবে এখনও পর্যন্ত হতাহতের কোনও খবর পাওয়া যায়নি। তবে আশঙ্কা করা হচ্ছে এই হামলায় বহু সেনা-জওয়ানের মৃত্যু ঘটতে পারে। ক্ষয়ক্ষতির খবরও এখনও তেমনটা জানা যাচ্ছে না। এর ঠিক কয়েক ঘন্টা আগেই পরপর মার্কিন বাহিনীর উপর দুটি হামলা চালায় এয়ারফোর্স।
গতকাল ইরাকের রাজধানী বাগদাদে ইরানি রেভল্যুশনারি গার্ডের কুদস ফোর্সের কমান্ডার মেজর জেনারেল কাসেম সোলাইমানির শেষকৃত্যানুষ্ঠানে অন্তত ১০ হাজার মানুষের সমাগম হয়েছে। একই সঙ্গে ইরাকি মিলিশিয়া কমান্ডার আবু মাহদি আল-মুহেন্দিসেরও শেষকৃত্যানুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। তারা উভয়ে শুক্রবার ভোরে বাগদাদে মার্কিন বিমান হামলায় নিহত হন। খবর বিবিসি ও রয়টার্স।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে সংঘটিত এ হত্যাকাণ্ড মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক অবস্থা আরো জটিল করে তুলবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এদিকে মধ্যপ্রাচ্যে ইরানি সামরিক তত্পরতার ‘আর্কিটেক্ট’খ্যাত সোলাইমানি হত্যাকাণ্ডের বদলা নেয়ার কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে তেহরান। এমন পরিস্থিতিতে অঞ্চলটিতে ইরানের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার সহযোগীদের সঙ্গে ‘ছায়াযুদ্ধ’ শুরু হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষ মার্কিন মদদপুষ্ট ইসরায়েল ও সৌদি আরবের সঙ্গে ইরান ও তার সহযোগীদের সংঘর্ষ বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইরানে শেষকৃত্যানুষ্ঠান শেষে সোলাইমানির মরদেহ গতকাল বিকালেই ইরানে পাঠানো হয়। বাগদাদে শুরু হওয়া শেষকৃত্যানুষ্ঠান শেষ হবে তার জন্মস্থান মাশহাদের কেরমান শহরে। তবে এর আগে তার শেষকৃত্যানুষ্ঠান পরিচালিত হবে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা খামেনির নেতৃত্বে।
শেষকৃত্যানুষ্ঠানে যোগ দিতে গতকাল ভোর থেকে বিভিন্ন জায়গা থেকে বহু মানুষ বাগদাদে জড়ো হতে থাকে। শোকযাত্রায় অনেককে ইরাকি পতাকা বহন করতে ও আমেরিকাবিরোধী স্লোগান দিতে দেখা গেছে। বাগদাদের প্রশস্ত সড়কগুলোয় অজস্র মানুষ শবযাত্রায় মুহ্যমান হয়ে পড়ে। অনেক শোকার্তকে সোলাইমানির ছবি ও অনেককে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির ছবি বহন করতে দেখা গেছে।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার সোলাইমানির মৃত্যু সংবাদ প্রচারের সঙ্গে সঙ্গে কিছু ইরাকিকে উল্লাস করতে দেখা গেছে। সম্প্রতি বাগদাদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সোলাইমানির ইন্ধনে সহিংস হয়ে ওঠে বলে অভিযোগ রয়েছে অনেক ইরাকি নাগরিকের।
সোলাইমানি নিজ দেশে এমনিতেই জনপ্রিয়। মৃত্যুর মধ্য দিয়ে তিনি বীরের সম্মান পেতে যাচ্ছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। শক্তিমান জেনারেলকে হারানোর প্রতিশোধ তেহরান নেবেই, এতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে কবে, কখন ও কীভাবে তা এখনো নিশ্চিত নয়।
এদিকে সোলাইমানিদের হত্যার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইরাকে আবার বিমান হামলা হয়। এতে ছয়জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে ইরাকি মিলিশিয়া বাহিনী। গতকাল ভোরে বাহিনীটির একটি বহরে এ হামলা চালানো হয়েছে। তবে অঞ্চলটিতে মার্কিন নেতৃত্বাধীন কোনো বাহিনী এ হামলা চালায়নি বলে জানিয়েছে মার্কিন সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র।
Posted ২:০৯ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ০৫ জানুয়ারি ২০২০
coxbangla.com | Chanchal Chy