কক্সবাংলা ডটকম(১ ডিসেম্বর) :: একই গ্রুপে ছিল বেলজিয়াম, ক্রোয়েশিয়ার মত বিশ্বফুটবলের হেভিওয়েট দেশ। সঙ্গে কমশক্তিধারী কানাডা। সেই গ্রুপ থেকে যে বিশ্বকাপের পরবর্তী রাউন্ডে যেতে পারবে মরক্কো তা স্বপ্নেও কল্পনা করেননি তাবড় তাবড় বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু শুধু পরের রাউন্ডে যাওয়াই নয়, গ্রুপ এফ থেকে ৩ ম্যাচে ২ জয় ও এক ড্রয়ের সৌজন্যে ৭ পয়েন্ট নিয়ে টেবিল টপার হয়ে পরের রাউন্ডে গেল আফ্রিকান দেশ মরক্কো।
গ্রুপের শেষ ম্যাটে কানাডার বিরদ্ধে ড্র করলেই শেষ ষোলোর টিকিট পাকা হয়ে যেত ওয়ালিদ রেগরাগুইয়ের দলের। কিন্তু কানাডার বিরুদ্ধে জয়ের লক্ষ্য নিয়েই নেমেছিল মরক্কো।
এদিন খেলা শুরুর ৪ মিনিটের মাথাতেই হাকিম জিয়েচের গোলে এগিয়ে যায় মরক্কো। দ্বিতীয় গোলের জন্য বেশি প্রতীক্ষা করতে হয়নি আফ্রিকার দেশটিকে। ম্যাচের ২৩ মিনিটে ইউসেফ এন নেসিরির গোল করে ম্যাচের ব্যবধান ২-০ করে।
৩৬ বছর পরে আবার বিশ্বকাপের শেষ ষোলোয় জায়গা করে নিল মরক্কো। এর আগে ১৯৮৬ সালে বিশ্বকাপের প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে গিয়েছিল মরক্কো। সেটাই ছিল প্রথম ও শেষ বার। কাতারে আবার এক বার বিশ্বকাপের শেষ ষোলোয় জায়গা করে নিল আফ্রিকার দেশ।
এরপর ম্যাচে একের পর এক আক্রমণ গড়ে তোলে কানাডা। কিন্তু কিছুতেই গোলের মুখ খেলতে সফল হচ্ছিল না কানাডার অ্যাটাকিং লাইন। কিন্তু ম্যাচের ৪০ মিনিটে আত্মঘাতী গোলে ব্যবধান কমে কানাডার। ম্যাচের প্রথমার্ধে ২-১ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় মরক্কো। এরপর দ্বিতীয়ার্ধে দুই দলই একাধিক আক্রমণ গড়ে তুললেও কেউ গোলের মুখে খুলতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত ২-১ গোলে ম্যাচ জেতে মরক্কো।
গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে যাওয়ায় গ্রুপ ‘ই-এর রানার্স দলের বিরুদ্ধে মুখোমুখি হবে রোমেন সাইসের মরক্কো।
গোটা ম্যাচে আধিপত্য নিয়ে খেলে এবং একের পর এক আক্রমণ করেও ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে গোলশূন্য ড্র করল বেলজিয়াম। রবার্তো মার্তিনেসের দল ছিটকে গেল বিশ্বকাপ থেকেই। এর সঙ্গেই শেষ হল বেলজিয়ামের সোনালি প্রজন্মের। কারণ এই দলের অনেক ফুটবলারকেই আর সামনের বিশ্বকাপে দেখা যাবে না। এই ম্যাচে বেলজিয়াম যা মিস্ করেছে, তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা অসম্ভব। রোমেলু লুকাকু একাই দ্বিতীয়ার্ধে হ্যাটট্রিক করে ফেলতে পারতেন। কিন্তু কোনও বারই বল ক্রোয়েশিয়ার জালে জড়ায়নি।
ইউরো কাপ থেকে বিশ্বকাপ। তারকাখোচিত দল নিয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে ফের একবার ব্যর্থ বেলজিয়াম। দেশের ফুটবল ইতিহাসে ‘গোল্ডেন জেনারেশন’ টিম বললেও সমর্থকদের ট্রফি জয়ের স্বাদ দিতে ব্যর্থ কেভিন ডি ব্রুইন, রোমেলু লুকাকু, ইডেন হ্যাজার্ড, কুর্তোয়ারা। কাতার বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে গোলশূন্য ড্র করে প্রতিযোগিতা থেকে বিদায় নিল রবের্তো মার্টিনেজের দল।
বেলজিয়ামের কাছে এই ম্যাচ ছিল ডু অর ডাই। মরক্কো জিতলে ও ক্রোয়েশিয়া হারলে ছিটকে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল লুকা মদ্রিচদের। তাই এদিন ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে দুই দল। কিন্তু একাধিক আক্রমণ করলেও কোনও দল গোলের মুখ খুলতে পারেনি। সমানে সমানে টক্কর হয় রবের্তো মার্টিনেজ ও জ্লাটকো ডালিচের দলের। একাধিক সহজ সুযোগ নষ্ট না করলে ফল যেতেই পারত বেলজিয়ামের দিকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত গোলশূন্যভাবে শেষ হয় খেলা।
প্রতিযোগিতায় সকলকে চমকে গ্রুপ এফ থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়ে রাউন্ড অফ ১৬-য় পৌছাল মরক্কো। আর ৩ ম্যাচে ৫ পয়েন্ট নিয়ে প্রতিযোগিতার পরের রাউন্ডে পৌছে গেল গতবারের রানার্সআপ দল ক্রোয়েশিয়া। শেষ ম্যাচ ড্রয়ের ফলে ৪ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ টেবিলের তৃতীয় স্থানে শেষ করল বেলজিয়াম। আর খাতা না খুলেই এই গ্রুপ থেকে বেলজিয়ামের সঙ্গে বিদায় নিল কানাডা।
ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে জিততেই হতো বেলজিয়ামকে। আর ক্রোয়াটদের নকআউটে উঠতে এক পয়েন্ট প্রয়োজন ছিল। অনেকটা রক্ষণাত্বক খেলে ক্রোয়েশিয়া তাদের লক্ষ্যপূরণ করেছে। তিন ম্যাচ থেকে ৫ পয়েন্ট নিয়ে তারা নাম লেখায় শেষ ষোলোয়। আর ৪ পয়েন্ট সংগ্রহ করা বেলজিয়ানরা বাড়ি ফিরবে হতাশাকে সঙ্গী করে। ৭ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন মরক্কো।
বেলজিয়াম গত বিশ্বকাপে তৃতীয় হয়। এছাড়া ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল খেলে রেডরা। যদিও কেভিন ডি ব্রুইন, এডেন হ্যাজার্ড ও রোমেলু লুকাকুদের সোনালী প্রজন্ম দারুণ সম্ভাবনাময় হয়েও দেশকে বড় কিছু উপহার দিতে ব্যর্থ হলেন।
স্বাধীন দেশ হিসেবে এটা ক্রোয়াটদের ষষ্ঠ বিশ্বকাপ। এর মধ্যে দুবারই তারা সেমিফাইনাল খেলার কৃতিত্ব অর্জন করে। গতবার ফ্রান্সের কাছে ফাইনালে হেরে রানার্সআপ হওয়া দলটি ১৯৯৮ সালে ডেভর সুকারদের হাত ধরে তৃতীয় হয়েছিল। এবার বিদায় নেয়ার শঙ্কা তৈরি হলেও টিকে থাকল লুকা মডরিচের দল।
Posted ১২:৩২ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২২
coxbangla.com | Chanchal Chy